একবারে চুরমুরে প্রেম

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
পাতার রং তখনই বদলায়, যখন তার ঝরে পড়ার সময় হয়। তেমনি প্রিয় মানুষও তখনই বদলায়,
যখন তার চলে যাওয়ার সময় হয়।
বছরের দেড়েক আগের কথা। তারিখ 3 মার্চ 2024 , আমার জীবনের একটা চুরমুরের মতো টক মিষ্টি স্মৃতি। তৃণা জন্মদিন, গ্রুপ স্টাডিজ নাম করে বিকালে বন্ধুরা, ওকে নিয়ে এলাম আমাদের বাড়িতে। তারপর ছাদের ওপর সারপ্রাইজ পার্টি। কেক কাটার পর রাই বললো" বুবাইকে একটা আজ রিটার্ন  গিফট দে। কাল থেকে সব কিছু ও করেছে তোর জন্য। আর এই পার্টি টা ও ওর মা বাবার টাকা য় করে নি।  বিয়ে বাড়িতে ক্যাটারিং সার্ভিস কাজ করে টাকা আয় করেছে। আজ তো ছেলেটাকে একটু প্রেফারেন্স দে। "
তৃণা বললো " আমি কি করতে বলেছি এতো কিছু আমার জন্য। ও করেছে আমি অংশগ্রহণ করলাম এটাই কি বড় কথা নয়। ঠিক আছে ওর জন্য কি করতে হবে বলল। "
আমি তরাং করে লাফিয়ে উঠে বললাম, " বাবুঘাট যাবো ঘটি গরম খেতে, তারপর ফুচকা খাবো ময়দানে, মল্লিক ঘাটে একটু বসে হাওড়া ব্রিজ দেখবো। কিন্তু সবটাই আমার বাইকে উড়ে যেতে হবে। "
ও বললো " তিন্নি শোন  , তোর একটা শাড়ি দিতে পারবি রে?? আর তোর দাদা কে বলল, ঘটি গরম, ফুচকা, হাওড়া ব্রিজ সব দেখাই হবে কিন্তু স্কুটারে করে। বাইকে নয়। "
আমি রাজি হয়ে গেলাম, শুধুমাত্র মনের উৎসাহ টা বর্ষাকালের ফুচকা মতো একটু মেনিয়ে গেলো। স্কুটার ও অনেক বার চড়েছে, মাঝখানে ওর পড়ার ব্যাগটা রেখে আমাদের মধ্যে একটা দুরত্ব রেখে দেয়। আজ তাই বাইকে রাইড করাবো ভেবেছিলাম। মাঝে মাঝে ব্রেক মেরে ওকে বাধ্য করবো ভেবেছিলাম আমাকে চিপকে ধরার জন্য। কিন্তু ও অনেক বুদ্ধিমতী, তাই স্কুটার যাবার শর্ত দিলো। ঠিক আছে ঝগড়া মিটিয়ে ঘুরতে যেতে রাজি হয়েছে এটাই অনেক।
বকবক না করে। ধিরে স্কুটার চালাছি। কিছু টা অভিমান হয়েছে সেটা বোঝানোর জন্য। হরিস মুখ্যাজী রোড ধরতে যাবো বললো না, ন্যাশনাল লাইব্রেরি, পাশের রাস্তা দিয়ে ভিক্টোরিয়া হয়ে চল। ন্যাশনাল লাইব্রেরি রাস্তা টা একটু নির্জন, ও চিপকে ধরলো। খুব ক্ষনস্থায়ী ও জরিয়ে ধরলো আমাকে। ফুচকা  মতো আমার মনে একটা টক মিষ্টি ঝাল অনুভূতি তৈরি হল। এর আগে আমাকে অনেক মেয়ে জরিয়ে ছিলো। তৃণা জরিয়ে ধরা তে আলাদা অনুভূতি, ও জরানোতে একটা অনিচ্ছা, লজ্জা, ছিলো। শরীরের ওম অনুভবের সুযোগ পাই নি। কিন্তু অদ্ভুত ভালো লাগা ছিলো। মল্লিক ঘাটে গিয়ে, হাওড়ার ব্রীজ না দেখে আমি ওকে দেখছিলাম। ও হঠাৎ বললো " এটা ভারতের সবচেয়ে বড় ফুল মার্কেট না। "
আমি বললাম " হুম"
ও বললো " তা তো আমার জন্য একটা গোলাপ কিনে আনলি না। আমি তো ভেবেছিলাম, তুই ফুল দিয়ে এখানে প্রোপজ করবি, আমাকে।।"
আমি ছুটে গিয়ে এক তোরা গোলাপ কিনে নিয়ে এসে ওকে প্রোপজ করলাম।
হঠাৎ কিসিং আওয়াজ, একজন ক্যামেরা ম্যান আমাদের ছবি গুলো ক্যামেরা বন্দী করলো। আমি কিছু বলার আগে ছেলেটা করমর্দন জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো " আমি সন্তু লাইফ স্টাইল ফটো গ্রাফার, আপনাদের ছবিটা কি একটা টিন এজারদের পত্রিকাতে ব্যবহার করতে পারি..."
আমি কিছু বলার আগেই ও বললো " অবশ্যই। আমি তো পেশাদার মডেল হতে চাই। তাই সুযোগ পেলে তো ভালোই হয়। "
তারপর ওদের অনেক কথা হলো। গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেলো। না তৃণা কোন বিখ্যাত মডেল হয় নি। তবে ওর ছবি আজকাল এখানে ওখানে বেড় হয়। ও সবার আগে আমাকে জানায়। কোথাও সুট হলে ওকে আমাকেই নিয়ে যেতে হয়। বন্ধু হিসেবে গর্বিত হওয়া উচিত। কিন্তু আমি কিছুতেই খুশি হতে পারি না।আপনি বলবেন আমি হয়তো জেলাস ফিল করি। কিন্তু না জানেন। আমাদের গল্প টা ফুচকা মতো ছিলো এখন ভাঙে যাচ্ছে বোধহয় সম্পর্ক টা। তবে আমি সম্পর্ক টা টিকিয়ে রাখবো ঠিক ফুচকা মতো নাই হলো, চুরমুরের মতো হয়ে বেচেঁ থাকবে সম্পর্ক টা। কারণ আমি ওকে হারতে ভীষণ ভাবে ভয় করি।

52 Views
1 Likes
0 Comments
5.0 Rating
Rate this: