স্বপ্নের জগতে প্রেম (পার্ট ২)

স্বপ্নের জগতে প্রেম (পার্ট ২)
লেখক পলাশ

সংযোগের সন্ধানে

রেহান প্রতিদিনের মতোই স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করে। আজ সে আগের চেয়ে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, অদিতির রহস্য উদঘাটনের জন্য। অদিতি তাকে সবসময় এক সুন্দর বাগানে অপেক্ষা করে থাকে। আজও তার ব্যতিক্রম নয়।

"অদিতি," রেহান ধীরে ধীরে অদিতির দিকে এগিয়ে যায়, "তুমি বলেছিলে আমাদের মধ্যে বিশেষ এক সংযোগ আছে। আমি সেই সংযোগটা জানতে চাই।"

অদিতি এবারও মৃদু হাসে, তবে তার চোখে গভীর এক দৃষ্টিতে রেহানের দিকে তাকায়। "রেহান, তুমি কি কখনো অনুভব করেছো যে, কিছু মানুষ আমাদের জীবনে বিশেষ কিছু নিয়ে আসে? তারা আমাদের চিন্তা এবং অনুভূতির অংশ হয়ে যায়, যদিও আমরা তাদের আগে কখনো দেখিনি।"

রেহান ভাবতে থাকে, "হ্যাঁ, কিন্তু আমাদের মধ্যে সেই বিশেষ সংযোগটা কীভাবে তৈরি হলো? কেন তুমি প্রতিরাতে আমার স্বপ্নে আসো?"

অদিতি একটু থেমে বলে, "আমরা হয়তো কখনো বাস্তবে একে অপরের সাথে দেখা করিনি, কিন্তু আমাদের আত্মাগুলি একে অপরকে চিনে। হয়তো কোনো এক পূর্বজন্মে আমরা একে অপরের খুব কাছের ছিলাম। সেই সংযোগটাই এখনো আমাদের মধ্যে রয়ে গেছে।"

রেহান আরও বিভ্রান্ত হয়ে যায়। "কিন্তু আমি তো তোমাকে বাস্তবে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তুমি কি বাস্তব জীবনে আছো?"

অদিতি আবারও মৃদু হাসে, "আমি আছি রেহান, কিন্তু হয়তো আমাদের পথ এখনো মেলেনি। তুমি চেষ্টা চালিয়ে যাও। একদিন নিশ্চয়ই আমাদের পথ মিলবে।"

এই কথাগুলো শুনে রেহানের মন আরো জটিল হয়ে যায়। সে জানে, তাকে এই রহস্যের সমাধান করতে হবে। সে ঠিক করে, প্রতিদিনের জীবনে আরও বেশি করে খোঁজ চালাবে, অদিতির অস্তিত্ব খুঁজে বের করার জন্য।

দিনের আলো ফুটে ওঠে, রেহান ঘুম থেকে জেগে ওঠে। তার মাথায় এখনও অদিতির কথা গুঞ্জন করছে। সে স্থির করে, আজ সে শহরের সেই অংশে যাবে যেখানে সে আগে কখনো যায়নি। হয়তো সেখানেই অদিতির সন্ধান পাবে।

শহরের একটি পুরনো বইয়ের দোকানে সে ঢুকে পড়ে। বইয়ের গন্ধ আর সেখানকার শান্ত পরিবেশ রেহানের মনকে কিছুটা শান্ত করে। বইয়ের তাক ঘেঁটে ঘেঁটে সে একটি পুরনো ডায়েরি পায়। ডায়েরিটি খুলে দেখে, সেখানে অদিতির নাম লেখা আছে। সে অবাক হয়ে যায়, ডায়েরির লেখাগুলো পড়তে শুরু করে।

ডায়েরির পাতায় লেখা রয়েছে অদিতির জীবনের গল্প। তার সুখ-দুঃখ, আশা-নিরাশা সবকিছু। রেহান অনুভব করে, এই ডায়েরিটি তার স্বপ্নের অদিতির। ডায়েরির শেষ পাতায় লেখা রয়েছে, "যদি কেউ এই ডায়েরি পড়ে, তাহলে জানবে আমি অপেক্ষায় আছি, এক বিশেষ সংযোগের অপেক্ষায়।"

রেহানের হৃদয় এবার আরও দৃঢ় হয়। সে জানে, তাকে এবার অদিতিকে খুঁজে বের করতেই হবে। এই সংযোগের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে। রেহান ডায়েরিটি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে, তার মনের মধ্যে আরও একটি প্রশ্ন জেগে ওঠে, "অদিতি কোথায়?"

রেহানের সামনে এখন এক নতুন পথ। সে এই পথ ধরে অদিতির সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে, তার স্বপ্নের জগতে এবং বাস্তবের মধ্যে সেই বিশেষ সংযোগের সন্ধানে।