নীলা।।

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:

ভূমিকা

মানুষের জীবনে নাম শুধু একটি পরিচয় নয়, অনেক সময় তা হয়ে ওঠে জীবনের লক্ষ্য, অস্তিত্বের প্রতীক। "নীলা" নামটিও ঠিক তেমনই—যার গভীরে আছে নীল আকাশের অসীমতা, সমুদ্রের নীরব শক্তি এবং চোখে না-দেখা এক গভীর যন্ত্রণা। এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র ‘নীলা’—একজন সাধারণ মেয়ে, যার জীবন শুরু হয়েছিল ভালবাসা আর স্বপ্ন দিয়ে, কিন্তু এক ভুল সিদ্ধান্ত তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় সমাজের নির্মম বাস্তবতার মুখোমুখি।

নীলা ভালোবেসেছিল নিঃস্বার্থভাবে, বিশ্বাস করেছিল অন্ধভাবে। কিন্তু বিশ্বাসই একদিন হয়ে ওঠে তার পতনের কারণ। সমাজের চোখে সে হয়ে যায় দোষী, লাঞ্ছিত হয় তার আত্মসম্মান, প্রশ্নবিদ্ধ হয় তার চরিত্র। এমনকি নিজের পরিবার, নিজের কাছের মানুষরাও মুখ ফিরিয়ে নেয় তার থেকে। অথচ এই ভুল ছিল না নীলার একার—এ ছিল বিশ্বাসঘাতকতার ফাঁদ, যেখানে ভালোবাসা ছিল একতরফা, আর প্রতিশ্রুতি ছিল মিথ্যার জাল।

তবুও, এখানেই থেমে যায় না নীলার গল্প। কাঁদতে কাঁদতে, ভেঙে পড়তে পড়তে, একসময় সে দাঁড়িয়ে যায়। তার চোখে জ্বলতে থাকে এক নতুন নীলাভ আলো—প্রতিশোধের নয়, আত্মসম্মানের। সে বুঝতে শেখে, সমাজের চোখে দোষী হয়ে পড়লেই মানুষ দোষী হয় না। সত্যিকারের লড়াই তখনই শুরু হয়, যখন মানুষ নিজের পক্ষে দাঁড়াতে শেখে।

এই উপন্যাস সেই এক ভুল থেকে ফিরে দাঁড়ানো এক নারীর আত্মসম্মানের যুদ্ধের কাহিনি। এটি শুধু নীলার গল্প নয়, এটি সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা হাজারো ‘নীলা’র গল্প। যারা ভালোবেসে প্রতারিত হয়, সমাজের কটাক্ষে বিদ্ধ হয়, অথচ নিজেদের ভাঙনের মধ্য থেকেই খুঁজে পায় নতুন পথ। এই কাহিনির প্রতিটি পাতা পাঠককে প্রশ্ন করবে—কেন একজন নারীকে ভুলের দায়ে সমাজ এমন নির্মম করে তোলে? কেন তাকে লড়াই করতে হয় নিজের পরিচয়ের জন্য?

"নীলা" কেবল একটি উপন্যাস নয়, এটি একটি প্রতিবাদ, একটি উপলব্ধি এবং এক নারীর আত্মদৃঢ়তার অনুপম নিদর্শন। তার চোখে আমরা দেখতে পাব এক সাহসী প্রতিচ্ছবি, যে সমস্ত বাধা উপেক্ষা করে সমাজের চোখে চোখ রাখে এবং বলে—"আমি দোষী নই, আমি শুধু নারী।"


✍️কাজী মোসলেমিন।


77 Views
0 Likes
0 Comments
0.0 Rating
Rate this: