পরিণীতাসক্তি

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
- তুমি কি জানো না অঙ্কিতা আগে যা হতো এখন আর সেসব হয় না? এখন আর কিছু আগের মতো নেই। (অবন্তী রওশন কড়া গলায়)

- আমি ঘরে গেলাম, ক্ষিদে নেই। (আরিফ রওশন এই বলে চেয়ার থেকে উঠে চলে গেলেন)


তারপর অবন্তী রওশনও উঠে চলে গেলেন। অঙ্কিতা রওশন মাথা নিচু করে বসে আছেন। দীপ্ত তার দিকে না তাকিয়েই বললো-

- মা, তুমি কেন এই কথাটা উঠালে? (দীপ্ত)

- আমি বুঝতে পারিনি। (অঙ্কিতা রওশন)

- আন্টি, তুমি কিছু মনে করো না। জানোই তো মম আর ড্যাড এই বিষয়ে একটু দুর্বল। (মাহির)

- কিছু মনে কেন করবো, বাবা.... আমারই বোঝা উচিত ছিলো, পনেরো বছর আগের অতীতটা এত বেদনাদায়ক ছিলো যে সেটার জন্য সবকিছু পাল্টে গিয়েছিল। আর আজও সেটা কেউ ভুলেনি। (দীপ্তর মা এই বলে চোখের কোণটা নিজের বুড়ো আঙুল দিয়ে মুছে তিনিও উঠে চলে যান)

- (দীর্ঘশ্বাস ফেলে) এখন কি তুইও চলে যাবি? (দীপ্ত)

- না। (মাহির)

- আজ এত বছর পর অতীতটা সামনে না এলেই পারতো। (দীপ্ত)


মাহির প্রসঙ্গ বদলানোর জন্য বললো-

- আখির খোঁজ নিয়েছিস? (মাহির)

- হুম, দিনা ফোন করেছিলো, বললো এখন ভালো আছে। (দীপ্ত)

- ওহ। (মাহির)

- আজকে তুই আখির একটু বেশি খেয়াল রাখছিলিস না? (দীপ্ত)


মাহির ভ্রূ-কূচকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকালো দীপ্তর দিকে। দীপ্ত তা দেখে আমতা আমতা করে বললো-

- না... মানে যেভাবে সবার ওপর রাগারাগি করছিলিস... তারপর আখিকে কোলে করে কেবিনে নিয়ে গেলি, ডাক্তার দেখালি.... (দীপ্ত)


দীপ্ত আর কিছু বলার আগেই মাহিরের অত্যাধিক ভারী কণ্ঠস্বর শোনা গেলো-

- মেয়েটা এত সুন্দর করে প্রেজেন্টেশন দিলো, তাই কৃতজ্ঞতার জন্য করেছি। (মাহির)

- সে যাই হোক, কিন্তু আন্টি আর মা ছাড়া এই সাতাশ বছরে স্বইচ্ছায় তোর প্রথম স্পর্শ করা নারী কিন্তু আখি। (দীপ্ত)


মাহিরের খাওয়া এক মূহুর্তের জন্য থেমে গেলো। কিন্তু নিজের গাম্ভীর্য বজায় রেখে সে বললো।

- স্বইচ্ছায় নয়, অজ্ঞান হয়ে আমার ওপর পড়ে গিয়েছিলো বলে ওকে ধরেছি৷ আজেবাজে চিন্তা করা বন্ধ কর। (মাহির)


মাহিরের শান্ত ধমকে দীপ্তর মুখ বন্ধ হয়ে গেলো। কিন্তু আবার কিছুক্ষণ পর সে বললো-

- একটা কথা বলি ভাইয়া, তোর কিন্তু আখির ওপর এত চাপ দেয়া উচিত হয়নি। হ্যাঁ, মানছি যে ও ভুল করেছে। কিন্তু তার জন্য ওর এ কদিনে যা punishment হয়েছে সেটা ওর জন্য enough. কৈ আমি তো এখন আর দিনাকে দিয়ে কোনো extra কাজ করাই না। তাহলে তুই কেন এখনো সেটা continue করছিস? আমার মনে হয় তোর আখির ওপর অত্যাচারটা বন্ধ করা উচিত। (দীপ্ত)

মাহির কিছু বললো না। সে নিজের খাওয়া অব্যহত রাখলো যেন শোনেইনি দীপ্ত কি বলেছে।


৭০.
- একি! তুই আজ অফিসে এসেছিস কেনো? (দিনা)

- তুই না এমন ভাব করছিস যেন আমার হার্টএটাক হয়েছে। আমি একেবারে প্যারালাইসড হয়ে গেয়েছি, আমাকে এখন সব কিছু ছেড়ে বিছানায় পড়ে থাকতে হবে। (আখি বিরক্তি নিয়ে)

- একটা দিন ছুটি নিলে কি এমন হতো? (দিনা)

- দেখ, অফিসে তো চলে এসেছি, এখন আর এসব বলে লাভ আছে? (আখি)

- এখন কি করবি? (দিনা)

- কালকে তো ডিল সাইন হলো। স্যার বলেছে এই মাসটা পুরোটাই যেন আমাদের কোম্পানির সাথে অন্য কোম্পানির ডিল সাইন হতে থাকে। তাই অন্য কোম্পানি দেখতে হবে। দেখি স্যারের কেবিনে যাই, স্যারের সাথে কথা বলি, আর তারপর হয়তো আবার একগাদা ফাইল হাতে ধরে আসবো। (আখি)

- এবার কিন্তু অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে আখি। কালকে তুই একবার অসুস্থ হলি, এরপর যদি তোর আবার কিছু হয়, তাহলে কিম্তু আমি বসে থাকবো না। স্যারের against এ step নেবো। (দিনা চোখ রাঙিয়ে)

- আর কিছু হবে না। চিন্তা করিস না। (আখি)


আখি মাহিরের কেবিনের দিকে পা বাড়ালো। দিনা একটা ছোট্ট শ্বাস ফেলে নিজের রাগটা নিয়ন্ত্রণ করে চলে গেল।

৭১.
- May I come in, sir? (আখি)

- Yes. (মাহির)


আখি কেবিনের ভেতরে গেলো।

- তোমাকে তো আমি একদিন ছুটি নিতে বলেছিলাম। আজকে এসেছো কেনো? (মাহির)

- তার প্রয়োজন নেই স্যার। আমি ঠিক আছি। গতকাল তো TRH কোম্পানির সাথে আমাদের ডিল সাইন করা হয়ে গেলো, আমি কি আবার ডিলের জন্য নতুন কোনো কোম্পানির খোঁজখবর নেবো? (আখি)

- এখনই তার প্রয়োজন নেই। এক সপ্তাহ যাক, তারপর অন্য ডিল নিয়ে ভাববো। (মাহির)

- ওকে স্যার। (আখি)

- এখন আপাতত এই ফাইলটা গিয়ে কমপ্লিট করো। (মাহির একটি ফাইল এগিয়ে দিয়ে)

- একটা মাত্র ফাইল!! (আখি)

- দশটা চাচ্ছো, ঠিকাছে, তুমি চাইলে দশটা ফাইল..... (মাহির)


মাহিরের কথা শেষ না হতেই আখি ফাইলটা চট করে হাতে নিয়ে বললো-

- না, না, স্যার, একটাই ঠিক আছে। (আখি)


আখি যতদ্রুত সম্ভব মাহিরের কেবিন থেকে বেরিয়ে এলো। হুট করে মাহির যদি মতবদল করে নেয়, আর একগাদা কাজ দিয়ে দেয়... আখি বেরিয়ে গেলে মাহির আখির বাচ্চামো দেখে ফিক করে হেসে ফেললো। হাসির শব্দে আখি জানালা দিয়ে একপলক কেবিনের ভেতরে তাকায়। গম্ভীর মুখেও হাসি এতটা সুন্দর লাগে বুঝি! মুগ্ধ হতে বাধ্য হয় সে। কিন্তু বেশিক্ষণ সেখানে থাকতে পারে না। কারো পদশব্দ শোনায় দ্রুত সেখান থেকে প্রস্থান করলো৷


৭২.
- আখি, তুমি এখানে?


আখি রাস্তায় কারো জন্য অপেক্ষা করছিলো। এমন সময় নিজের নাম শুনে সে পেছনে তাকালে নিলিমকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পায়।

- আরে তুমি, তুমি এখানে কি করছো? (আখি)

- তুমি একটু ভালো করে মনে কর এটা কোথায়। (নিলিম)

- এটা তো আগারওয়াল ইন্ডাস্ট্রির...... (কিছু মনে করে) আরে আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম এটা তো তোমারই অফিসের সামনে। (আখি)

- তো আমার অফিসের সামনে আমিই থাকবো না তো কি অন্য কেউ থাকবে? (নিলিম)

- হ্যাঁ, আসলে আমার না মনে ছিলো না। সরি। (আখি)

- আচ্ছা বাদ দাও। এখন বলো এখানে তুমি কেন এসেছ? (নিলিম)

- আজকে তো অফিস ছুটি, তাই ভাবলাম আমি আর দিনা মিলে একটু ঘুরে আসি। দিনার এখানে আসার কথা তাই আমি ওর জন্য এখানে ওয়েট করছিলাম। (আখি)

- ওহ, আচ্ছা। (নিলিম)


তখনই আখির ফোনে দিনার কল আসে। আর সে ফোন ধরতে সাইডে চলে যায়।

- হ্যাঁ, বল, কোথায় তুই? (আখি)

- সরি রে আখি, আমি না আজকে যেতে পারবো না। হঠাৎ করে বাবা অসুস্থ হয়ে গেছে। (দিনা)

- সে কি, আবার কি হলো আঙ্কেলের? (আখি)

- বাবার বুকটা আবার ব্যথা করছে। তাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। (দিনা)

- আচ্ছা, তোকে আসতে হবে না। তুই আঙ্কেলের খেয়াল রাখ। (আখি)

-ঠিকাছে। (দিনা)

- দিনা, আমি আসবো? (আখি)

- না, দরকার নেই। আমি যেতে পারবো। (দিনা)

- আচ্ছা, কোনো প্রয়োজন হলে জানাস। আর রাতে ফোন করে আংকেলের খবর নেব। ফোনটা ধরবি কিন্তু। আর না ধরতে পারলে মেসেজ করে দিস। (আখি)

- আচ্ছা। রাখছি। (দিনা)

- হুম। (আখি)


ফোন কেটে আবার আখি আগের জায়গায় গেল। সে গিয়ে দেখলো নিলিম এখনো সেখানে দাঁড়িয়ে আছে।

- কী বললো তোমার বান্ধবী? (নিলিম)

- (শুকনো মুখে) ও আসতে পারবে না বলেছে। (আখি)

- তাহলে কি যাওয়া ক্যান্সেল? (নিলিম)

- হু। (আখি)

- মন খারাপ হয়ে গেল বুঝি? (নিলিম)

- তা তো একটু হয়েছেই। বেরোনোর সময় কত প্ল্যান করলাম, কিছুই হবে না। (আখি একটা ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেললো)

- আচ্ছা এক কাজ কর, তুমি আমার অফিসে এসো। (নিলিম)

- না, না, তার দরকার নেই। আমি এখন বাড়ি চলে যাবো। (আখি)

- ঘুরতে যখন গেলে না, তখন আমার সাথেই কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে যাও। (নিলিম)

- থাক না, অযথা তুমি বিরক্ত হবে আর সময় নষ্ট হবে। (আখি)

- তুমি থাকলে আমার বিরক্ত লাগে না বরং ভালো লাগে আখি। এমনিতেও আমাদের তেমন দেখা হয় না। আর তোমার সাথে বিজনেস নিয়েও কিছু কথা ছিলো। (নিলিম)

- আচ্ছা, এত করে যখন বলছো তখন তো যাওয়াই যায়। (আখি)

- ঠিকাছে, এসো। (নিলিম)


আখি নিলিমের সাথে নিলিমের কেবিনে গেলো। কেবিনটি খুব পরিপাটি করে সাজানো। নিলিম নিজের কাচের টেবিলে বসে আখিকে তার সামনে বসতে বললো। আখিও তাই করলো। সে নিলিমের চেয়ারের বিপরীত পাশের চেয়ারটায় বসলো।

- তো বলো, কি খবর তোমার? (নিলিম)

- এইতো আছি, তোমার খবর বলো। (আখি)

- আমার খবর আর কি শুনবে, সারাদিন কাজে ডুবে থাকতে হয়। তুমিও মনে হয় কাজ নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকো। (নিলিম)

- হ্যাঁ, ইদানিং কাজের চাপটা এত বেড়েছে কি বলবো। আর আমার বসও হয়েছে আরেকটা, আমাকে দম ফেলার সময়টা পর্যন্ত দেয় না। (আখি)

- তাই নাকি? ওনার একটুও মায়া হয় না? (নিলিম)

- মনে তো হয় না। (আখি)

- বলো কি, আমি হলে তো তোমার চোখের দিকে তাকালেই গলে যেতাম। (নিলিম)

- কেন? (আখি ভ্রূ-কূচকে)

- You know আখি, তোমার চোখে একটা মায়া আছে যেটা সবাইকে আকৃষ্ট করতে পারে। শুধু তোমার চোখই নয়, তোমার হাসি, তোমার ঠোঁট, তোমার চুল, সবকিছুতেই মায়া আছে। (নিলিম)

- তাই নাকি? আমি তো নিজেও জানতাম না আমি এত মায়াবী। (আখি)

- (স্লান হেসে) একটা জিনিস কি জানো, নিজের সৌন্দর্য কখনো নিজের কাছে ধরা পড়ে না। তুমি যে কতটা সুন্দর তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। (নিলিম)

- থাক, আমার আর প্রশংসা করতে হবে না। (আখি)

- সেই, যত প্রশংসা করবো, সেটা তোমার জন্য কম হবে। (নিলিম)

- নিলিম, এবার কিন্তু একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। টপিক চেঞ্জ করো। (আখি)

- আচ্ছা, আচ্ছা, বলো কি খাবে, চা নাকি কফি? (নিলিম)

- কফি। (আখি)


নিলিম কফি অর্ডার দিয়ে আবার বলা শুরু করলো।

- আমি তোমাকে বলেছিলাম অফিসিয়াল কিছু কাজের জন্য তোমার সাথে কথা বলবো। (নিলিম)

- হ্যাঁ, বলো কি বলবে। (আখি)

- শুনলাম, তোমরা TRH company র সাথে ডিল সাইন করেছো। (নিলিম)

- হ্যাঁ, কিছুদিন আগেই হয়েছিলো। (আখি)

- Congratulation. (নিলিম)

- Thanks. (আখি)

- তোমরা কি ডিলের জন্য অন্য কোনো কোম্পানি খুঁজছো? (নিলিম)

- হ্যাঁ, এক সপ্তাহ পর আরও একটা ডিল করার plan আছে। কেনো, মানে তুমি আমায় এসব বলছো কেনো? (আখি)

- আসলে, আমরা তোমাদের কোম্পানির সাথে একমাসের জন্য ডিল করতে চাচ্ছি। (নিলিম)

- Wow! It's a great offer. (আখি)

- তোমরা এখন যদি রাজি থাকো, তাহলে আমরা এগোবো। (নিলিম)

- দেখো এখানে আমি তো কিছু করতে পারবো না। CEO স্যার এর permission লাগবে। তবে আমি sir এর সাথে কথা বলবো। (আখি)

- তাহলে এক কাজ করো, (একটি ফাইল এগিয়ে দিয়ে) এই ফাইলটা নিয়ে যাও। যদি CEO রাজি থাকে, তাহলে এখানে ওর সাইন করিয়ে নিও। আমি আলাদা করে কোনো মিটিং করতে চাচ্ছি না। মিটিং করলে শুধু সময় নষ্ট হবে। আমি তোমাদের CEO এর সাথে direct অফিসে দেখা করবো।(নিলিম)

- Okey. (ফাইলটা নিয়ে)

- আর হ্যাঁ, ওকে আমার নাম কিংবা পরিচয় কিছু কিন্তু বলবে না। শুধু বলবে Agarwal Industries এর CEO. (নিলিম)

- কেনো? (আখি)

- ঐ যে বললাম, আমি ওর সাথে সোজাসুজি অফিসে দেখা করবো। আসলে আমি ও মাহির একে অপরকে চিনি। আমি ওকে সারপ্রাইজ দিতে চাই। (নিলিম)

- ওহ। ঠিকাছে ওনাকে বলবো না। (আখি)



৭৩.
- ইরা, দেখলি, ঐদিন স্যার আখিকে কীভাবে কোলে তুলে নিয়ে গেলো? (নিশি)

- আখি ওনার গার্লফ্রেন্ড, উনি আখিকে কোলে তুলবে না তো কে তুলবে? (ইরা)

- তাই বলে অফিসের মধ্যে? ছি! ছি! ওরা প্রেম করবে বাইরে করুক, অফিসের মধ্যে এসব কি? (নিশি)

- অফিসে থাকতে গেলে এসব দেখেই থাকতে হবে। কিছু করার নেই। তারওপর আখির যে দেমাগ, দেমাগে মাটিতে পা পড়ে না। CEO-র গার্লফ্রেন্ড হয়ে একেবারে সবার ওপর রাজ করতে শুরু করেছে। (ইরা)

- যা বলছিস। CEO sir এর ও রুচি দেখ। কোথায় উনি কত handsome, ওনার personality, ওনার attitude, উনি এত বড় একটা কোম্পানির CEO, উনি কিনা আখির মতো একটা qualitiless third class মেয়েকে পছন্দ করেছেন। তুই-ই বল আখি কি ওনার লেভেলের? (নিশি)

- What's going on here? (আখি)

আচমকা আখিকে দেখে নিশি ও ইরা হকচকিয়ে গেলো। তারা দ্রুত নিজেদের সামলে বললো-

- এইতো ম্যাম, একটা প্রজেক্ট নিয়ে কথা বলছিলাম।  (নিশি)

- Do you think I'm an idiot? টুপি পড়াতে হলে অন্য কাউকে গিয়ে পড়াও। তোমাদের সামনে কোনো খাতা নেই, কোনো কলম নেই, আর তোমরা প্রজেক্ট নিয়ে কথা বলছো। এটাও আমাকে বিশ্বাস করতে হবে? (আখি)


ইরা ও নিশি মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো।

- শোন, শেষবারের মতো বলছি, শুধরে যাও। নাহলে ভবিষ্যতে তোমাদের জন্য খুব খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। (আখি এই বলে চলে গেল)


- দেখলি, দেমাগ দেখলি! (ইরা)

- হুম, ওর একটা ব্যবস্থা আমি আজকেই করছি। (নিশি)

- কী করবি? (ইরা)

- আজকে স্যারের একটা মিটিং আছে না? (নিশি)

- হুম। আধঘন্টা পর। (ইরা)

- সেটাই আখির জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। (নিশি বাঁকা হেসে)

৭৪.
আখি কেবিনে বসে মিটিংয়ের জন্য ফাইল রেডি করছিলো। হঠাৎ মাহিরের ডাক পড়ায় সে মাহিরের কেবিনে চলে গেলে নিশি তার কেবিনে ঢুকে পড়ে। সে একবার সতর্কমূলকভাবে চারদিকে চোখ বুলিয়ে নেয়। তারপর সে আখির টেবিলের দিকে এগিয়ে যায়। আখির টেবিলে কিছু কাগজপত্র রাখা ছিলো, আর ছিলো এককাপ কফি। নিশি বাঁকা হেসে কফিকাপটি তুলে নেয়। আর তারপর কাগজপত্রগুলোর ওপর কিছুটা কফি ফেলে দেয়। 

- ইস্, আজকে কি অপমানটাই না করবে স্যার তোমায়। (নিশি)


চলবে........................


86 Views
2 Likes
2 Comments
0.0 Rating
Rate this: