🕯️ ভুতের গল্প: সাদা শাড়ির মেয়ে
স্থান: গাইবান্ধার জেলার "সাদুল্যাপুর উপজেলার" ভাতগ্ৰাম নামের একটি ছোট গ্রাম
সময়: বাংলা ১৩৯৯ সালের অমাবস্যা রাত
---
১. আগমণ
সাংবাদিক রাশেদ আহমেদ শহরের নামী একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের রিপোর্টার। তার কাজ হচ্ছে গ্রামীণ লোককথা ও রহস্যময় কাহিনি খুঁজে বের করে সেটাকে বাস্তবতা ও যুক্তির আলোকে বিশ্লেষণ করা। "ভূত নেই" — এই বিশ্বাসে অটল রাশেদ একদিন শুনে ফেলে পান্থপাড়া গ্রামের একটি কুখ্যাত জমির গল্প।
গল্পটা এরকম—
“প্রায় ৩০ বছর আগে, শিউলি নামের এক মেয়ে ধানক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে গ্রাম প্রধানের ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়। সে অপমান সহ্য করতে না পেরে সেদিন রাতেই তালগাছের নিচে গিয়ে বিষ খেয়ে মরেছিল। তারপর থেকেই লোকেরা বলে, সে আর শান্তি পায়নি। প্রতি অমাবস্যায়, সেই জমিতে তার আত্মা ঘোরে—সাদা শাড়ি পড়ে, চুল খুলে, খালি পায়ে...”
রাশেদ প্রথমে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল—"গ্রাম্য কুসংস্কার!" কিন্তু তার ভেতরের অনুসন্ধানী মন বলছিল, “যাও... খুঁজে দেখো!”
এবং ঠিক সেইজন্যই, একটি ক্যামেরা, টর্চ, পাওয়ার ব্যাঙ্ক আর গলা পর্যন্ত উঠানো জ্যাকেট পরে, রাশেদ চলে যায় পান্থপাড়া গ্রামে।
---
২. প্রথম রাত: তালগাছের ছায়া
গ্রামের শেষ প্রান্তে সেই ‘অভিশপ্ত জমি’। পাশে তিনটা তালগাছ দাঁড়িয়ে আছে কঙ্কালের মতো। জমিটা একেবারে নীরব। রাতে কেবল শোনা যায় পোকা-মাকড়ের আওয়াজ আর দূরে কুকুরের হালকা কান্নার মতো ডাক।
রাশেদ ক্যামেরা অন করে—
“এটা হচ্ছে সেই জমি, যেখানে নাকি ভূত দেখা যায়... আমি এখন এখানে একা আছি, রাত ১১টা বেজে ৪৭ মিনিট।”
প্রথম ঘণ্টায় কিছুই হয়নি। হালকা ঠাণ্ডা হাওয়া বইছিল। রাশেদ চা খেতে বসেছিল। ঠিক তখন, তার ক্যামেরার স্ক্রিনে কিছু একটা নড়ছিল। একজন মহিলা।
সাদা শাড়ি।
পেছন থেকে দেখা যাচ্ছে—চুল এলোমেলো, হাত নড়ছে না, মাথা নিচু।
“কে... কে আপনি?” — রাশেদ চিৎকার করে বলে, কিন্তু সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।
রাশেদ এক পা এগিয়ে যায়। ক্যামেরা তাক করে।
হঠাৎ... মেয়েটি মাথা ঘোরায়।
চোখদুটো রক্তবর্ণ! মুখ থেতলে যাওয়া, আর ঠোঁটে সেই ভয়াল হাসি।
---
৩. ভয়ঙ্কর সত্য
রাশেদ দৌড় দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তার পা যেন পাথর হয়ে গেল। শরীর কাপছে, গলা দিয়ে শব্দ বের হচ্ছে না।
মেয়েটি ধীরে ধীরে তার দিকে এগোতে থাকে। তার হাঁটার কোনো শব্দ নেই, পা মাটিতে পড়ছে না—ভেসে আসছে যেন।
একসময় অন্ধকার নেমে আসে রাশেদের ক্যামেরায়।
আর দেখা যায় শুধুই একটা কথা, স্ক্রিনে খোদাই করা—
"সে ফিরে আসবে… প্রতিশোধ নিতে"
---
৪. পরদিন সকাল
পান্থপাড়া গ্রামের লোকজন রাশেদকে খুঁজে পায়নি।
কিন্তু তালগাছের নিচে তার ব্যাগ আর ক্যামেরা পড়ে ছিল।
ক্যামেরার ভেতরের ভিডিওটি সেই রাতের শেষ মুহূর্ত অবধি রেকর্ড করা ছিল।
শেষ দৃশ্য?
সাদা শাড়ি পরা মেয়েটি ক্যামেরার সামনে এসে ঠোঁট নাড়ছে। কিন্তু কোনো শব্দ নেই।
গ্রামের এক বৃদ্ধা ফিসফিসিয়ে বলেছিল,
“শিউলি এখন শুধু জমিতে না… যারাই তার গল্প নিয়ে হাসাহাসি করে, তাদের খুঁজে নেয় সে।”
---
৫. আজও সে আছে
সেই জমিতে আজও কেউ চাষ করে না।
মাঠের চারপাশে কাঁটা তার বসানো হয়েছে।
রাত নামলে গ্রামের কুকুরগুলো হাওয়ায় চিৎকার করে উঠে।
রাশেদের ঘটনা নিয়ে শহরে একটা তথ্যচিত্রও বানানো হয়েছিল—“সাদা শাড়ির অভিশাপ” নামে।
কিন্তু তার পরিচালকও একদিন নিখোঁজ হয়ে যায়
শেষ কথা:
কিছু সত্য গল্প কখনও হাস্যকর নয়।
বিশ্বাস করো বা না করো—
ভুতের ভয়ানক গল্প
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
95
Views
0
Likes
0
Comments
0.0
Rating