-তারপর লিজেন ফিরে আসে তার রেল বগিতে এবং পেনড্রাইভটি তার ল্যাপটপে লাগায়
▸ ডেটার ভেতরের বিস্ময়
---
▸ গোপন অডিও ফাইল
ডেটার ভেতরে একটি ফোল্ডার থাকে যা খুলতে গেলে পাসওয়ার্ড চায়।
তবে ফোল্ডারের নাম: "Aayat_Final_Recordings"।
লিজেন চেষ্টা করে আয়াতের জন্মতারিখ, তার প্রথম গবেষণার নাম, এমনকি তার মায়ের নাম দিয়ে পাসওয়ার্ড ভাঙতে।
শেষমেশ, সে একটা শব্দ লিখে দেয়—
> “TruthSeeker”
ক্লিক।
ফোল্ডার খুলে যায়।
ভেতরে একটি মাত্র অডিও ফাইল—
“Aayat_Last_Message.mp3”
সে হেডফোন কানে দেয়।
প্লে চাপার পর এক মুহূর্ত নীরবতা, তারপর একটি নারীকণ্ঠ:
> "যদি তুমি এই বার্তাটি শুনতে পাও... তাহলে আমি হয়তো বেঁচে নেই।
অথবা, আমি আর আমি নেই।"
> "আমার গবেষণাগার এখন বন্দী। আমার সহকর্মীরা নীরব।
কেউ কেউ টাকা নিয়েছে, কেউ কেউ ভয় পেয়েছে।"
> "আমি একটি প্রযুক্তি বানিয়েছিলাম—যা মানুষের মস্তিষ্কের স্মৃতি ও অনুভূতি কপি করে অন্য দেহে সংরক্ষণ করতে পারে।
প্রথমে আমি এটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম... কিন্তু তারা চেয়েছিল সেনাবাহিনীতে।
তারা চেয়েছিল 'আজ্ঞাবহ আত্মা তৈরি' করতে।"
> "আমার কাজ এখন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমি জানি, তারা আমাকে থামাবে।
কিন্তু কেউ একজন যদি একদিন আমার কথা খুঁজে পায়, সে যেন সত্য প্রকাশ করে।
তুমি কি সেই মানুষ?"
লিজেনের চোখ ছলছল করে ওঠে।
সে আর পারছে না ধরে রাখতে।
হেডফোন খুলে দেয়ালের দিকে ঘুষি মারে।
বলে:
> “আমি হবো সেই মানুষ।
তোমার সত্য আমি সামনে আনব, আয়াত।
আমি জানি না তুমি কোথায়, কিন্তু আমি এখনও তোমার পাশে আছি।”
---
▸ প্রতিক্রিয়া: ছায়ার রোষ
একদিন পরে, রাত ২টা ১৬ মিনিটে, হঠাৎই একসাথে দেশের তিনটি বড় অনলাইন নিউজ পোর্টাল হ্যাক হয়ে যায়।
হোমপেজের সব খবর গায়েব হয়ে যায়।
সেখানে উঠে আসে শুধু একটি ভিডিও:
> একটি কেবল নীল রঙের ব্যাকগ্রাউন্ড।
সামনে আয়াতের ছবি।
আর নিচে লেখা:
"প্রতিবাদের শুরু, প্রমাণের অপেক্ষা। Project A-16 ছিল সত্য। ছায়া ফিরে এসেছে।"
দেশজুড়ে হৈচৈ পড়ে যায়।
মিডিয়া, প্রশাসন, এমনকি আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরাও অবাক।
রাতারাতি আবার ট্রেন্ডিং হয়:
> #AayatWasRight
#ProjectA16
#TheShadowReturns
---
▸ অন্যদিকে: ঝড়ের প্রস্তুতি
G-9 ফাউন্ডেশন এবার আর চুপ থাকতে পারে না।
ড. কামরুল পুরোপুরি সুস্থ না হলেও, একটি গোপন বৈঠকে বলেন:
> “এই ছায়াকে আর একদিনও ছেড়ে দিলে, সে শুধু আমাদের নয়—দেশের আন্তর্জাতিক মুখও কালিমালিপ্ত করবে।
তাকে থামাতে হবে। প্রয়োজনে... চিরতরে।”
Unit-Zero দল এবার একটা নতুন পরিকল্পনা নেয়—
লিজেনকে ফাঁদে ফেলার।
তারা আয়াতের পুরোনো গবেষণাগারের জায়গায় ভুয়া এক স্মারক অনুষ্ঠান আয়োজন করে, যাতে করে ছায়া সেখানে আসে—তথ্য সংগ্রহ করতে বা প্রতিবাদ জানাতে।
তবে তারা জানে না—ছায়া আর আগের মতো সাধারণ কেউ নয়।
---
▸ মৃত বিজ্ঞানীর স্মৃতি
তিন দিন পর।
গভীর রাতে ঢাকার অদূরে বসুন্ধরা সাইবার টেকনো পার্কে এক গোপন বৈঠক।
ড. কামরুল তখন ভিডিও কলে বলছেন:
> "আয়াতের মস্তিষ্ক স্ক্যানের শেষ সেশনে তার চেতনার একটি অংশ আলাদা করে রাখা হয়েছিল।
এখন সময় হয়েছে তা ব্যবহার করার।"
G-9 ফাউন্ডেশনের নতুন প্ল্যান:
ছায়াকে তার ভালোবাসার মধ্যেই বিভ্রান্ত করা।
তারা আয়াতের কৃত্রিম স্মৃতিগুলো দিয়ে একটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) তৈরি করবে—যেখানে ছায়া প্রবেশ করলে বুঝতে পারবে না, কী বাস্তব আর কী না।
এই ফাঁদ তারা তৈরি করে এক পুরনো ল্যাবের ভেতর।
সেটি ছিল আয়াতের নিজস্ব গবেষণাগার—যেখানে সে প্রথম Project A-16 এর পরীক্ষা করেছিল।
---
▸ ছায়া ফাঁদে পা রাখে
ছায়া, অর্থাৎ লিজেন, অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারে আয়াতের VR গবেষণাগার এখন বন্ধ, কিন্তু সেখানে "একটি রেকর্ড রাখা আছে" বলে গুজব ছড়িয়েছে।
এই খবরটা ছড়িয়ে দিয়েছে G-9 নিজেরাই—ফাঁদের মতো।
লিজেন একরকম নিশ্চিত—সেখানে কিছু আছে।
সে নিজেই বলে:
> "তুমি যেখানে শুরু করেছিলে, আমি সেখানে গিয়ে শেষ করব।"
রাত ১টা।
পুরনো ল্যাব ঘরে সে ঢোকে। ধুলোমাখা কাচ, ভাঙা স্ক্রিন, কিন্তু এক কোণে ঝকঝকে রাখা একটা VR চেম্বার।
একটা স্ক্রিনে লেখা:
“Welcome, Aayat.”
সে বুঝে যায়—এটা আয়াতেরই তৈরি জিনিস।
তবে কি আয়াত এটা নিজের জন্য রেখে গিয়েছিল?
এক মুহূর্ত থেমে, সে চেম্বারে প্রবেশ করে। চোখে হেডসেট, শরীর স্থির।
---
▸ VR জগতের ভিতরে
লিজেন চোখ খুলতেই দেখতে পায় একটা সবুজ ঘাসের মাঠ।
দূরে ছোট্ট একটা নদী, আর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে আয়াত—হুবহু জীবন্ত।
তার চুল হাওয়ায় উড়ছে, চোখে এক অদ্ভুত আলোর রেখা।
সে মৃদু হাসে।
> "তুমি এসেছো?"
"তুমি কি জানো, আমি কত অপেক্ষা করেছিলাম?"
লিজেন স্তব্ধ।
তার মনে হচ্ছে সব বাস্তব।
সে দৌড়ে যায়, আয়াতের কাছে এসে বলে:
> “তুমি… তুমি আয়াত, না তোমার স্মৃতি?”
“তুমি কি জানো, আমি কেমনভাবে তোমাকে খুঁজেছি?”
আয়াত বলে:
> "আমার কিছু অংশ এখনও বেঁচে আছে।
এই ভেতরের পৃথিবীতে, আমার শেষ স্মৃতি জমা ছিল।
কিন্তু তুমি এখানে বেশিক্ষণ থাকলে তোমার বাস্তবতা মুছে যাবে।"
> "তারা চায় তুমি ভুলে যাও—তোমার যুদ্ধ, তোমার অভিমান।
তারা চায় তুমি আমাকে দেখে আটকে পড়ো।"
---
▸ বাস্তব ফিরিয়ে আনা
হঠাৎ, চারপাশে দৃশ্য পাল্টাতে থাকে।
ঘাসভর্তি মাঠ রক্তমাখা ল্যাবে রূপ নেয়।
আয়াতের মুখ ফ্যাকাশে হয়।
তার গলা থেকে বের হয় একটা অস্পষ্ট চিৎকার:
> “তুমি যদি এখান থেকে না বের হও, তারা তোমার মন দখল করবে!
তুমি ছায়া! তুমি জাগো!!”
এক বিকট শব্দে চারপাশ কেঁপে ওঠে।
লিজেনের বুক ধড়ফড় করে ওঠে।
সে নিজের হাত দেখে—আঙুলগুলো সাদা হয়ে গেছে, যেন মুছে যাচ্ছে।
ঠিক সেই মুহূর্তে সে চিৎকার করে উঠে:
> “আমি বাস্তব।
আমি ছায়া।
আমি হারব না!”
চোখ খুলে দেখে—সে আবার সেই চেম্বারের ভেতর।
VR ভেঙে গেছে। স্ক্রিন ভেঙে পড়ে আছে। মাথায় রক্ত।
কিন্তু সে জানে—সে ফাঁদে পড়েনি। বরং সত্যের আরও কাছে চলে এসেছে।
---
▸ ফাঁদ ব্যর্থ, ছায়া জেগে ওঠে
দূরে বসে মনিটর দেখে G-9 এর এক সদস্য বলে:
> "সে সফলভাবে বের হয়ে এসেছে।
তার মানসিক প্রতিরোধ ক্ষমতা... এটা তো মানুষিক সীমা ছাড়িয়ে গেছে।"
ড. কামরুল বলেন:
> “তবে সে এখন জানে—আয়াতের স্মৃতি মুছে ফেলা যায়নি।
ছায়া এখন শুধু প্রতিশোধ নয়, স্মৃতি ফিরিয়ে আনার মিশনে আছে।”
---
(চলবে…)
ছায়া
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
40
Views
0
Likes
0
Comments
0.0
Rating