রাশেদ ছিলো এক সাধারণ গ্রামবাংলার ছেলে। ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিলো বড় কিছু করার, নিজের পরিবারকে ভালোভাবে বাঁচানোর। কিন্তু ভাগ্য চ্যালেঞ্জ দেয় বারবার। পড়াশোনা করতে চাইলেও সংসারের অভাব বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় স্কুলের বই কিনতে না পারায় সে পুড়ে যাওয়া, ছেঁড়া বই দিয়েই পড়ত। তার বন্ধুদের কাছে সে প্রায়ই পেছনে পড়ে থাকতো, কিন্তু হাল ছাড়েনি কখনো।
একদিন গ্রামের মাঠে বসে রাশেদ ভাবল, ‘আমি কি এভাবেই থেমে যাব? আমার স্বপ্ন কোথায় হারিয়ে গেল?’ কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে তার দাদু এসে বললেন, “বাবা, জীবনের পথে অনেক বাধা আসবে। কিন্তু সেই বাধাই তো আমাদের শক্তি দেয়। তুমি যদি চেষ্টা করো আর না হারো, তবে একদিন আলো তোমার পথ দেখাবে।”
এই কথাগুলো রাশেদের মনে নতুন আগুন জ্বালালো। সে আরও কঠোর পরিশ্রম শুরু করল। স্কুলের পর বাড়ির কাজ, তারপর রাতে বাতাসের নিচে টেবিল জ্বালিয়ে পড়াশোনা। তার চোখে স্বপ্ন জ্বলছিলো।
সময় গড়ানোর সাথে সাথে রাশেদের মেধা এবং পরিশ্রম তাকে গ্রামের বাইরে শহরের বড়ো স্কুলে নিয়ে গেলো। সেখানে সে নতুন নতুন বন্ধু পেলো, নতুন সুযোগ পেলো। কিন্তু মন সবসময় তার গ্রাম, তার দাদুর কথা মনে করিয়ে দিতো—“চেষ্টা করো আর হাল ছাড়ো না।”
বছর কয়েক পর রাশেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো, আর তার লেখাপড়ার মাধ্যমে গ্রামবাসীর জন্য কাজ করার স্বপ্নও পূরণ করতে লাগলো। সে সবসময় বলতো, “আমার জীবন একটা বেদনা নয়, বরং একটা গল্প যা হার না মানার গল্প।”
একদিন সে নিজের গ্রামের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলল, “তোমরা যে কোনো কঠিন সময় পার করতে পারো, শুধু বিশ্বাস রাখতে হবে নিজের প্রতি। ভয় পেলে কেউ বড় হতে পারে না। পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তি দিয়ে পৃথিবী বদলানো সম্ভব।”
সবাই দাঁড়িয়ে তার হাততালি দিলো। রাশেদের চোখে তখন ছিলো এক নতুন আলোর ঝলক, যা নিঃসন্দেহে সবাইকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলো।
আলোকিত পথ
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
57
Views
7
Likes
0
Comments
0.0
Rating