রোমান্টিক হুজুর পর্ব 3

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
রোমান্টিক হুজুর (পর্ব 3)

তুমি হয়তো জানো না, প্রতিটা পুরুষের স্বপ্ন থাকে তার পবিত্র একটা স্ত্রী হোক।যে তাকে সমস্ত হৃদয়ে উজাড় করে ভালো বাসবে। সারা দিন কাজ শেষে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফেরে,সে চায় তার স্ত্রীর হাঁসি মাখা মুখটা দেখে কষ্ট,ক্লান্ত দুর করতে। সবাই চায় একটা ভালোবাসার মানুষ থাকুক।পুরুষ কেমন হয় তা আমি জানি না। কিন্তু আমি জানি,আমি ভালোবাসার বড্ডো কাঙ্গাল। তোমার অনেক বন্ধু আছে বান্ধবী আছে। জীবনে অনেক আনন্দ ফুর্তি করেছো। আমার জীবনে প্রথম নারী তুমি। আমি একটু ভালো ব্যবহার আর একটু ভালোবাসার কাঙাল।

রিয়ার এই প্রথম মেহেদির জন্য মায়া হলো।নিজেই ভাবছে আমার কি হলো?এই লোকটির জন্য মায়া হয় কেন? তাকে তো আমি দেখতেই পারি না।

রিয়া ভাবছে আমি হয়তো ভুল করেছি? একটা ভালো মানুষ কে ঠকিয়ে ছি।সবার মতো তারো অধিকার আছে বাসর করার।সবার মতো তারো অধিকার আছে স্ত্রীর ভালোবাসা পাওয়া। কিন্তু আমি তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি । আমার জন্য তার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে কি আমাকে ক্ষমা করবে? আমি যদি চাই নিজেকে শোধরাতে সে কি আমাকে গ্রহণ করবে? আমি যে অন্যায় করেছি হয়তো তার কোন ক্ষমা হয় না।

রিয়া তারাতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো। অনেক রাত হয়েছে।
রিয়া:- কেন তারাতাড়ি ঘুমাবো?
আমি:- তারাতাড়ি না ঘুমালে চেহারায় ব্রোণ উঠে। আমি চাইনা চাঁদ তার সৌন্দর্য্য হারিয়ে ফেলুক।
রিয়া:- আপনি কি জানেন চাঁদের গায়ে কলঙ্ক থাকে।
আমি:-না হয় থাক না, কিছু কলঙ্ক।বাকি জীবনটা না হয় কলঙ্ক নিয়ে কাটিয়ে দিব।
রিয়া:-এতো সহজ না।
আমি:- ভালোবাসলে সব কিছু সম্ভব। না হলে হাত কাটা যায় না
রিয়া:- খোঁচা দিয়ে কথা হচ্ছে বুঝি।
আমি:-না সত্যি বলছি
রিয়া:-আসলে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হলো, ভুল মানুষকে বিশ্বাস করা।
আমি:-আমার জীবনের বড় ভুল?
রিয়া:- আমাকে বিয়ে করা?
আমি:- না, কিছু না।

ভোরে ঘুম থেকে উঠে খাবার শেষে রিয়া কে বললাম -তৈরি হ‌ও
রিয়া:-মানে?
আমি:-বেড়াতে যাবো
মা:-কোথায় যাবি? আগে বলবি না?
আমি:-বলার কিছু নাই। ছোট খালার বাড়িতে যাবো।মা দুই দিন পর আসবো।
মা:- ঠিক আছে, ফোন করিস কিন্তু?
রিয়া:-এখন না,কালকে যাই?
আমি:-কোন কথা হবে না। এখন রেডি হতে হবে।
অনু:-ভাবী তুমি না বলো না। ভাইয়া এই প্রথম কোথায় যেতে চাইছে।
রিয়া:-ঠিক আছে।

রিয়া আর মেহেদী ছোট খালার বাড়িতে আসলো।
খালা-কেমন আছো তোমরা?
আমি:-খুব ভালো আছি,খালামণি তুমি কেমন আছো?
হিমু কোথায়?
খালা:- হিমু নদীতে গেছে। রিয়া কে বললো খুব মিষ্টি মেয়ে!
বিকেলে রিয়া কে বললাম-রিয়া কখনো নদী দেখেছো?
রিয়া:- হিন্দি মুভিতে দেখেছি।
আমি:- চলো নদী দেখে আসি
রিয়া অনেক খুশি হয়ে সত্যি বলে একটা হাসি দিল।ওর হাসিটা দেখলে মনে কলি থেকে ফুল ফুটছে। হাসলে চেহারা এতো উজ্জ্বল হয়, মনে হয় কপালে চাঁদ চমকাচ্ছে।
রিয়া?
রিয়া:- কি
আমি:- এতো সুন্দর হাসি কে শিখিয়েছে তোমায়?
রিয়া:-কেন?
আমি:- সত্যি বলছি তোমার হাসি যে একবার দেখবে, তার মৃত্যুর আধাঘণ্টা পরে মনে থাকবে।

আমি আর রিয়া নদীর তীরে বসে আছি।
কি অপূর্ব নদীর দৃশ্য, রিয়া পাগল হয়ে তাকিয়ে আছে। আমি ও রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
রিয়া:- দূরে নৌকা দেখিয়ে বললো নৌকায় চড়তে ইচ্ছে করছে।
আমি:- হিমু আসলে নৌকায় চড়বো আমি নৌকা বাইতে জানি না।?
রিয়া:- সে আসবে?
আমি:-হুম বলছি তো সন্ধ্যার একটু আগে

আসতে। চলনা একটুখানি পাশাপাশি হাঁটতে ইচ্ছে করছে।

রিয়া- ঠিক আছে চলুন।

দুজনে পাশাপাশি হাঁটছি প্রচন্ড বাতাসে রিয়ার ওড়না দুলছে।

আমি:-না হচ্ছে না
রিয়া:- আবার কি হলো?
আমি:- তোমার হাতটা ধরতে খুব ইচ্ছে করছে। দাও না একটু।
রিয়া চুপ করে তাকিয়ে বললো-ঠিক আছে ধরো।

রিয়া চুলগুলো ছেড়ে দাও না,বাঁধন থেকে মুক্ত হতে চাইছে। রিয়া খোলা চুলে হাতে হাত রেখে হাঁটছি। বাতাসে চুলগুলো এলোমেলো হয়ে দুলছে।
একবার তাকালে আর নজর ফেরাতে পারছি না।
ইচ্ছে করছে এভাবে সারা জীবন তাকিয়ে থাকতে।

হিমু আসলো হাতে একটা ব্যাগ,তিন জনে নৌকায় চড়লাম। নদীতে খুব বাতাস ঢেউ গুলো নৌকায় আছড়ে পড়ছে।ছল-ছলাত শব্দে চার দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা হয়ে এসেছে পশ্চিম আকাশে সুর্য লাল হয়ে আছে।
মনে হয় নদীর সমস্ত পানি রক্তে রঞ্জিত হয়ে গেছে। দূরে কিছু নৌকা হাঁড়িকেন জ্বালিয়ে চলে যায়। সুর্যের আলোয় রিয়ার চেহারা স্বর্ণালী বর্ণ ধারণ করেছে।
আমি শুধু তাকিয়ে দেখছি রিয়ার সৌন্দর্য্য। নদীর উত্তাল তরঙ্গের মতো রিয়ার শরীরে যৌবনের উথাল পাতাল ঢেউ। বিরহের আগুনে পুড়ে পুড়ে হৃদয় শেষ হয়ে যাচ্ছি। আমি শুধু চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছি।

রিয়া:- এভাবে তাকিয়ে থাকবেন না তো হিমু ভাই কি ভাববে।
আমি:-যা ইচ্ছা ভাবুক। আমি আমার ব‌উ কে দেখবো, তাতে কার কি?
রিয়া:- লজ্জা শরম নাই বুঝি?
আমি:-আচ্ছা পোড়া গন্ধ পাও?
রিয়া:-কৈ না তো। এখানে পোড়া গন্ধ আসবে কি করে?
আমি:- তোমার রুপের আগুনে আমার হৃদয়ে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।তার গন্ধ এখনো পাই।
রিয়া:- মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বললো, মনে হৃদয়টা সিদ্ধ হয়ে গেছে তাই মাংসের ঘ্রাণ আসে।

রাতে চাঁদের আলো নদী আলোকিত হয়ে গেছে। আকাশে একটা চাঁদ নদীর বুকে একটা চাঁদ দুলছে। হালকা শীতল বাতাসে মনটা খুব বেশি রোমান্টিক হয়ে আছে।কুল-কুল শব্দে নদী দুলছে। নদীর সৌন্দর্য্য দেখে রিয়া আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল। আমি দুই পা পানিতে দিয়ে বসে আছি।রিয়া আমার হাতটা ধরে পাশে বসে আছে।ও বসে বসে যখন ঢেউ আসে পা দিয়ে ঢেউ ভেঙ্গে দেয়।

রিয়া বলল-আমার জীবনের সবচেয়ে সেরা মুহূর্তে এটা। আজকে আমি আনন্দে পাগল হয়ে যাচ্ছি।
এমন একটা রাত কখনো আমার জীবনে আসবে ভাবিনি।
আমি:- আমার একটা ইচ্ছা পূরণ করবে?
রিয়া:-শুধু একটা আজকে আপনার হাজারটা ইচ্ছা পূরণ করতে রাজি।
আমি:-তোমার কোলে শুয়ে শুয়ে চাঁদ দেখতে চাই।
রিয়া:- কোলে শুয়ে? ঠিক আছে কিন্তু?
আমি:-হিমু থাকলে সমস্যা নাই। হিমু যদি তোমার ভাবীর কোলে শুই কোন সমস্যা আছে?
হিমু:- ভাই আজকে রাতটা তোর জন্য? আমার সমস্যা নেই।

আমি:-ঠিক আছে

রিয়া নৌকায় মাঝে বসে আছে আমি ওর কোলে মাথা রেখে চাঁদ দেখি। রিয়া মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলো।

আমি বললাম - রিয়া ইচ্ছে করছে সারা জীবন এখানে এভাবে কাটিয়ে দিতে
রিয়া:- তাহলে খারাপ হয় না।

শোয়া থেকে বসে একটা চিৎকার দিয়ে বললাম রিয়া!
সাথে সাথে নদীর চার পাশে ধ্বনি হলো রিয়া,রিয়া, রিয়া।
মনে নদী আমাদের কথা গুলো কপি করে চার দিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

রিয়া:-কি হলো চিৎকার করেন কেন?
আমি:-শব্দটা অনেক সুন্দর লাগে তাই না?
রিয়া:- হুম লাগে।

মনে হয় কি জানো নদীর চার পাশে আমার হৃদয়ের কথা গুলো বাজতে আছে।

জোর একটা চিৎকার দিয়ে বলি- রিয়া! আমি তোমাকে ভালোবাসি! ভালোবাসি! ভালোবাসি

ভাবছি মনের কথা বলে দিলাম,দেখি রিয়া কি বলে?
মনে হচ্ছে এই গভীর রাতে সমস্ত আকাশ,বাতাস, নদী চিৎকার দিয়ে বলছে, রিয়া! আমি তোমাকে ভালোবাসি! চার দিকে শুধু তার প্রতিধ্বনি ভেসে আসছে।

I love you রিয়া!

রিয়া এভাবে কখনো ভাবেনি যে, এখানে মেহেদী প্রপোজ করবে। কিন্তু সে খুব আনন্দিত হলো।

রিয়াও চিৎকার দিয়ে বললো-

হে রোমান্টিক হুজুর I love too

আমি কখনো ভাবিনি রিয়া আমাকে গ্রহণ করবে। খুশিতে পাগল হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।

শুধু চিৎকার দিয়ে বললাম - হে চাঁদ নদীর বুকে একটা পরী এসেছে আমি তাকে ভালবাসি! তুমি জেনে রেখো।

দুইটা দিন কেটে গেল মনে হলো একটা মুহূর্ত সময় এখানে আসছি। খুব ভোরে বাড়িতে আসেই ক্লাস ধরলাম।অনুর জন্য ভালো একটা পাত্রের খবর নিয়ে আসলো ঘটক। তারা শুক্রবার অনু কে দেখতে আসবে। সবাই খুব খুশি রিয়া অনু কে বলল-
কি তোমাকে খুব খুশি মনে হচ্ছে?
অনু:- ভাবী তুমিও? আমার লজ্জা লাগে না বুঝি?
রিয়া:-থাক আমার লজ্জাবতী,আর লজ্জা করতে হবে না।
অনু:-ভাবী তোমাকে কিন্তু একটু অন্যরকম লাগছে কারন কি?
রিয়া:-কারণ অনেক আছে কিন্তু বলা যাবে না
অনু:-বলনা প্লিজ ভাবী।
রিয়া:-তোমার ভাই আমাকে প্রপোজ করেছে
অনু:-ইয়া হু! বলে চেঁচিয়ে বললো, তুমি কি বলছো?
রিয়া মুখ চেপে ধরে বললো-আস্তে বলো সবাই শুনবে তো। আমি হ্যাঁ বলে দিছি।
অনু:-শুনুক তাতে কি। তুমি জানো না ভাইয়া তোমাকে প্রচন্ড ভালোবাসে
রিয়া:-তুমি দেখে নিও রাজাও তোমাকে রানী করে রাখবে।
অনু:-দূর ভাবী! আমি যাই, বলে দৌড়ে চলে গেল।

ছেলে আর ছেলের বাবা এবং চাচী দেখে অনু কে পছন্দ করেছে।তার আগামী মাসে শুক্রবার বিয়ে ঠিক করেছে। রাতে রিয়া কে বললাম - চলো আমরা বাসায় যাই।
রিয়া:- আমি চাই তোমার মতো সবার সাথে থাকতে।
আমি:- এটা ভালো কিন্তু সমস্যা হচ্ছে?
রিয়া:-কি সমস্যা? বলো কি হয়েছে?
আমি:-না, মানে পাওনা দায়ের পাওনা রাখতে নেই।
রিয়া:-আমি কিছু বুঝতে পারছি না?
আমি:-বলছিলাম এতো দিনের বকেয়া ভালোবাসা
পরিশোধ করতে হবে তো। এতো দিন যে কষ্ট দিছো তা সুদে আসলে উঠাতে হবে তো।
রিয়া:-ইয়া আল্লাহ! আপনি কেমন মানুষ?
আমি:-কেমন মানুষ বলো?
রিয়া:-কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছি না। শুধু বুঝলাম হুজুর মানুষ ভালো স্বামী হয়।

রিয়া কে জড়িয়ে ধরে কপালে একটা চুমু দিয়ে বললাম -তা হলে কালকে চলো এই মাস পর বাসা ছেড়ে দিব।
রিয়া মেহেদীর চুমু পেয়ে লাফিয়ে উঠলো, বুকটা কেঁপে উঠলো। রকি যদি কিছু করে ফেলে যদি আমার শেষ আশ্রয় টুকু কেড়ে নেয়। যদি ভুলগুলো আমার জীবনের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়?

বড় হুজুরে মারা গেছে তাই ক্লাস বন্ধ, আজকে রিয়া কে নিজ হাতে রান্না করে খাইয়ে দিব। তাই বাজার করে রুমে আসলাম।

রিয়া:-বাজার তো আছে?
আমি:-থাক সমস্যা নাই। আজকে আমি রান্না করবো।
রিয়া:-কেন? আমার তো হাত কাটা নেই?
আমি:-তোমার জন্য রান্না করবো। তুমি চাইলে সাহায্য করতে পারো।

রানা বান্না শেষ দুজনে খেতে বসলাম, রান্না কেমন হয়েছে বললে না তো

রিয়া:-আমার থেকে ভালো রান্না করতে পারেন আপনি। বলতে হবে গুন আছে
আমি:- শুধু গুন আছে আর কিছু নাই?
রিয়া:- আগে দেখি তার পর বলবো।

আসো আগে খেয়ে নাও, তার পর কথা হবে. বলে খাবার তুলে খাইয়ে দিলাম।

রিয়া একটা কথা বলবো.. ?
রিয়া:-বলুন?
আমি:-তোমাকে ছেড়ে আমি একটা মুহূর্ত থাকতে পারি না।
রিয়া:-যদি কখনো ছেড়ে চলে যাই তখন কি করবেন?
আমি:- জানি না তখন কি করে স‌ইবো? কিন্তু নারী জাতির উপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাবে।

রিয়া দুই ফোঁটা চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বললো..
আমি আপনাকে খুব কষ্ট দিয়েছি তাই না?
আমি:- দুর পাগলী! খেয়ে নাও তো?

রিয়া আমার না ছোট বেলায় মা মারা যায়। আমি ইস্কুলে পড়তে চাই ,একটা ছেলে সাথে মারামারি করি পড়ে গিয়ে ছেলেটার হাত ভেঙ্গে যায়।রাগ বাবা অনেক দূরে একটা মাদ্রাসায় ভর্তি করে চলে আসেন। কখনো খোঁজ নিতো না।সারা দিন গ্রামে চাল তুলতাম.রাতে পড়াশোনা করতাম। হুজুর গুলো প্রচন্ড ভাবে মারতো, সেই মাদ্রাসায় শুধু মিষ্টি কুমড়া,লাউ আর মুলা খেয়ে বছরের পর বছর কেটে গেছে। বাজারের কম দামের চাউল ভোরে পানি ভাতে সাদা পোকা ভাসতো। এভাবে মানুষ হয়েছি, আজকে আল্লাহ বড় আলেম বানিয়ে ছে।

রিয়া কি বলবে কিছু বুঝতে পারছে না। শুধু বললো অনু সে সতবোন?
আমি:- হুম, তবে মা আমাকে খুব ভালবাসে। কিন্তু রিয়া আমার কলিজার টুকরা।

রাতে অনেক গুলো মোমবাতি জ্বালিয়ে রিয়া কে বললাম বাতি অফ করে এখানে এসো -

রিয়া:- কেন? মোম দিয়ে কি করবেন?
আমি:-তোমাকে মোমবাতি জ্বালিয়ে সারা রাত দেখবো।
রিয়া:-সারা দিন দেখে মন ভরে না বুঝি?
আমি:-যতক্ষন দেখি নজর ফেরাতে পারি না। পাগল হয়ে তাকিয়ে থাকি। কিন্তু যতো দেখি ততই দেখার ইচ্ছা আরো বেড়ে যায়।
রিয়া:‍-হুজুর মানুষ এতো ব‌উ পাগল হলে লোকে কি বলবে?
আমি:- যে যা বলুক,ব‌উ কে দেখবো না তো কাকে দেখবো?
রিয়া:-হুম তা ঠিক বলেছেন।

মোমের আলোয় রিয়া কে স্বর্ণালী দেখার।
মনে হয় আগুন সুন্দরী! একবার তাকালে আর কোন হুঁশ থাকে না। আমি কোথায় আছি নিজেও জানি না। শুধু মনে হয় সুখের আগুনে নিজেকে পোড়াচ্ছি।এটা এমন একটা সুখ যা বলে বোঝানো যাবে না। নিজেকে পোড়াতে এতো শান্তি লাগে কখনো জানা ছিল না। আমার জানা ছিল না, নরীর রুপের আগুন কতটা ভয়ংকর সুন্দর হয়? আমার জানা ছিল না ,ওই রুপে কতটা নেশা ধরে?
নজর কিভাবে ফেরাতে হয় সেই টুকু জ্ঞান নেই।
আমি কোথায়?কি অবস্থায় আছি জানি না?
গভীর অনুসন্ধান করে শুধু বুঝতে পারলাম। আমি বেঁচে আছি কোন অজানা সুখের গন্তব্য পথে।
তার সে কোথায়? সেখানে কি আরো বেশি সুখ?
অনুভব হলো শুধু আমার বুকের ভিতরে একটা শব্দ।টিস টিস করে বেজে চলছে। মনে হয় আমি কোন শূন্যে ভেসে আছি। আমার সমস্ত অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে কোন অজানা সুখের সাথে।সেখানে আমাকে ঘিরে আছে কোন সুখের চাদর

রিয়া হঠাৎ করেই উঠে চলে গেল আমি তখন একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে বসে আছি। অনেক পড়

আমাকে ডেকে বললো - কোথায় হারিয়ে গেছেন?

আমি ডাক শুনে হুঁশ ফিরে পেলাম। বললাম- তোমার মাঝে হারিয়ে গেছি।
আর তুমি চলে গেলে কেন?
রিয়া:-প্রায় এক ঘন্টা ধরে বসে আছি। কিছু না বলে শুধু তাকিয়ে আছেন । আমি বোর হয়ে গেছি তাই?
আমি:-এক ঘন্টা মাত্র আশা ছিল সারা রাত তোমাকে শুধু দেখবো।
রিয়া:-দুর সরেণ তো আমার ঘুম পাচ্ছে। এতো প্রেম আমার লাগবে না।
আমি:-দূর মেয়ে জাত "না বোঝে মন! না বোঝে প্রেম "

আজকে ৩০ তারিখ কালকে বাসা ছেড়ে দিবে।
তাই মেহেদী রিয়া কে বললো, সব কিছু গুছিয়ে রেখো কিন্তু। আমি ক্লাসে গেলাম তুমি নিজের খেয়াল রেখো। রিয়া কাজ করছে হঠাৎ করে রকি ফোন করলো।রকির নাম্বার দেখে রিয়া খুব খুশি ভয় পেয়ে গেল। ফোনটা ধরতে গিয়ে হাত কাঁপছে।

কাঁপা গলায় হ্যালো কে?
রকি:-বেবী আমি?
রিয়া:- তুই কেন ফোন করছো? বিশ্বাস ঘাতক! কুকুর?
রকি:-এখন এতো রাগ ভালো না বেবী! তাহলে পড়ে কি করবা?
রিয়া কঠিন গলায় বললো -কেন ফোন করছো?
রকি:-তোমাকে চাই?
রিয়া:-জানোয়ার তোকে ভালোবেসে আমি ভুল করেছি। তাই প্রতিটি মুহূর্তে নিজের কাছে নিজেই ছোট হয়ে গেছি। তুই কেন ফোন করছো?
রকি:-বেবী এই বার লাইনে আইছো। তোর কাছে দুটি অপশন আছে -

এক) সারা জীবন আমার ডাকে সাড়া দিতে হবে। না হলে ভাইরাল করার যথেষ্ট প্রমাণ আছে কিন্তু?
দুই) না হলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।

রিয়া:-বিশ্বাসঘাতক! জানোয়ার! আমি তোকে খুন করবো। তোকে আমি ভালোবেসে ছিলাম ভাবতেই ঘৃণা হয় আমার।
রকি:- বিকেলে তোমার জন্য অপেক্ষা করবো কিন্তু। আর তোমার মুন্সী স্বামী কে খুঁজে পেতে সময় লাগবে না। ভেবে দেখো সংসার করবে নাকি?

রিয়া ফোনটা কেটে অস্তে অস্তে বসে পড়লো। মনে হচ্ছে দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে।কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।
রকি যদি সবকিছু বলে দেয় তখন কি হবে?
আমি কার কাছে যাবো? এই সমাজে কোথায় আমার স্থান হবে? সব চেয়ে বড় কথা হলো মেহেদী প্রচন্ড কষ্ট পাবে।তার সামনে দাঁড়ানো উপায় আমার থাকবে না। এখন কি করাবো আমি?

এখন রিয়া কি করা উচিৎ এই প্রশ্নের উত্তর আপনাদের কাছে জানতে চাই?
আশা করি কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন?

আর কেমন লাগলো কমেন্ট করে বলবেন কিন্তু
সেই আশায় রইলাম?

দেখা হবে আগামী পর্বে ইনশাআল্লাহ।

সাথে থাকুন সাপোর্ট করুন।
💛💛💛ধন্যবাদ 💛💛💛
750 Views
16 Likes
3 Comments
4.5 Rating
Rate this: