মৃত্যু

প্রতিদিনের মতোই আজকেও তানুর লেকচার
শুরু হলো!!
পাঠ্যাদান শেষ করে তানু বললো,চলুন
আপনাদের সাথে কিছু দূর্দান্ত আলাপ আলোচনা করি!!
সকল শিক্ষার্থী সমস্বরে বললো, আমরা প্রস্তুত
ম্যাম....
তানু বলতে শুরু করলো :
আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের কে পৃথিবীতে
পাঠান মূলত তার এবাদতের উদ্দেশ্য।
আমাদের প্রত্যেক কে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ
করতে হবে।মৃত্যু টা অবধারিত।
কিন্তু আমরা কত ছলনায় পথ হারিয়ে চলে
যাই বিপথে......
Always Remember my students...
আপনাকে সর্বপ্রথম আপনার সৃষ্টিকর্তার
প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তারপর,আপনাকে ভালো মানুষ হতে হবে।
আপনাকে শিক্ষা ও জ্ঞানার্জন করতে হবে।
আপনার মৌলিক চাহিদা যথাযথ পূরণ হয়ে
ভালো ভাবে বেচে থাকার জন্য যা যা দরকার
আপনি সেটা অর্জন করলেই যথেষ্ট!!
দুনিয়ার মত্ত, দুনিয়ার বিলাসিতায় আপনি
হারিয়ে যাবেন...আপনাকে মনে রাখতে হবে
কোন ১দিন সূর্য আর উদয় হবে না।
কোরআনে খুলে আপনি আর কোন লেখাই
পাবেন না। আসমান ভেঙে পড়বে।
কোন ১দিন আপনাকে দাড়াতে হবে রবের
সামনে। আপনাকে face করতে হবে মিযান,
পুলসিরাত, জান্নাত জাহান্নাম।

মন্দ কাজ,অন্যায়ের কখনো কোন পরিমান
হয়না।আপনি কম করুন আর বেশি করুন
আপনাকে জাহান্নামি হতে হবে। তাই ভালো
হবে যদি আমি আপনি সবসময় ভালো পথে
আল্লাহর পথে থাকি!! আর যদিওবা বিপথে
চলেও যায়, তাহলে যেন আল্লাহর তাওয়াককুল
করে আমরা ফিরে আসি। এরকম রবের
স্মরণেই মুক্তি।
আপনার আমার আমাদের সবার জীবনে
আল্লাহ, পরিবার, আমাদের সঙ্গী আর নিজ
ছাড়া আমাদের কেউ আপন নই এ পৃথিবীতে।
তাই নিজেকে ভালোবাসবেন, পরিবার কে
ভালোবাসবেন,আপনারা আপনাদের সঙ্গীকে
হৃদয় চিরে ভালোবাসবেন,আল্লাহ কে
ভালোবাসবেন। প্রতি মুহূর্তে খুশি থাকবেন।

শৈশব - কৈশোর পার হয়ে যৌবনে যাবেন
যৌবন পার হয়ে বৃদ্ধ অবস্থায় যাবেন। জীবনের
প্রতিটি ধাপে আপনি সবসময় এক থাকবেন না। শারীরিক পরিবর্তন হবে, মানসিক পরিবর্তন হবে, বাস্তবতা,সময়,পরিস্থিতি সব পরিবর্তন
হবে। fight করবেন,এগিয়ে যাবেন। সত্যকে
সর্বদা স্বীকার করবেন।সততার সাথে সর্বদা
আল্লাহর শক্তি, ইমানের শক্তি চলবেন।
শক্তিশালী সময়ে সবারই আওয়াজ থাকে,
আপনি না হয়,,দূর্বল সময়েও কথা বলবেন,
কথার জোর রাখবেন। জীবনটা যুদ্ধ ক্ষেত্র
আর পরীক্ষা ক্ষেত্র। কাদবেন,চিৎকার করবেন
আবার উঠে দাড়াবেন। আযাব কে স্মরণে
রেখেে এই মিছে দুনিয়ায় প্রতিটি পদক্ষেপ
ফেলবেন........

[পুরো ক্লাস চুপ আর কোথায় যেন হারিয়ে গেছে,হঠাৎ তানু হাত দিয়ে একটা চুটকি বাজালো এবং বলল..... Hello]

সবার হুশ ফিরলো......ম্যাম বললো, okk so
Allah Hafeez and love you all of my
Students.
Students :we love you too mam...

Lecture থেকে বের হয়ে তানু চললো, নিজ
কেবিনে!! আর সবাই বের হয়ে চলে গেল
যার যার গন্তব্যে।কেউ মাঠে আসর বসাচ্ছে, কেউ study discussion করছে,কেউ দাড়িয়ে আছে, কেউ চলে যাচ্ছে বাড়িতে।

তানুও কেবিন থেকে বের হয়ে চলা শুরু
করলো,,মাঠের দিকে।মাঠ পেরিয়ে গাড়িতে করে ছুটবে বাসার দিকে... হঠাৎ খেয়াল
করলো Aylin যে সিড়ি দিয়ে নামবে,,সেখানে
পরিষ্কারক লিকুইড পাউডার পড়ে আছে।
ভালো করে পরিষ্কার করা হয়নি জায়গা টা আজকে।

তানু বারবার ডাক দিচ্ছে পিছন থেকে,, Aylin
সরে যাও, Aylin দাড়াও,,শুনছো তুমি, নিচে দেখো, যেও না। কিন্তু আইলিন হেডফোন কানে
দিয়ে হেটেই চলেছিলো। তানু যখন দেখলো,
আইলিন সিঁড়ির কাছাকাছি,,, তখন সে ছুটে
পিছন থেকে দৌড় দিয়ে এসে এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো,,, আর হঠাৎই আইলিনের পরিবর্তে পা ফসকে সিঁড়িতে পিছলে পড়ে গেলো সবার প্রিয়.... Tanu mam.........!!

পড়তে পড়তে গড়াগড়ি খেতে খেতে ম্যাম ৩তলা থেকে পড়লো ২য় তলার সিঁড়িতে!!
আর মুহূর্তের মধ্যে রক্তের ছড়াছড়ি হয়ে গেলো
আইলিন এক চিৎকার করলো,
আশেপাশের সবাই দৌড়ে এসে যত শীঘ্রই সম্ভব ম্যামকে কোলে তুলে নিয়ে গেলো নিচে
আর এম্বুলেন্স না আসা অব্দি শুইয়ে দিলো মাঠের একটি বেঞ্চ... এ!!
পানি ছিটানো তে, হাত পা ঢলাঢলি, first aid treatment এও ম্যামের sense ফিরলো না। চারপাশে হট্টগোল।
এরই মধ্যে চলে আসলো Ambulance
দ্রুতই নিয়ে যাওয়া হলো তুর্কির সবচেয়ে পুরনো ঐতিহাসিক হসপিটাল Hospital is turkiye......
কেউ একজন দৌড়ে গেলো তানু ম্যামের বাসায়.... খবর দেওয়া হলো ফাতমা খালা কে। ফাতমা খালা বেচারি কাপতে কাপতে
লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতুম মিনাজ যোয়ালিমিন পড়তে পড়তে
এসে পৌঁছালো hospital....... এ!!

কিন্তু..... এ কি?? ফাতমা খালার আর শেষ
কথা বলা হলো না। শেষ আদর আর করা হলো না তার প্রিয় কলিজার টুকরো তানু কে। চিকিৎসক সাথে সাথেই তানু কে
spot dead ঘোষণা করেছে.......

পুরো ইস্তাম্বুল জুড়ে,এক অন্য রকম বিষাদের ছায়া। ফাতমা খালা পাগল প্রায়..
students কেউ কেউ মানতে পারছে না,
কেউ senseless, কেউ বা ভেঙে পড়ছে,
Aylin ট্রমায় চলে গেছে..... পুরো ইউনিভার্সিটি তে সবার ঢল পড়ছে তো পড়ছেই!"

হসপিটাল থেকে বিদায় দেওয়া হলো
সোনার টুকরা কে.....সাজিয়ে গুছিয়ে
আনা হলো ইউনিভার্সিটি তে................
শোকে স্তব্ধ সবাই.............
ঘনিয়ে এসেছে বিদায় বেলা.......
একে একে দোয়া পড়লো কাছে এসে.....
ফাতমা খালা কপালে চুমু দিলেন,
চুমু দিলেন হাত....
পড়লেন দোয়া.......... কান্নায় ভেঙে পড়লেন!!
সম্মান এর সহিত শেষ জানাযা দিয়ে
নিয়ে যাওয়া হলো...... ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক
কবরস্থানে!!

ব্যাস!! আকস্মিক ভাবে চিরনিদ্রায় নিদ্রিত হলো সোনার টুকরো😌🤲