মনে মনে ভেবে নিয়েছিলাম এর প্রতিশোধ আমি নিবোই।
তাই মাথায় একটি শয়তানি বুদ্ধি পাকালাম। দুপুরে খাবার সময় শশুর মশাই কে বলে উঠি,,,,,,
-বাবা,,, এখনকার মেয়ে তো ছেলেদের পছন্দ করে বা তাদের পছন্দ থাকে তো তুলির কি কোনো পছন্দ নেই? সারাদিন তো দেখি মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। একটু খোঁজখবর নিয়েন।
এই কথা শুনতে তুলি কাশি দিয়ে উঠে। আর আমার দিকে রাগের মাথায় চেয়ে থাকে। আমি শুধু মুচকি হাসি দিতে থাকি। শ্বশুর মশাইয়ের দিকে খেয়াল করে দেখি তিনি ও তুলির দিকে রাগের মাথায় তাকিয়ে রয়েছে। মনে মনে ভাবলাম আজকে বেচারী শেষ। এই ভেবে মনে মনে একটা শান্তি আসলো এবং ভাবলাম যাক প্রতিশোধ টানা হলো।
দুপুরে খাবার খেয়ে রুমের মধ্যে গিয়ে বসে এমন সময় আমার ফোনে একটা আননোন নাম্বার থেকে কল আসলো। প্রথম প্রথম কল রিসিভ করলাম না। তারপর অনেকবার আসার পর কল রিসিভ করলাম। কল রিসিভ করতেই দেখি একটি বের করত। মেয়েটি কল ধরতে বলে উঠলো,,,,
-কি অবস্থা জান? কেমন আছো তুমি?
আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম মিশকাত নাতো? মিশকাতের কন্ঠ তো এরকম না। তারপর আমি বললাম,,
-কে আপনি কাকে চান -?
-কেন? তোমাকে তো চাই জান।
-ও তাই?
এরপর কিছু বলব তার আগেই তিনি রুমে ঢুকে। আমি কিছু না বলেই ফোন কেটে দিলাম। তিন্নি বলে উঠে,,,,
-কার সাথে কথা বলছিলাম ফোনে -?
-এ ক্লায়েন্টের সাথে মাল অর্ডার করবে তো তাই।
-তো আমাকেই দেখে ফোন কেটে দিলেন কেন?
-কই তোমাকে দেখে ফোন কেটে দিলাম? কথা শেষ তাই ফোন কেটে দিয়েছি।
-ভালো। যাই করেন কিন্তু উল্টাপাল্টা কিছু করবেন না তাহলে খবর আছে।
এই বলেই সে রান্নার জন্য চলে গেল। মনে মনে বললাম যাক বাঁচা গেল। কিন্তু মেয়েটা কে? এমন সময় তুলি আমার রুমে ঢুকে। ঢুকতেই বলে উঠে,,,,
-দুলাভাইয়ের বাচ্চা আমারে তুই ফাসাইলি না? এবার দেখ তোর কি অবস্থা করি?
-আমি কি করলাম শালী? আর দুলাভাই এর সাথে কি এভাবে কেউ কথা বলে?
-রাখত দুলাভাই? এতক্ষণ তো কার সাথে প্রেম করতাছিলি?
-কারো সাথে না তো?
এরপরেই তুলি রেকর্ডিং চালিয়ে দিলো। আমি কিছু বলবো তার আগেই তুলি বলে উঠে,,,,
-দাঁড়া এখন তোর বারোটা বাজাইছি।
এই বলে সে তিন্নির কাছে দৌড় দিল। আমিও পিছু নিলাম। পিছু গিয়ে দেখি সে তিন্নিকে সব বলছে এবং শোনাচ্ছে।আমি ভয়ে রুমে ঢুকে গেলাম। এমন সময় তিন্নিও রাগের মাথায় রুমের মধ্যে ঢুকল এবং দরজা লাগিয়ে দিল । আমি ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছিলাম না। আপনি কিছুক্ষণ চোখ রাঙ্গিয়ে দেখলাম কেঁদে দিল। তখন আমার খুব খারাপ লাগছিল এবং তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য গেলাম। কিন্তু সে তার গায়ের থেকে আমার হাত সরিয়ে দিল।এবং সাথে সাথে বলে উঠে,,,,
-ঐদিন শয়তানি করে বাবাকে বলেছিলাম আপনার চরিত্রের দোষ আছে কিন্তু এখন আসলে দেখি আপনার চরিত্রের দোষ আছে ।
-দেখো এরকম কিছুই না। আমি জানিওনা সে কে?
-ও তাই নাকি? তাহলে এত সুন্দর করে কথা বলছিলেন কেন?এটা বলেন যে আপনি ওর সাথে প্রেম করেন এবং আমাকে হয়তো ভাল লাগে না।
-দেখো তুমি ভুল বুঝতাছ।
-আমি ঠিকই বুজছি। আপনার দেহ চান কিন্তু ভালোবাসা চান না। আপনাকে বুঝাতে পারবোনা আমার কতটা খারাপ এবং কতটা ঘৃণা লাগতাছে। দেখেন যতদিন আছি ততদিন আর কোন সময় আমার সাথে কথা বলবেন না আর যদি আমাকে ভালো না লাগে তাহলে বলে দেবেন আমি আপনাকে তালাক দিয়ে দিব।
এই কথা শোনার সাথে সাথে আমি থমকে গেলাম। এই কথা বলেই তিন্নি চলে গেল রুম থেকে। দরজার ওপাশ থেকে তুলি সব শুনছিল। আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না যে কি করব। বিকালের নাস্তার সময় তিন্নি তুলিকে দিয়ে আমাকে ডাক দেওয়ালো।আমি নাস্তা খেতে গেলাম তখন দেখলাম আমার যাওয়া দেখে তিন্নি সেখান থেকে চলে গেল। তুলি সব দেখছিল এবং কিন্তু কিছু বলছিল না। আমার খুব খারাপ লাগা শুরু হলো। তুলির উপর অনেক রাগ উঠছিলো কিন্তু কিছু বলার মত রাস্তা নেই। রাতে ঘুমানোর সময় দেখলাম সে আমার সাথে নাচবে নিচে বিছানা করছিল।আমি পিছন দিক দিয়ে যেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলাম এবং সরি বলা শুরু করলাম। কিন্তু সে কিছুতেই মানতে রাজি না। তখন আমি কান ধরে উঠবস করা শুরু করলাম। সাথে সরি বলছিলাম। আমার এসব দেখে সে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলোনা এবং হেসে দিল। এবং তখন সে বলে উঠে,,,
-আমার রাগ তো ওই সময় ভেঙ্গে গিয়েছিল কারণ আমার বিশ্বাস আছিল যে আপনি এরকম কিছুই করবেন না আর তুলি আমাকে পরবর্তীতে সব খুলে বলেছে। এতক্ষণ তো আমি শুধু নাটক করছিলাম আপনাকে একটা শিক্ষা দেওয়ার জন্য।
-তুলিকে পেলে খবরই আছে আর আমি কি করছি যে আমাকে শিক্ষা দিবেন?
-কেন তুলিকে কিছু করবেন না আপনি তুলির সাথে ফাইজলামি করছেন এজন্য তুলি আপনার সাথে ফাইজলামি করছে।
-এটা কি কোন ফাজলামির মধ্যে পড়ে যদি এটাকে সিরিয়াসলি কিছু হয়ে যেত?
-আরে বাবা,,,,,,, হয়নি ত? আর এরকম হবে না। কারন আমার আপনার উপর চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস আছে।
এই বলে সে এই প্রথমবার আমাকে জড়িয়ে ধরল। এবং বলে ওঠে,,,,, অনেক ভালোবাসি আপনাকে বুঝছেন। আমার ভালোবাসাটা একটু বুঝতে শিখুন। আর আমার বিশ্বাস আছে যে আপনি আগেও কোন সময় কোন এফেয়ার-এ যাননি এবং এখনও যাবেন।
তখনই আমি হঠাৎ থমকে যাই। এত বিশ্বাস মানুষ কিভাবে করতে পারে। আসলে সে একজন ভালো মেয়ে। তখনই হঠাৎ ভয় লাগা শুরু হলো।
মনে মনে ভাবলাম,,,, সে যদি হঠাৎ মিশকাতের ব্যাপারে কোন সময় জানে? তখন যে কি হবে?অন্য কারো থেকে কিছু জানার আগে আমি বলে দেই।
এমন সময় সে বলতে লাগল,,,, কি ব্যাপার কথা বল না কেন? নাকি আসলেই তোমার আগে কারো সাথে এফেয়ার আছিল?
আমি হ্যাঁ বলবো তার আগে মুখ দিয়ে না কথাটি বের হয়ে গেল। তখন সে আমাকে একটি চুমু খেলো এবং বলল আমার লক্ষ্মী জামাইটা। আমি তখন ভাবলাম এখন যেমন আছে তেমনি থাকুক পরে যদি জানে তখন যেটা সামাল দেওয়া যাবে। তাছাড়া ওর জানার কোন উপায় নেই কারণ মিশকাত গত এক সপ্তাহে 10 দিন ধরে লাইনে নেই আর তার কোন খোঁজ খবর নেই।এটা ভাবতেই আমার কেমন যেন ঘাবড়ে যাওয়া শুরু হয়ে গেল কারণ যে মেয়ে একদিন যোগাযোগ না রেখে থাকতে পারে না সে গত এক সপ্তাহে 10 দিন ধরে কোন যোগাযোগ নেই। ওর কি কিছু হয়েছে নাকি? খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।
চলবে,,,,,,
রহস্যময় ভালোবাসা (Mysterious Love ) Episode 3
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
564
Views
20
Likes
4
Comments
3.6
Rating