বৃষ্টির শব্দ যেন তার হৃদয়ে শব্দের বন্যা বইয়ে দেয়। জানালার পাশে বসে থাকা ছেলেটা কাগজের পাতায় শব্দ সাজাচ্ছিলো নিঃশব্দে। তার নাম ইকরাম হোসাইন। এক নিভৃতচারী তরুণ, শহরের ব্যস্ততার ভিড়ে হারিয়ে থাকা একজন নিঃশব্দ শব্দযোদ্ধা।
তার চোখে ছিলো বিষণ্নতা, আর হাতে কলম—যেটা ঠিক তখনই কথা বলে যখন মন ভেঙে চৌচির হয়।
ইকরামের জীবন খুবই সাধারণ। সকাল বেলা নামাজ শেষে দোয়া করে বসে যায় লেখার টেবিলে। ঘরে একটা বইয়ের তাক, যেখানে কবি জীবনানন্দ থেকে শুরু করে সালমান হক পর্যন্ত সব আধুনিক লেখকের বই সাজানো।
তবে তার ডায়েরির একেকটা পৃষ্ঠা যেন লুকিয়ে রেখেছে অগণিত পাঠকের কান্না, অজস্র ভালোবাসা, কিছু না বলা চিঠি।
এই শহরের আরেক প্রান্তে বসে ছিলো আরেকটি কলমের যুদ্ধবাজ—ফারিয়া রাইসা।
সে একদম ভিন্ন চরিত্র। অগ্নিস্ফুলিঙ্গ, প্রতিবাদী। তার লেখা মানেই বিদ্রোহ। ভালোবাসা, নারী স্বাধীনতা, ভাঙন—সব তার কলমে উঠে আসে দাবানলের মতো।
ফেসবুকে ‘ফারিয়া রাইসা’ নামে তার পেজে মাত্র এক মাসেই লাখ ফলোয়ার। লেখার শিরোনাম দেখেই মানুষ থেমে যায়।
“ভালোবাসা মানে মুক্তি নয়, আবদ্ধতার ঘ্রাণ।”
এই এক লাইনে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিলো। মেয়েরা বলেছিল, “এইতো! এটাই তো চাই!”
আর ছেলেরা বলেছিল, “ফেমিনিজম না ফাঁকা বুলি?”
অবাক করার মতো ব্যাপার হলো, ইকরাম জানেই না কে এই ফারিয়া। আর ফারিয়া? সে কেবল একবার ইকরামের একটা লেখা দেখে চোখ আটকে গিয়েছিলো, নাম মনে নেই, শুধু লাইনটা মনে ছিলো—
“আমি ভালোবাসিনি, আমি নিজেকে ভেঙে দিয়েছিলাম… যে মেরেছিলো, সে ছিলো তুমি।”
সময় চলছিলো। দুইজনেই লিখছিলো, কেউ কারও নাম জানে না, চেনে না। তবুও যেন অদৃশ্য টান।
এই শহরের জনপ্রিয় সাহিত্য ম্যাগাজিন “স্বপ্নরেখা” আয়োজন করলো একটা প্রতিযোগিতা—
“লেখক বনাম লেখিকা”
নিয়ম:
দুজন লেখক একে অপরের বিরুদ্ধে লড়বে কলমে।
বিষয় দেওয়া হবে প্রতিযোগিতার দিন।
বিজয়ী হবে যার লেখায় পাঠকের চোখ ভিজবে।
বিজয়ীর জন্য পুরস্কার: “স্বপ্নরেখা গোল্ডেন পেন”।
প্রথমে ফারিয়া হাসলো—“আবার এইসব ছেলেদের ইমোশন দেখিয়ে জিতে যাবে।”
আর ইকরাম ডায়েরিতে লিখলো—“ভালোবাসার জন্য নয়, কষ্টের জন্য লিখি আমি।”
শেষমেশ দুইজনের নাম চূড়ান্ত হলো—
ইকরাম হোসাইন — নিঃশব্দ ভালোবাসার কবি।
ফারিয়া রাইসা — আগুনে প্রতিবাদের লেখিকা।
দুই ভিন্ন পৃথিবীর কলম… মুখোমুখি হবে এক মঞ্চে।
চলবে...??
লেখকvsলেখিকা
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
74
Views
1
Likes
0
Comments
1.0
Rating