সেন্টু ঘর থেকে একটু জোরে বেরিয়ে যেতে গিয়ে পায়ে আঘাত লেগে কেটে গেল। নিজের ভাগ্যের প্রতি উপহাস করে হেসে উঠলো। তারপর চলে গিয়ে নদীর তীরে, দাঁড়িয়ে একটা চিৎকার দিয়ে বললো।সুমি আমি তোমাকে ঘৃণা করি, ঘৃণা করি, তুমি আমার জীবন থেকে চলে যাও। আমার হৃদয়ে তোমার জন্য প্রচন্ড ঘৃণা জমে আছে ঘৃণা।
হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো,আর বলছে কেন আমি তাকে ভুলতে পারছি না? কেন এতো কষ্ট হয় আমার? ঘাসের উপর শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আর ভাবছে কত রাত এভাবে দুজনে জেগে জেগে কাটিয়ে দিলাম। আজ চাঁদ আছে আমি আছি শুধু তুমি নাই।
২০১৬ সালে
সেন্টুর মা মারা গেছে বাবা নেশা খোর।সত মায়ের অত্যাচার অতিষ্ট হয়ে গেছে। একদিন সতমায়ের সাথে ঝগড়া করে,রাগ করে সতবোন কে একটা চড় দিলো। বাবা ঘর থেকে বের করে দিল। কোথায় যাবে কোন উপায় না পেয়ে, মামার বাড়িতে আসলো। সেন্টুর বড় মামা ডুবাই থাকে ছোট মামা বাড়িতে থাকে। সেন্টুর মামী ঘরে থাকতে দিতে রাজি ছিল না।ওর বড় মামা স্ত্রী কে বললো বাড়িতে একটা কাজ করতে লোক লাগে।
সেন্টু কে রেখে দাও, তারপর সে রাজি হলো।
বড় মামার দুই মেয়ে সুমি আর রিয়া। রিয়া অনেক সুন্দরী, এবং বুদ্ধিমতী।বড়-বড় ভাসা-ভাসা চোখ মিশরের মেয়েদের মতো লম্বা নাক, গোলাপের মত মিষ্টি দুটো ঠোঁট। প্রথম দেখায় সেন্টুর খুব বেশি ভাল লাগে। ছোট মামার এক ছেলে বিজয় ও সবার ছোট। সেন্টু সারাটা দিন সুমি কে দেখার জন্য পাগল হয়ে যায়।সব সময় সুমির পাশাপাশি থাকতে চায়। সুমির হাসিটা এতোটা মিষ্টি দেখলে মনে হয় পৃথিবীতে এর চেয়ে বেশি মিষ্টি কিছুই নেই।
মাঝে মাঝে ভাবছে কেন ওর পাশে থাকতে ইচ্ছে? কেন ওর হাসি এতো ভালো লাগে? কেন ওর কাছে গেলে আমি শান্তি পাই? সেন্টু আর সুমি দুজনেই উরতি বয়সী কিশোর-কিশোরী। সেন্টু জানে না ভালোবাসা কি জিনিস। কখনো চোখে দেখেনি ভালোবাসতে কাউকে। তাহলে কি এই এটাই ভালোবাসা নাকি অন্য কিছু।
**00**00**
সেন্টুর সারা রাত ঘুম হয়নি, সুমিকে দেখতে খুব ইচ্ছা হচ্ছিল। ভোরে ঘরে এসে চকিতে বসলো। লিজা প্রশ্ন করলো- সারা রাত কোথায় ছিলেন?
সেন্টু:- কেন? বলতে গিয়ে গলাটা কেঁপে উঠলো।
লিজা:- ঘরে নতুন বউ রেখে সারা রাত কোথায় ছিলেন?
সেন্টু একটু উত্তেজিত হয়ে বললো -আমি বলছি না আমাকে প্রশ্ন করবেন না। আমি আপনাকে কৈফিয়ত দিতে রাজি নয়।
লিজা:-কৈফিয়াত তো দিতেই হবে।এটা কি ইয়ার্কি হচ্ছে? ফাজলামো হচ্ছে ঘরে নতুন বউ রেখে।সারা রাত অন্য নারীর কাছে যাইবেন।
সেন্টু অনেক রেগে চেঁচিয়ে বলল- আমি কার কাছে গেছি?
গেলেও তাতে আপনার কি? আমি যার কাছে ইচ্ছে যাবো।
লিজা:-আপনি আমাকে চিনেন না ঠ্যাং ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো।
সেন্টু রাগে ঘর থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছে। লিজা বলল-
কোথায় জান? না খেয়ে যাবেন না।শুনুন, আমার কথা শুনুন আমি কিন্তু রাতে খাইনি। আপনি না খাইলে আমিও খাবো না।
সেন্টু কি হয়েছে?তোর সমস্যা কি? সেন্টু তাকিয়ে দেখলো তার ভাবী দাঁড়িয়ে আছে।
সেন্টু:-না ভাবী,কিছু না।
ভাবী:- না খেয়ে যাও কেন? এখন একটু ভালো হতে পারো না।
লিজা হাত ধরে টেনে ঘরে নিয়ে আসলো বলল- বসেন, না খেয়ে যাইবে না। আমি না হয় খারাপ মানুষ কথা শোনাই কিন্তু ভাতের সাথে রাগ করতে হয় না।
সেন্টু একটু অবাক হয়ে লিজার দিয়ে তাকালো।আর ভাবছে কেমন মেয়ে এই আগুনের মতো জ্বলে উঠে,আবার মোমের মতো গলে যায়।
বলল- ঠিক আছে দিন।
**00**00*
সেন্টুর মামী বললো সেন্টু সুমির সাথে মাছ ধরতে যা। মামার ঘরের পিছন দিক দিয়ে খাল চলে গেছে।খালে অনেক চিংড়ি,সোল,গুলিশা আরো অনেক মাছ। সুমি একটা জাল আর ব্যাগ নিয়ে আসলো।
সেন্টু বলল- সুমি আমি তো কখনো এই জাল দিয়ে মাছ ধরেনি।
সুমি:-হাসি দিয়ে বললো ইস পুরুষ হইছো কেন?
আসো আমার সাথে।জালটা দুই হাতে মেলে ধরে, অল্প একটু হাতের কনুতে রেখে, জলে ভিতরে ছো মেরে ফেলে দিল। জালটা ফুলের মত ছড়িয়ে পড়লো
সেন্টু:-ইয়া আল্লাহ তুমি এতো সুন্দর করে জাল ফেলতে পারো। কার কাছে শিখছো আমাকে শিখিয়ে দাও না?
সুমি:-মা শিখিয়েছে সে অনেক ভালো জাল ফেলতে পারে।
সেন্টু অবাক হয়ে বললো -কি মামানী
সুমি:-হুম।
সেন্টু:-ঠিক আছে এখন তুমি আমাকে শিখিয়ে দাও প্লীজ?
সুমি:- শিখাবো কিন্তু একটা শর্ত আছে?
সেন্টু:-হুম রাজি।
সুমি:- প্রতিদিন আম পেড়ে দিতে হবে
সেন্টু:-শুধু প্রতিদিন না সারাটা জীবন আম পেড়ে দিব।
সুমি বললো জাল ডান হাতে ধরে কনুর উপরে রাখো তারপর দুই হাতে জাল মেলে ধরো। সুন্দর করে দেখিয়ে দিল। এখন জলে জোরে এভাবে ফেলে দাও। সেন্টু জাল ফেললো কিন্তু জাল এলোমেলো হয়ে বুজে আছে। সুমি হা হা করে হেসে উঠলো, সেই হাসির শব্দে সারা গ্রামে প্রতিধ্বনি হতে লাগলো। সেন্টু মনোমুগ্ধের মতো পাগল হয়ে তাকিয়ে হেই হাসি উপভোগ করছে। সেন্টু আবার জাল ফেললো একটুখানি ভাল হয়েছে। সুমি বললো তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না। সেন্টু দেখে নিও তোমার থেকে ভালো হবে। দুজনে জাল মেলে খালের ভিতরে টেনে মাছ ধরলো।
**00**00**
সেন্টু রুস্তম আলীর সাথে দিন মজুরি হিসেবে কাঠের কাজ করে। আজকে আর দুপুরে বাড়িতে আসলো না। অনেক দূরে কাজ তাই হোটেল খেয়ে নিল। লিজা খুব চিন্তিত হয়ে পড়লো মনে হয় রাগ করে ঘরে আসনি। লিজা দৌড়ে ভাবীর কাছে গিয়ে বললো - ভাবী সেন্টু কোথায় কাজ করে দুপুরে কি আসবে না?
ভাবী:- জানি না, তুমি চিন্তা করো না ওর ঠিক নেই।
রাকিব কে ফোন করে দেখি জানে কিনা।
লিজা:-ঠিক আছে।
রিমা ফোন করে বললো- সেন্টুর কোন খোঁজ খবর জানো?
রাকিব - না, কেন?
রিমা- ঘরে আসেনি তাই লিজা চিন্তা করছে।
রাকিব:- চিন্তা করতে হবে ঠিক চলে আসবে।
লিজা বলল- ভাবী সেন্টু কি কখনো বাড়িতে যায় নি?
ভাবী:- একবার গেছিলো,ওর বাবা মা কেউ কথা বলে নি। একটা বোন আছে লিমা নাম, সেন্টু কাছে ডাকছে কিন্তু আসেনি।
লিজা:- তাদের নাম্বার আছে?
ভাবী:- না,
লিজা:- আচ্ছা ভাবী সেন্টু এমন কেন?
ভাবী:-কেমন?
লিজা:-ও কি সব মেয়েদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে নাকি শুধু আমার সাথেই?
ভাবী:-আসলে ও খুব ভালো মানুষ। কিন্তু মামাতো বোনের প্রেমে পড়ে এমন হয়েছে।
লিজা:-যাক বাবা বাঁচা গেল। আমি তো ভেবেছিলাম পুরুষত্বহীন । না হলে আমার মতো একটা সুন্দরী মেয়ে পাশে অথচ ছুঁয়েও দেখেনি।
ভাবী হাসি দিয়ে বললো-যখন ধরবে টের পাইবা ও কেমন ।ও অনেক শক্তিশালী পুরুষ কিন্তু কষ্টে-কষ্টে এমন কঠিন হয়ে গেছে।
লিজা বলল-আচ্ছা ভাবী যাই আমি কাঁথা সেলাই করবো।
ভাবী- ঠিক আছে
লিজা মাচায় উঠে পুরানো টেরাংক/টিনের বস্ক টা খুললো। এতে দুটো চিঠি, একটা চুল বাঁধার কাঁকড়া। একটা পায়ের নুপূর বকুল ফুলের মালা। কিছু পুরনো পোশাক আর একটা শাড়ি। লিজা নিশ্চিত হলো এগুলো কোন মেয়ের স্মৃতি। রাগে শরীর জ্বলে উঠলো ইচ্ছা করছে সব কিছু ফেলে দিতে।যার সাথে বিয়ে হয়েছে সে অন্য মেয়ের স্মৃতি বুকে লালন করছে। লিজার খুব কষ্ট হচ্ছে ,আমি তার স্ত্রী আমাকে ছুঁয়েও দেখেনি।সে অন্য কাউকে ভালোবাসে। এটা সত্যি খুব কষ্টের, লজ্জা জনক । চোখ থেকে দুই ফোঁটা অশ্রু পড়লো, চোখ মুছে বলল-তুমি আমাকে এটা কেমন জীবন দিলা।
আমার স্বামী আমার পাশে শুয়ে অন্য নারীর কে সরণ করে।
খুব ক্লান্ত লাগতেছে ইচ্ছা করছে এই ঘর সংসার ছেড়ে কোথায় চলে যেতে।
**00**00**00**
বিকেলে সেন্টু আম পেড়েছে সুমি, রিয়া তিন জনে মিলে পুকুর পাড়ে বসে খাচ্ছে।
লবণ মরিচ আর তেল দিয়ে কাঁচা আমের সেই স্বাদ।
হঠাৎ জীবন আসলো সুমি কে বলল- আপু তোমরা খাও আমাকে দিবা না। জীবন হলো ছোট মামার ছেলে।
সুমি:- হুম বস।
আম খাওয়া শেষ রিয়া বললো আপু আমরা লুডু খেলি ?
জীবন:- হ আপু চলনা।
সেন্টু বাড়ির সব কাজ করে, সারা দিন সুমির সাথে দুষ্টুমি করে। খেলাধুলা,মাছ ধরা গল্প করা এভাবেই দিন চলে যায়। সেন্টু আস্তে আস্তে সুমির প্রতি খুব বেশি দুর্বল হয়ে পড়লো। সুমি কে একটা মুহূর্ত না দেখে থাকতে কষ্ট হয়।
সকালে ঘুম থেকে উঠে সেন্টু বকুল ফুল পেড়ে একটা মালা গাঁথলো। সুমির ঘুম থেকে উঠার আগেই তার বইয়ের ভিতরে রাখলো।
সুমি পড়তে বসলো সেন্টু অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সুমি অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করলো। তারপর কাছে ডেকে বললো- তুমি আমাকে দেখছিলা
সেন্টু- না, আসলে দেখছি কি পড়ো।
সুমি- আমার সাথে মিথ্যা বলে কখনো পার পাবে না বুঝলা
সেন্টু:- একটা কথা বলতে ইচ্ছে করছে?
সুমি - বলো?
সেন্টু- তুমি এতো সুন্দর কেন? বিশ্বাস করো আমি জীবনে তোমার মতো এতো সুন্দর মেয়ে দেখিনি।
সুমি:- হাসি দিয়ে বলল তোমার চোখ নাই তাই দেখনি।
সেন্টু- তুমি কি জানো হাসলে তোমাকে চাঁদের চেয়েও বেশি সুন্দর লাগে।
রিয়া- তুমি কি আপু কে ভালবাসো
সুমি সাথে সাথে রিয়ার মুখটা চেপে ধরে বললো মা শুনবে তো।
সেন্টু- না, তবে ভালো লাগে ওর সাথে থাকতে
সুমি, রিয়া ইস্কুলে গেল সারা দিন সেন্টু একা ডাল তুলছে। সুমি ইস্কুল থেকে এসে পানি আর গুড়-মুড়ি নিয়ে গেল। সেন্টুর একা কাজ করতে খুব খারাপ লাগছে। সারাটা দিন সুমির সাথে দুষ্টুমির কথা ভেবে কাজ করছে। হয়তো ওর স্মৃতিগুলো কাজের সঙ্গী। সেন্টু দুর থেকে সুমিকে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলো।
কাছে আসতেই বলল- তুমি ছাড়া আমার কাজ করতে ভালো লাগে না।
সুমি- আমি ইস্কুলে ছিলাম। এখন একটু বসে খেয়ে নাও।
সেন্টু বলল-হাতে ময়লা তো ধুয়ে নিই
সুমি -আচ্ছা আমি খাইয়ে দিই।
সেন্টু বলল-ঠিক আছে।
সেন্টু দুষ্টুমি করে আঙ্গুলে কামড় দিল, তাই নিয়ে ধরাধরি চলছে।
সেন্টু - গোসল করছো তুমি?
সুমি - না
সেন্টু-চলো পানিতে ছোঁয়া ছুঁইয়ি খেলি
সুমি- ঠিক আছে কিন্তু জড়িয়ে ধরতে পারবা না। তাহলে আমি পানি খাই। শুধু গায়ে লাগলেই মগা কিন্তু
সেন্টু- হুম চলো।
বিকেলে পাড়ার ছেলে-মেয়ে মিলে বউছি খেলছে।
সুমি দৌড় দিল হঠাৎ পা কেটে চিৎকার দিল। সেন্টু সুমি বলে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে গেল। সুমিকে কোলে করে নিয়ে দুরে এনে, পায়ে কালো কচুর কস দিয়ে বেঁধে দিল। সুমি ব্যথায় কাতরাচ্ছে সেন্টু বললো তোমাকে ঘরে দিয়ে আসি।
সুমি বলল-না তুমি খেলা করো আমি এখানে বসে দেখবো। রাতে মামী সুমি কে অনেক বকলো, এতো বড় মেয়ে কথা শুনে না। পাড়ার পাড়ার ঘুরে বেড়ায়।
+++000+++000+++
রাতে সেন্টু ঘরে আসলো লিজা বলল- দুপুরে খাইছো কিছু?
সেন্টু - হ খাইছি। সেন্টু ভাবছে এই মেয়েটা খেয়ে আছে নাকি না খেয়ে আছে কখনো জিগ্গেস করিনি। অথচ সে আমার জন্য ভাবছে।
সেন্টু বলল-আপনি খাইছেন? বলতে গিয়ে গলাটা বেশ কেঁপে উঠলো
লিজা - আমার একটা অনুরোধ রাখবেন?
সেন্টু অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো- কি, কি আবার বলুন
লিজা- আমাকে কখনো আপনি করে বলবেন না।
সেন্টু- আ আ আচ্ছা। বলে ঘরে ঢুকলো।
গোসল করে আসলো খাবার বেড়ে দিল।
লিজা বলল-একটা কথা বলি?
সেন্টু ভাবছে এই মেয়েটা তো আচ্ছা নাছোড়বান্দা।
সেই তখন থেকে প্রশ্ন করেই যাচ্ছে। সেন্টু কিছু বললো না।
লিজা- কম দামের একটা মোবাইল কিনলে। আপনার খোঁজ খবর জানতে পারতাম
সেন্টু- আমি কোন রাজপুত্র না যে খোঁজ খবর জানতে হবে।
রাতে শুয়ে পড়লো লিজা বলল-সেন্টু আমি তোমার স্ত্রী। যদি স্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে না পারো, তাহলে বিয়ে করছো কেন?
সেন্টু- চেঁচিয়ে বলল-আমি মানিনা, আমাকে না জানিয়ে সবার সামনে বসিয়ে বলে এটা পাত্র। আমি কিছু বলার আগেই বিয়ে শুরু হয়েছে।
লিজা- তিন বার কবুল বলেছো এখন বলো আমি জানি না।
সেন্টু- আমি হতভম্ব হয়ে গেছিলাম, সবাই বললো কবুল বলো আমি বলে ফেলছি।
লিজা:- সবাই যদি বলে তুমি বিষ খাও আর খেয়ে নিবে। কতো সুন্দর উত্তর দাও তুমি।
সেন্টু-আমার ভুল হয়ে গেছে।
লিজা-টেরাংঙ্কে কার জিনিস এইগুলো?
সেন্টু-আপনা কে দেখার অধিকার কে দিসে।
লিজা- যে অধিকারে এখানে আছি।
**00**00**00**
আজকে শুক্রবার সুমির ইস্কুল বন্ধ তাই ভোরে উঠে বকুল ফুল কুঁড়ায়। সেন্টু বলল-আজকে তুমি ফুল কুঁড়ায় কেন?
সুমি-প্রতিদিন তুমি ফুলের মালা দাও আজকে আমি দিব।
সুমি মালা গাঁথে সেন্টু তাকিয়ে আছে।
সুমি বলল- এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
সেন্টু- তোকে দেখছি। তোর দিকে তাকিয়ে থাকলে আমি পৃথিবীর সব কিছু ভুলে যাই।
সুমি- এভাবে তাকালে আমার লজ্জা লাগে।
সেন্টু বললো-চল আজকে বড়শি দিয়ে মাছ ধরি।
বড় মামীর মা অসুস্থ তাই রিয়া কে সাথে নিয়ে ভোরে দেখতে গেছে। হেঁটে যেতে ঘন্টা খানেক সময় লাগে।
বিকেলে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে তাই ফোন করে বললো। বৃষ্টি থামলে আসবে,সুমির কিছুটা আনন্দ হলে। সেন্টু খবর টা শুনে খুশিতে পাগল হয়ে গেল। বিকেলে দু'জনে লুডু খেলছে, তারপর খেজুরের বিজ দিয়ে চোর-পুলিশ খেললো অনেক মজা করছে। সন্ধ্যার পড়ে বাড়ান্দার খাটে বসে দু'জনে গল্প করছে। কিন্তু বৃষ্টি বেরেই চলছে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল।সুমি হারিকেন জ্বালিয়ে দিল।দু'জনে বসে গল্প করছে বজ্রপাতের শব্দে সুমি সেন্টু কে জড়িয়ে ধরলো। সেন্টুর মনে হলো পৃথিবীর সমস্ত সুখ তার বুকের মাঝে বন্দী হয়ে আছে। মনে মনে আল্লাহকে ধন্যবাদ দিল। সেন্টুর শরীর আবেগে কাঁপছে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। আস্তে করে কপালে একটা চুমু দিল। সুমি কেঁপে উঠলো, কিন্তু কোন কথা বললো না। বিদ্যুৎ চলে আসলো সেন্টুর কষ্ট হলেও সুমি কে বুক থেকে সরিয়ে নিল।
সেন্টু এক শ্বাসে গ্লাস দুই পানি গিলে নিল। পাতলা একটা কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়লো।
সুমি বললো -তুমি খাবে না
সেন্টু -না, আমার ক্ষুধা নেই।তুমি ঘরে শুয়ে পড়ো আমি বাড়ান্দায় থাকি
সুমি-আমার বজ্রপাতের ভয় করে। তোমার সাথে ঘুমাই।
সেন্টু- না,তা হয় না।
সুমি -একশো বার হয়। বলে সেন্টুর পাশে অন্য একটি কম্বল দিয়ে শুয়ে পড়ল।
রাত যতই বাড়ছে বৃষ্টিও বেড়ে চলেছে। হঠাৎ হঠাৎ বজ্রপাতের শব্দে সুমি ভয়ে ছোট হয়ে গেছে।
খুব জোরে বজ্রপাতের শব্দ হলো। সুমি চিৎকার দিয়ে সেন্টুর বুকের মধ্যে লুকিয়ে পড়লো ।
মুরগির বাচ্চা যেভাবে মায়ের গায়ের নিচে লুকিয়ে থাকে। তেমনি সুমি সেন্টুর বুকের মধ্যে লুকিয়ে আক্রে ধরলো। সেন্টু বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলছে তুমি এতো ভয় পাও কেন?
সুমি- তুমি ভয় পাও না।
সেন্টু- তুমি না থাকলে হয়তো পাইতাম।
সুমির উর্তি বয়স তার বুকের কোমল মাংসপিণ্ডের স্পর্শে, সেন্টুর শিড়া উপশিরায় আগুন ধরিয়ে দিল। সুমির গরম নিঃশ্বাস আর গায়ের কোমল সুবাসে সেন্টু প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে গেছে।নিজেকে যৌবনের উর্তি আগুনে পুড়ে পুড়ে কয়লা বানাচ্ছে। সেন্টুর দুরান্ত পাগলা ঘোড়া কে, আরো বেশি পাগল করে দিল।
সুমিও অনেক উত্তেজিত হয়ে উঠল । শরীরের সব শক্তি দিয়ে সেন্টু কে জড়িয়ে ধরলো। বুকের ওড়না টা ফেলে দিয়ে বললো - আমি আজ থেকে সম্পুর্ণ তোমার। তোমার যা ইচ্ছে করো।
সেন্টু অনেক কষ্টে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে বললো -
আমি খারাপ কাজ করতে চাই না। এটা অন্যায়,এটা পাপ বলে উঠে গ্লাস দুই পানি খেয়ে। একটা কোল বালিশ মাঝখানে রেখে শুয়ে পড়লো।
ভোরে মামী আর রিয়ার ডাক শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেল।
বোবা কান্না (পর্ব ২)
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
359
Views
10
Likes
1
Comments
5.0
Rating