জ্বিনের আছর ( Season 2) Episode 3

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
এরকম হাজার প্রশ্ন মনের মধ্যে জাগতে লাগলো। কিন্তু কিছু করার নেই কারণ এসবের উত্তর আমার কাছে নেই। তাই এসব নিয়ে ভাবা
বন্ধ করতে লাগলাম। যাই হক সবাই রাতের খাবার খেয়ে নিলাম। যখন ঘুমাতে গেলাম তখন আবার সারফারাজের স্মৃতিগুলো মনে পরতে থাকে। এই সময় সে আমাকে৷ পায়েস খাওয়াইয়ে দিয়েছিল। কিন্তু কিছু ভুলের কারনেই আজকে তাকে হারানো। আবার যদি তাকে খুজে পেতাম তাহলে আগে থাপ্পড় দিতাম। বললেই কি চলে যেতে হয় নাকি।

কিন্তু আজকে যে ছেলেটা আমাকে বাচালো সে কে? তার ব্যাপারে তো কিছুই জানলাম না। অনেকটা সারফারাজের মতো। ও যে বললো ওর পরিচয় দেয়াতে আমার ক্ষতি হতে পারে কি ক্ষতি হতে পারে? নানান প্রশ্ন নিজেই নিজেকে করতে লাগলাম। এক পর্যায় কোনোটার উত্তর না পেয়ে বিরক্ত হয়ে গেলাম এবং নিজেই নিজেকে বলতে লাগলাম "ধুর,,,এসব কি চিন্তা করসি বরংচ ঘুমাই তাই ভালো।" এই বলে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম। তখন রাত ৩টা বাজে। আমি দেখলাম কে যেনো আমাকে খাট থেকে নিচে নামিয়ে চা বাগানের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমিও তার পিছু পিছু যেতে লাগলাম।আমি নিজেকে আমার আয়ত্তে রাখতে পারলাম না। আমি যতই সামনে এগিয়ে যাচ্ছি চা বাগানের ভিতরে ততই আমার সামনে অন্ধকার হয়ে আসছে। এক পর্যায়ে আমার চারপাশে ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং সেই মধ্যে আমি একা। এতটাই অন্ধকারের যে আমার চারপাশে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। এর মধ্যে আমার কানে একটা আওয়াজ আসলো,,,,

"আমি ফিরে এসেছি আবার এবার তোকে আর তোর পরিবারকে আমার হাত থেকে কেউ বাচাতে পারবে না।" এটা শুনার পরপরই আমার চোখের সামনে একটা ভয়ংকর চেহারা আসলো এবং আমার সাথে সাথেই ঘুম ভেঙে যায়।

আমি ভাবতে লাগলাম এসব কোন ধরনের স্বপ্ন আমি দেখতে লাগলাম। আর স্বপ্নতে অনেকটা সবকিছু বাস্তব লাগলো। এটা কি আসলেই কোনো স্বপ্ন নাকি কোনো বড় কোনো ক্ষতির ইশারা আসছে। আমস্র এই ব্যাপারে জানা লাগবে। কারণ এই স্বপ্ন যদি সত্যি হয় তাহলে অনেক বড় বিপদ আসবে। তাছাড়া এর মানে আগে বুঝা লাগবে যে এই স্বপ্ন দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে।এসব ভাবতে ভাবতেই সকাল হয়ে গেলো। কিন্তু আমি এখনো কেমন জানি ভয়ে ভয়ে আছি। আমার সারা শরীর ঘামাচ্ছে শুধু। এইসব ব্যাপার কাকি খেয়াল করেন। তিনি আমাকে বলতে লাগলেন,,,,,

-কিরে মায়া, মা তোর কি কিছু নিয়ে সমস্যা হচ্ছে? বা তুই কি কোন পেরেশানিতে আসিছ?
-না কাকি তেমন কিছু না।
-দেখ মা,,,তোর বাবা-মা ছোট থাকতেই এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যান। তারপর থেকে আমরাই তোকে দেখাশুনা করছি। তোকে অনেক ভালোমতো চিনি। তুই আমাদের কাছে কথা লুকাতেও পারস না। আর এখন যে তুই মিথ্যা বলতাছস তাও আমি বুঝতেছি। তাই বল কি হয়েছে?কিছু লুকাসনে মা।
-আসলে কাকি কালকে রাতে আমি অনেক ভয়ানক একটা স্বপ্ন দেখি। যা দেখার পর আমাকে অনেক বিরক্ত করছে কিছু কথা।
-কি স্বপ্ন দেখলি? দেখি বল শুনি।
-কাকি সচরাচর আমরা স্বপ্ন দেখলে তা ভুলে যাই বা কিছু কিছু মনে থাকে। কিন্তু এই স্বপ্ন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সব মনে আছে এবং এর কথা গুলো বার বার জ্বালাচ্ছে।
-কি স্বপ্ন বলবিতো? তাহলেই তো বুঝব।
-আমি দেখলাম একজন আমাকে চা বাগানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো এবং আমি না চাইতেও তার পিছু পিছু যাচ্ছিলাম। দেখলাম আমি যতই সামনে যাচ্ছি ততই আমার চারপাশে অন্ধকার নেমে আসছে। এক পর্যায়ে দেখলাম আম্র চারপাশ গভীর অন্ধকার কিছি দেখা যাচ্ছিলো না। আর এমন সময়ই একটা আওয়াজ আমার কানে আসে যে আমি ফিরে এসেছি এবার তোকে এবং তোর পরিবারকে আমার হাত থেকে কেউ বাচাতে পারবে না। এর পরই আমার চোখের সামনে ভয়ানক একটা চেহারা আসে আর আমার ঘুম ভেঙে যায়। আর এই স্বপ্ন এবং এর কথাগুলো এখনো আমাকে অনেক জ্বালাচ্ছে। এখন কাকি তুমি বল আমি এখন কি করবো। আমার অনেক ভয় করছে।
-আরে মা ভয় পাস নে। এটাতো একটা স্বপ্ন মাত্রই।
-শুধু স্বপ্ন হলে ভালোই হতো কাকি। কিন্তু এটা স্বপ্ন না বরংচ বাস্তব।
-কিভাবে বল?

তারপর আমি আমার জামা উচু করে কাকিকে আমার পেটে একটা আচড়ের দাগ দেখাই। তারপর বললাম,,,,

-কালকে যখন সেই ভয়ানক চেহারা আমার সামনে আসে তখন সাথে সাথে সে আমার পেটে একটা আচড় মারে এবং তখন আমার ঘুম ভেঙে যায়। আজকে সকালে দেখলাম পেটে কেমন জ্বালা পোড়া করছে।তারপর আমি দেখি এরকম দাগ। তখনই আমি বুঝলাম যে এটা কোনো স্বপ্ন না বরংচ কোনো বড় একটা বিপদের ইন্গিত।
-আজকে তুই আমার সাথে হুজুরের কাছে যাস।এখন উনি তোকে এই বিপদ থেকে হেফাজত করতে পারবে।
-আচ্ছা কাকি।

কিন্তু আমি মনে মনে ভাবছি,,,আমার জন্য তো কোন চিন্তা নেই চিন্তা হচ্ছে তোমাদের নিয়ে। তোমাদের কিছু হলে তো আমি শেষ। এটা ভাবতে ভাবতেই আমি কাকি কে জড়িয়ে ধরলাম। এমন সময় কাকিও আমাকে জড়িয়ে ধরে একটা চুমু খেল। এবং বলল,,,,

-আরে পাগলি এতো ভয় পেলে চলবে? সব ঠিক হয়ে যাবে। ভয় পাস নে। তোর মা তোর সাথে আছে। শুধু প্রশ্ন একটাই যে এই শক্তিটা কে হতে পারে? তা বের করা লাগবে আগে।

আমি কিছু বললাম না শুধু জড়িয়ে ধরে রাখলাম। কারণ আমার ভয় কোনো ভাবেই কমছে না।

যাই হক আমরা নাস্তা করে নিলাম। নাস্তা শেষে কাকি আমাকে রেডি হতে বললেন কবিরাজের বাসায় যাবে বলে। আমিও রেডি হয়ে নিলাম।
তারপর আমরা ২ জনে তার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

[আপনাদের কি মনে হয় কে হতে পারে এই শক্তিটা কমেন্ট বক্সে জানাবেন অবশ্যই ]

চলবে,,,,,,,,

লেখকঃইয়াসিন আরাফাত মুবাশশির।
592 Views
17 Likes
7 Comments
4.4 Rating
Rate this: