মিশরের উপকথায় এল-নাদ্দাহা নাম অদ্ভুত অশরীরী আত্মা দের কথা বলা আছে । এরা নিশি ডাকে মতো এদের স্বভাব। এরা মধ্যে ছেলে থাকে না সবাই মেয়ে হয়। কিন্তু পুরুষকে আকর্ষণ করা সব গুন এদের মধ্যে থাকে। শোনা যায় নীল নদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া পুরুষদের নীল নদের জলে ডুবিয়ে মেরে ফেলে এরা। এল-নাদ্দাহা-এর কাহিনী মিশরের গ্রাম্ গুলো তে খুবই প্রচলিত, আলা বলে এক মিশরীয় কুক এর গল্প বলেছিল, বিশেষ করে মিশরের দক্ষিণ থেকে কারণ দক্ষিণ মিশর-এ নীল নদ থেকে বানানো হয়েছে অনেক খাড়ি, যেগুলো স্থানীয় চাষিদের চাষের কাজে ব্যবহার করে। এরাই এদের কথা বলে।
এল-নাদ্দাহা নিয়ে অনেক পুরনো গল্প প্রচলিত আছে। এ শতাব্দীর প্রথম থেকেই মিশরের বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় এদের নিয়ে অনেক গল্প শোনা যেতো । তাঁর একটা প্রধান কারণ হল, এই সময়টা, স্থানীয় মানুষেরা নীল নদের ধারে বা তার থেকে বেরিয়ে আসা খাড়ির ধারে অনেক টা সময় করত চাষবাস এর কাজ করতো বলে। শহরে ও যেতো নদীর পথে তখনই এল-নাদ্দাহা খপ্পরে পরতো।
উপকথা অনুযায়ী, সন্ধ্যা নামার পর এল-নাদ্দাহা একজন অপরূপ সুন্দরী নারীর রূপ ধরে অপেক্ষা করতে থাকে নীল নদের ধারে, ঘুরে বেড়ায় । সেই স্থান দিয়ে যদি কোন পুরুষ যায়, তাহলে এল-নাদ্দাহা তার নাম ধরে ডাকতে থাকে। সেই ডাকে থাকে এক অলৌকিক সম্মোহন শক্তি, যার ফলে সেই পুরুষ পাগলের মত ছুটতে থাকে সেই ডাকে উৎস-এর দিকে। যদি দুই টি পুরুষ থাকে একে একে দুই পুরুষকে সম্মোহিত করে ডেকে, নিয়ে যায় এল-নাদ্দাহা কিন্তু তার একই ভাবে ডাকতে থাকে সেই পুরুষকে। তারপর তাদের হত্যা করে।
উপকথায় শুনে পরে দিকেৎযেহেতু কোন পুরুষই ডাক শোনার পর নীল নদের কাছাকাছি যায় না। তাই এল-নাদ্দাহা-র বর্ণনা পাওয়া যায় না এখন উপকথায়।
মিশরের গ্রামে এদের নিয়ে যে গল্প প্রচলিত আছে তাতে এল-নাদ্দাহা নীল নদের আসেপাসের গ্রামের মানুষকেও নাকি বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যেতো পর্যন্ত। যার ফলে পুরুষরা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতো ।কাহিনী অনুযায়ী, এল-নাদ্দাহা-র ডাক শোনার পর, পুরুষটি তৎক্ষণাৎ ঘর ছেড়ে চলে যেতে না দাওয়া হলেও, সে একটা অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে। এইভাবে বেশ কিছু রাত কাটার পর সে এক রাতে ঘর ছেড়ে চলে যায়।
মিশরীয়দের বিশ্বাস অনুযায়ী, যে একবার এই এল-নাদ্দাহা-এ ডাক শোনে, তার মৃত্যু হবে ই। আর এই মৃত্যু থেকে কোন ভাবেই তার নিস্তারের পথ নেই। এল-নাদ্দাহা যে নিজের শিকারদের নীল নদের ডুবিয়ে মেরে ফেলে বলে শোনা যায়।
এদের দেখতে হয় অপরূপ সুন্দরী পরীর মতো। এরা বেশ লম্বা আর পরিপূর্ণ যৌবন, বুকে গড়নের আর্কষণীয় । এদের মাথায় থাকে লম্বা কালো চুল থাকে। এদের পরনে থাকে স্বচ্ছ সাদা পোশাক যা জন্য শরীর অংশ গুলো দেখা যায় বলে এরা আরো লোভনীয় হয়ে ওঠে।। এদের শরীরটাও খুব মসৃণ আর হালকা হয় যা যেকোনো পুরুষেরই লোভের কারণ হয়। এলিনা কে ঠিক একই রকম দেখতে। আমাদের জাহাজ হয়ে সুয়েজ খালের দিকে লোহিত সাগরে দিকে উঠছে তখনই এটা ছোট্ট নৌকায় করে এলিনা রা এলো আমাদের জাহাজে। সাতদিন থাকবে আমাদের জাহাজে শয্যা সঙ্গিনী হবে আমাদের। আমাকে নিয়ে জাহাজে ১৪ ক্রু । আমি বললাম আমাকে বাদ দিতে ওসব ব্যাপার থাকে।এল-নাদ্দাহা গল্প শোনালাম ক্যাপটেন সাহেবকে। ওরা খুব হাসলো বললো বিদেশি গল্প গুলো পড়া বন্ধ কর।
টানা নয়-দশ মাস জলের মধ্যে কাটানো আত্মীয় স্বজন হীন জাহাজীদের জীবনটা একটুখানি বিশৃঙ্খল এব্যপারে। নারী যৌবনের চাহিদা একটু বেশিই থাকে এদের। এদের চরিত্র হীন বলে গালি দিলেও এরা কিন্ত শুধুমাত্র নিজেদের দৈহিক চাহিদা মেটাতে মহিলা দের হায়ার করে । স্ত্রীদের জন্য প্রেম ভালোবাসা কম হয়না এদের। কোস্ট এরিয়া দিয়ে আসার সময় ছোট ছোট নৌকায় করে মদ আর মেয়ে এসে যায় কিছু ব্যবসায়ী মানুষ।
যাইহোক আমাদের মতো ছোট মানুষের নিষেধ মেনবে কেন ? সৌদি আরবে জল সীমা দিয়ে আমাদের জাহাজ এগাছে, লোহিত সাগর সাধারণত শান্ত থাকে। জানুয়ারি মাসে মাসে একটু আধটু ঝড় হয়। কিন্তু ভয়ঙ্কর নয়। কিন্তু আজ কোথায় থেকে ঝড় এলো জানি না। পিচি রোলিং প্রচন্ড আমি রান্না বান্না বন্ধ করে , ঘরে শোবার অনুমতি নিয়ে। ক্যাবিনে ঢুকে পড়লাম। একটা কাপ নুডল খেয়ে শুয়ে পরলাম।
ঘুম থেকে দেখি আবাক কান্ড লাইফ বোটে মধ্যে ভাসছি আমি, সাথে দিপেস, ও এস। ওকে জাগাতে শুনলাম, কাল রাতে জাহাজে ব্লাস্টট্রেঙ্কে জল ভরে যায়। সাবাই একটা ঘোরের মধ্যে ছিলো কেউ জল পাম্পের চেষ্টা ও করেনি। শেষ মেষ জাহাজে ডুবে যায়। এলিনাদের কিন্তু কিছু হয়নি। ওদের শুন্য ভাসতে দেখে নিক আমি জ্ঞান হারিয়েছি।
তবে এলিনারা যে এল-নাদ্দাহা ভুত নয় সে কথা বলতে বলেছিলো ওরা নাকি আমায়। ও নিক ইয়াসিন।
মানে পরে গেল একটা টুকরো স্মৃতি। পয়সার অভাবে মালোয়েশিয়া অনেক মেয়ে রা শরীর বেচেতে চলে আসে জাহাজে। ইয়াসিন ও এসেছিল আমাদের জাহাজে। ওর শরীরটা উপভোগ করেছিল সবাই মিলে। কিন্তু ওর মৃত্যু ঘটে ছিলো এই জাহাজে ই। জানি না ওর দেহের কি হয়েছিল , সাগর ফেলে দাওয়া হয়েছিল হয়তো। ছয় মাস পর ঠিক ওরা প্রতিশোধ নিলো।
লোহিত সাগর টা আমার খুব চেনা। শান্ত নীল রঙের জল, সোনালী রঙের পাহাড় হঠাৎ হঠাৎ করে মাথা তুলে আছে। সৌদি আরবে সুলতান এর , একটা আইল্যান্ড আছে। শেষ মেষ ডুবা পোর্টে অথেরিটি আমাদের রেসকিউ করলো। এই ঘটনা কেউ বিশ্বাস না করলেও আমার মা বাবা বিশ্বাস করলো। এবং আমায় আর জাহাজে চাকুরী করতে দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো। আমি ও আপত্তি করলাম না। কিন্তু বিশাল নীল সমুদ্র, সাদা অজানা পাখি, নাম না জানা পাখিদের নিশ্চিত মিস করবো আমি। এটাই দুঃখ রেয়ে গেলো। যদিও মিশরে ভুতেদের আমি নিজে দেখে ছিলাম বলে আমার মনে নেই।
মিশরের পেত্নী নাদ্দাহা
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
58
Views
1
Likes
0
Comments
3.0
Rating