দিন গুনতে গুনতে এসে গেল সেই প্রতীক্ষার দিন—বিতর্ক প্রতিযোগিতার ট্রায়াল। কলেজ মিলনায়তনে ভিড় জমেছে ছাত্রছাত্রীদের। কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, কেউ ফিসফিস করছে—“আজ আসল যুদ্ধ হবে, রূপা বনাম রিয়াদ।”
মঞ্চে সবার আগে উঠে গেল রিয়াদ। ভরাট কণ্ঠ, ধারালো যুক্তি আর আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে সে নিজের বক্তব্য শুরু করল। “দেশের উন্নয়নে শিক্ষার্থীর ভূমিকা” বিষয়ে ওর যুক্তি এতটা শক্তিশালী ছিল যে, সবার চোখ ঝলসে গেল। শেষে করতালিতে গোটা হল কেঁপে উঠলো।
কিছুক্ষণ পর মঞ্চে উঠলো রূপা। প্রথমে সবাই ভেবেছিল—রিয়াদের মতো জমকালোভাবে শুরু করতে পারবে না। কিন্তু রূপা মাইকের সামনে দাঁড়িয়েই ধীরে বলল,
—“উন্নয়ন কেবল অর্থনীতির অঙ্কে মাপা যায় না। উন্নয়ন তখনই পূর্ণ হয়, যখন একটি শিশু ক্ষুধার কান্না থামায়, একটি মেয়ে নিরাপদে স্কুলে যেতে পারে, আর একজন দরিদ্র ছাত্র বই কিনতে না পারার কষ্টে চোখের জল ফেলতে হয় না।”
হল নিস্তব্ধ হয়ে গেল। রূপার কণ্ঠে আবেগ, যুক্তি আর বাস্তবের ছবি একসাথে মিশে ছিল। তারপর একে একে পরিসংখ্যান, উদাহরণ আর সমাধানের প্রস্তাব—সবকিছু এত সুন্দরভাবে সাজাল যে, দর্শকদের চোখে জল এসে গেল।
শেষে রূপা মৃদু কণ্ঠে বলল,
—“সত্যিকারের উন্নয়ন শুধু কাগজের ভাঁজে নয়, মানুষের জীবনে প্রতিফলিত হতে হবে।”
এক মুহূর্ত নীরবতার পর মিলনায়তন যেন বিস্ফোরিত হলো করতালিতে। সবাই দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে লাগল।
স্যার উঠে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন,
—“আমাদের প্রতিনিধি হবে রূপা।”
রিয়াদের চোখ মুহূর্তেই লাল হয়ে উঠল। ওর ভেতরে হারের তীব্র দহন, আর চারপাশে শুধু রূপার নাম ধ্বনিত হচ্ছে—“এটিটিউট গার্ল এটিটিউট গার্ল!”
রূপার ঠোঁটে অল্প একটুখানি হাসি ফুটল। কিন্তু সেই হাসির আড়ালে লুকিয়ে ছিল এক নিঃশব্দ চিন্তা—
“এই জয় হয়তো শেষ নয়, বরং নতুন ঝড়ের শুরু।”
—
এটিটিউট গার্ল
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
32
Views
2
Likes
0
Comments
5.0
Rating