কি করে বলবো তোমায়

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
শহরের ব্যস্ত রাস্তায় প্রতিদিন দেখা হয় দু’জনের। কিন্তু কথা হয় না। চোখে চোখ পড়ে, কিছু বলতে গিয়ে থেমে যায়। আরীব আর নাইলা। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, কিন্তু আলাপ হয়নি। আরীব বরাবরই চুপচাপ, নিজের জগতে থাকা ছেলেটা। নাইলা একদম তার বিপরীত—প্রাণবন্ত, খোলামেলা, সবার সঙ্গে মিশে যেতে জানে।

তবে প্রতিদিনের দেখা যেন একটা অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। আরীব চুপিচুপি ওর খাতায় নাইলাকে নিয়ে কবিতা লেখে। সে জানে, ওর ভালো লাগা ভালোবাসায় রূপ নিয়েছে। কিন্তু সাহস করে বলতে পারে না—“কি করে বলবো তোমায়?”

একদিন ক্যাম্পাসে হঠাৎই নাইলার সঙ্গে ধাক্কা লাগে আরীবের। খাতা পড়ে যায়, ছড়িয়ে পড়ে পাতাগুলো। নাইলা একটুকরো কাগজ তুলে চোখ আটকে যায়—ওতে লেখা:

"তোমার হাসির ভেতরেই বুঝি হারিয়ে যেতে চাই,
তবু মুখ ফুটে বলি না, যদি তুমি বুঝে ফেলো…
কি করে বলবো তোমায়—তোমাকেই ভালোবাসি?"

নাইলা থমকে যায়। কিছু বলে না, শুধু চুপ করে পাতাটা ফেরত দেয়। আরীব তখনো বুঝতে পারে না, সে পড়েছে কিনা।

এরপর কয়েকদিন নাইলাকে দেখা যায় না। ক্লাসেও আসে না। আরীব অস্থির হয়ে পড়ে। কেউ জানে না নাইলা কোথায়। হঠাৎ একদিন লাইব্রেরির সামনে নাইলা এসে দাঁড়ায়। হাতে সেই পাতাটা।

নিঃশব্দে এগিয়ে এসে বলে,
– “লিখেছো সুন্দর… কিন্তু পড়তে কষ্ট হয়েছে।”
আরীব গম্ভীর মুখে জিজ্ঞেস করে,
– “কেন?”
নাইলা মুচকি হেসে বলে,
– “কারণ… আমি অপেক্ষা করছিলাম কখন তুমি নিজেই বলবে…”

আরীব কাঁপা গলায় ফিসফিসিয়ে বলে,
– “কি করে বলবো তোমায়…? ভয় হয়।”
নাইলা উত্তর দেয়,
– “তাহলে আমি বলি—আমি জানি। আমিও।”

হঠাৎ শহরের কোলাহলের মাঝখানে এক নিরব মুহূর্ত—চোখের দৃষ্টিতে সব বলা হয়ে যায়। কিছু না বলেও সব বলা হয়ে যায়।

শেষ দৃশ্যে দেখা যায় দু’জন পাশাপাশি হাঁটছে, নীরবে। পেছনে বাজছে সেই কণ্ঠস্বর:

"ভালোবাসা বলা সহজ নয় সব সময়,
কখনো কখনো চুপ থাকাটাই অনেক বড় স্বীকারোক্তি…"
60 Views
7 Likes
2 Comments
0.0 Rating
Rate this: