রাসুলের সিরাতের এক দীপ্তিময় অধ্যায় হলো, হাজরে আসওয়াদ’কে কেন্দ্র করে জ্বলে উঠা বিরোধ নিরসন কাহিনি। কুরাইশের সর্দাররা ঠিক করলো, এই বছর কাবা ঘরের সংস্কার করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা কাজে নেমে পড়ে।ধীরে ধীরে সংস্কার কাজ শেষও হয়ে আসে। বাকি থাকে শুধু হাজরে আসওয়াদ পুনঃস্থাপনের কাজ।
এই পবিত্র পাথর আপন জায়গায় কে রাখবে, এই ছিলো দ্বন্দ্বের মূল কারণ। প্রত্যেক গোত্রই এই সম্মান অর্জন করতে চাই। কেউ বঞ্চিত হতে প্রস্তুত নয়। এক সময় বিরোধ চরমে ওঠে। যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব। এমন কি সবাই রক্তস্নান করার শপথ নেয়। (সবাই আপন শরীর থেকে বিন্দু বিন্দু রক্ত দিয়েএকটা পাত্রে রাখে। সেই পাত্রে হাত রেখে সবাই রক্ত দেওয়ার শপথ নেয়) তাই এটাকে রক্তস্নান বলে অভ্যহিত করা হয়েছে। এই নিয়ে তাদের বিরোধ দিন দিন ঘোরতর হতে লাগলো। এমন সময় ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন মানবতার মুক্তির দূত রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
পরের দিন সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করেন তিনি। মুহূর্তেই সমস্যার সমাধান করে দেন তিনি। এমন সমাধানে সবাই খুশিতে আত্মহারা। এটা ছিলো নবুয়াতের পূর্বের ঘটনা। তখনও রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর ওহি নাজিল হয় নাই। কিন্তু সবার মাঝে তিনি আল আমিন তথা বিশ্বস্ত ও আস্হাশীল হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সবাই রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুশলী সমাধানে অভিভূত হয়ে পড়েন। রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেই তারা সকলেই বললো এই তো দেখি আমাদের আল আমিন। তারা রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বিচারক মেনে নেয়।তিনি একটা চাদরে পাথরটা রাখেন। তারপর প্রত্যেক গোত্রের প্রতিনিদিকে চাদরের এক একটি প্রান্ত ধরতে বলেন। চাদর ধরে সবাই পাথরটি সঠিক স্হানে নিয়ে গেলো।
তারপর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিজ হাতে পাথরটি আপন জায়গায় রাখলেন। এই ভাবে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এই সমাধানে সকলেই সন্তুষ্ট হলো। এই ভাবে গুরুত্বপূর্ণ কাজে সবাই অংশগ্রহণ করলো। আর কোনো দ্বন্দ্ব রইলো না। এই ভাবে সবাই এক অনিবার্য রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ থেকে রেহাই পেলো।
হাজরে আসওয়াদ নিয়ে মতবিরোধ নিরসন
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
365
Views
12
Likes
2
Comments
4.3
Rating