বৃষ্টি নাকি সাক্ষী (পর্ব ২)

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
** লতা রিকশা থেকে নামা মাত্রই  সুজন পিছন থেকে লতার শরীরে চাক্কু  মারে। লতা পিছনে পেরে সুজন কে কান্না মাখা কন্ঠে বলতে লাগলো তুমি আমার সাথে এটা করতে পারলে?  কি দোষ ছিলো আমার?  আমাকে তুমি বলতে,আমি তোমার জীবন থেকে সরে যেতাম তুমি কেনো করলে এমন? 

**সুজন উচ্চ সুরে বলতে লাগলো আমি লিনাকে ভালোবাসি তাকে বিয়ে করতে চাই তাই তোমাকে মেরে পেলেছি। লতা কিছু বলতে যাবে তখনি আবার সুজন তার শরীরে চাক্কু মারলো। লতা নিছে পরে গেলো আর বলতে লাগলো তুমি আমার সাথে যা করেছো তার জন্য কখনো আমি তোমাকে ক্ষমা করবো না। আল্লাহ তোমার এই পাপের শাস্তি তোমাকেই দিবেই! 

**তখন সুজন হাসতে হাসতে বলতে লাগলো কখনোই শাস্তি পাবো না আমি কেউ যানবে না এই ঘটনা। শুধু আমি ছাড়া। কেউ নেই রাস্তাই কোনো মানুষ, প্রানী কেউ নেই। বৃষ্টি হচ্ছে অনেক জোরে আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে কেউ নেই রাস্তাই। লতা বলতে লাগলো এই বৃষ্টি এ সাক্ষী হবে একদিন, তা বলে চিরতরে নিদ্রাই ঢলে পড়ল লতা। সুজন লতার মৃত দেহ নিয়ে পানিতে পেলে দিলো।

** সুজন বাড়ি পিরে লতার মাকে কল দিয়ে বললো লতা নাকি একটা চিঠি লেখে চলে গেছে, আর সে চিঠিতে লেখছে লতা সুজনের সাথে থাকতে চাই না। তাই লতা চলে গেছে। লতার মাও তা বিশ্বাস করলো। এই ভাবে অনেক দিন কেটে গেলো।
**লিনা দেশে আসলো তাদের দুমদাম করে বিয়ে হলো। সুজন তার পুরোনো বিয়ের কথা লিনাকে কখনোই জানালো না। যখনি বৃষ্টি হতো সুজন বারান্দায় গিয়ে বৃষ্টি দেখতো। চুপচাপ শুধু তাকিয়ে থাকতো বৃষ্টির দিকে। আর ভাবতো এই বৃষ্টি নাকি সাক্ষী হবে এটা কোনো দিনও সম্ভব না, এই গুলা ভাবতো আর নিজে নিজে হাসতো।

** অনেক দিন এই ব্যপারটা লিনা লক্ষ্য করলো। তেমনি ভাবে একদিন বৃষ্টি হচ্ছে অনেক জোরে, আকাশে ঝিলিক মারছে, যেনো বিদ্যুৎ এর মতো। তখন সুজন বারান্দায় গিয়ে দাড়ালো আর ওই কথা গুলো ভাবতে লাগলো, আর নিজে নিজে হাসতে লাগলো। তখন লিনা খুব কৌতহল বশত বারান্দায় এসে দাড়ালো। আর বললো সুজন তুমি এই ভাবে হাসছো কেনো? সুজন ভয়ে কাপতে থাকলো!  আর বললো কই, আমি তো এমনেই দাড়িয়ে আছি।লিনা বললো যখনি বৃষ্টি হয় তুমি বারান্দায় এসে দাড়াও আর নিজে নিজে হাসতে থাকো। কেনো?  সুজন বললো এমনেই।

** লিনাও ভাবলো এই বৃষ্টি নিজে নিজে হাসা এই ঘটনার রহস্য আমি বের করেই চাড়বো!  আর মেয়েরা তো এমনেই নাচরবান্দা যেটা বলে সেটা করে। লিনাও তেমন। লিনা অনেক জোর করলো, কিন্তু সুজন বললো না, তখন লিনা বললো আমি কাউকে বলবো না, তুমি আমাকে বলো? আমি তোমার স্ত্রী তুমি আমাকে বলবে না?আমাকে তুমি বিশ্বাস করো না বুঝি? বলো না কি হয়েছে তুমি  বৃষ্টি হলে কেনো তাকিয়ে থাকো এবং নিজে নিজে হাসো কেনো কি হয়েছে আমাকে বলো? 

**তখন সুজন ভাবলোও সে তো আমার স্ত্রী তাকে বললে কি এমন হবে বলে দেই তাকে!  তখন সুজন সব কথা বললো লিনাকে কি ভাবে সে তার আগের স্ত্রীকে মারলো!  লিনা এই কথা শুনে ভয়ে কাপতে লাগলো। আর ভাবলো সে তার আগের স্ত্রীকে আমার জন্য মারতে পেরেছে সে আমাকেও অন্য মেয়ের জন্য মারতে পারবে।

**লিনা তখন কিছু না বলে বারান্দা থেকে রুমে গিয়ে পুলিশ কে কল করলো আর এই সব ঘটনা বললো পুলিশ কে। কিছুখনের মধ্যে পুলিশ সুজনের বাড়িতে এসে পড়লো। সুজন লিনার দিকে তাকালো!  লিনা বলতে শুরু করলো এই পুরুষ তার স্ত্রীকে খুন করেছে তাকে নিয়ে যান। সে হচ্ছে একটা খুনি। পুলিশ সুজনকে নিয়ে যাবে তখনি সুজন লিনাকে বললো, আমি তোমাকে বিশ্বাস করে কথাটা বললাম আর তুমি এখন আমাকে ধরিয়ে দিলে?  লিনা বললো তোমাকে তো লতাও বিশ্বাস করেছে তুমি কি করলে তার সাথে!  ঠিক করো নি তুমি, এটাএ তোমার শাস্তি! সুজন ভাবলো লতার কথা সে বলেছে একদিন এই বৃষ্টি  সাক্ষী হবে। কিন্তু বৃষ্টি সাক্ষী হয় নাই, বৃষ্টি উচিলা হয়েছে সাক্ষী বানানোর জন্য!  ***

************ সমাপ্ত *****
243 Views
9 Likes
1 Comments
5.0 Rating
Rate this: