পরিণীতাসক্তি

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
১২.
সকাল এগারোটা নাগাদ আখি ও দিনা ফ্যাক্টরির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। মিনিট কুড়ি পর তারা সেখানে পৌঁছে যায়। গাড়ি থেকে নেমে গেটে ঢুকতে ঢুকতে দিনা আখিকে বলে-

- আখি, তুই কিন্তু একটু attitude নিবি। সবার সাথে আবার হেসে হেসে কথা বলতে যাস না। মনে রাখবি, তুই কিন্তু এখন কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। (দিনা)

- আমি জানি সেটা। তোকে বলতে হবে না। (আখি)

আখি পকেট থেকে সানগ্লাসটি বের করে নিজের চোখে পড়ে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এমন সময় সেখানে এক ভদ্রলোক আসেন এবং আখিকে বলেন-

- Welcome madam. I'm Sandip Sarkar, এখানকার সবকিছু আমি দেখাশোনা করি। (সন্দীপ)

- Oh, I'm Akhi Yasmin, the Managing Director of Raoson Enterprise and she is my assistant, Dina. (আখি)

-ওহ, তাহলে ভেতরে আসুন ম্যাম৷ (সন্দীপ)

- Sure. (আখি)


আখি যেতে যেতে বললো-

- Mr Sarkar, ম্যানেজার সাহেব আশা করি আপনাকে বলেছেন আমি এখানে কেন এসেছি। (আখি)

- Yes madam. (সন্দীপ)

- Well, আমি শুধু মশলা প্রসেসিং আর মশলা প্যাকেজিংটা দেখবো৷ (আখি)

- Okey madam. আসুন। (সন্দীপ)


সন্দীপ আখি ও দিনাকে প্রসেসিং এর জায়গায় নিয়ে গেলো। আখি ও দিনা সবকিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো। তারা দেখলো আখির ধারণাই সঠিক। মশলা যথেষ্ট মানসম্পন্ন ও প্রসেসিং এ কোনো ভুল নেই। কিন্তু প্যাকেজিংয়ে একটু সমস্যা আছে।

- দেখেছিস দিনা, আমি বলেছিলাম না প্যাকেজিং সমস্যা আছে। (আখি)

- তাই তো দেখছি। (দিনা)

- দাড়াঁ আমি একটা ব্যবস্থা করছি। (আখি)


আখি সন্দীপের দিকে ঘুরে বলে-

- এসব কি  Mr. Sarkar? মশলা এতদূরে যাবে, অথচ এত low quality র প্যাকেট কেনো use করা হচ্ছে? প্যাকেটটা চেঞ্জ করবেন আর প্যাকেটের মধ্যে soft কোনোকিছুর ওপর মশলা রাখবেন, যাতে ঝাঁকুনি পেলেও মশলাগুলো ভেঙে না যায়। (আখি)

- Okey madam, (সন্দীপ)


আখি আর দিনা প্যাকেজিং সেকশন থেকে বেরিয়ে  আসে।

- আখি, এখনই কি বাড়ি যাবি? (দিনা)

- না, আরেকটু visit করবো। (আখি)

- ওকে। (দিনা)


এমন সময় আখি পেছন থেকে এক পুরুষালি কণ্ঠস্বর শুনতে পায়।

- Hello Ms. Yasmin.


কারো কণ্ঠ শুনে আখি ও দিনা উভয়ে পেছনে ঘুরে তাকায়। তারা একটি সুদর্শন যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। তার পড়নে ছিলো সাদা শার্ট ও কালো কোর্ট প্যান্ট। ফর্সা ত্বক, গালে চাপা দাড়ি। তার ঠোঁটের কোণে সামান্য হাসি লেগে ছিল। পোশাক-আশাক দেখে তাকে সম্ভ্রান্ত পরিবারেরই মনে হচ্ছিল। একটা হাত পকেটে গুঁজে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে সে।

- Hello, আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না। (আখি ভ্রূ-কূচকে)

- চিনবেন কি করে? বিজনেস ওয়ার্ল্ডে আপনি নতুন। কিন্তু আপনি যেহেতু এত বড় কোম্পানিতে কাজ করেন, আপনার আমাকে চেনা উচিত ছিলো। (যুবকটি)

- মানে? (আখি)

- I'm Nilim Agarwal, the CEO of Agarwal Industry. (নিলিম)

- ওহ্, I'm Ak.............. (আখি)

- Akhi Yasmin, the Managing Director of Raoson Enterprise. (নিলিম)

- আপনি কিভাবে জানেন? (আখি)

- (বাঁকা হেসে) বিজনেস ওয়ার্ল্ডে থাকতে হলে সবকিছুর খোঁজখবর রাখতে হয়। যেমন আপনি আমায় না চিনলেও কিন্তু আমি আপনাকে ঠিকই চিনি। (নিলিম)

- তো আপনি আমাদের ফ্যাক্টরিতে। (আখি)

- এমনি দেখতে এলাম। তেমন কোনো কারণ নেই। তো কেমন চলছে আপনাদের কোম্পানি? (নিলিম)

- ভালোই চলছে। আগামী দিনে ইনশাআল্লাহ আরও ভালো চলবে। (আখি)

- চলতেই হবে। ম্যানেজিং ডিরেক্টর হওয়ার সাথে সাথে যে ফেক্টরী দেখতে চলে এসেছ, সে কোম্পানিতে থাকলে তো কোম্পানি ভালো চলবেই। (নিলিম)


আখি সামান্য হাসলো।

- আপনাদের কোম্পানির অনেক নাম শুনেছি। আরো শুনেছি আপনার কোম্পানি আজ যে পর্যায়ে আছে তা শুধু মাত্র কোম্পানির CEO এর জন্য। আপনাকে দেখার ইচ্ছে ছিলো। আজ সেটা পূরণ হয়ে গেলো। (আখি)

- আমি আপনার মতো এতটাও সুন্দর নই যে আমাকে দেখার জন্য কারো এত ইচ্ছে থাকবে। By the way, শুনে ভালো লাগলো। আব.....একটা রিকোয়েস্ট করবো, শুনবেন? (নিলিম)

- বলুন, কি রিকোয়েস্ট। (আখি)

- আপনার সাথে এক কাপ কফি খেতে যেতে পারি? (নিলিম)

- আসলে... আজকে একদম সময় নেই। আমার এক্ষুনি অফিসে যেতে হবে। অন্য একদিন নাহয় হবে। (আখি)

- আমার আশাটা ভেঙে দিলেন। তবে সমস্যা নেই, খুব দ্রুত আমাদের আবার দেখা হতে চলেছে। (নিলিম)

- কিভাবে? (আখি)

- আশা করি আপনাদের কোম্পানির সাথে আমাদের কোম্পানির খুব দ্রুত একটি ডিল সাইন হতে চলেছে। তখন নিশ্চয়ই আমাদের আবার দেখা হবে। (নিলিম)

- অবশ্যই। আপনার সাথে কথা বলে ভালো লাগলো। আজ তাহলে আসি। (আখি)

- Sure. আমাকেও যেতে হবে। তবে পরেরবার দেখা হলে কিন্তু কফি খেতে যেতে হবে। (নিলিম)

- Yeah, sure. (আখি)

আখি ও দিনা চলে যাওয়ার সময় নিলিম খুব অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকিয়ে রইলো, যা মোটেও স্বাভাবিক নয়। আখি তা খেয়াল না করলেও দিনার চোখে সেটা ঠিকই ধরা পড়ে। গাড়িতে এসে বসার পরপরই দিনা আখিকে বলে-


- আখি, আমার না লোকটাকে সুবিধের মনে হলো না। (দিনা)

- কেনো? আমার তো ওনার সাথে কথা বলে ভালোই লাগলো। (আখি)

- কেমন অদ্ভুতভাবে তোর দিকে তাকিয়ে ছিল। খেয়াল করেছিলি? (দিনা)

- তুইও না বেশি বেশি। সবকিছুতে সন্দেহ করিস। (সামনে তাকিয়ে) ড্রাইভার, চলো। (আখি)


১৩.
রাত্রিবেলা আখি বাড়িতে সে এবং তার বাবা ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আড্ডা দিচ্ছে। এটি তাদের নিত্যদিনের অভ্যাস। এমন একটি দিনও নেই যে আখি অফিস থেকে এসে অফিসে কি কি হয়েছে সেগুলো বাবাকে বলে নি। এক কথায় বাবা-মেয়ে যেন একে অপরের বেস্ট ফ্রেন্ড।

- বাবা, জানো আজ ফ্যাক্টরিতে গিয়েছিলাম। (আখি)

- তাই নাকি, তো কি করলি গিয়ে? (আখির বাবা)

- কি আবার করবো, মসলাগুলো প্যাকেজিংয়ে কিছু ভুল ছিল। সেগুলো ঠিক করে দিলাম। আর জানো, আজকে আগারওয়াল ইন্ডাস্ট্রিজের CEO র সাথে দেখা হল। খুব মজার মানুষ উনি। (আখি)

- তাহলে তো ম্যানেজিং ডিরেক্টর হয়ে ভালোই মজা করছিস। (আখির বাবা)

- ঠিকই বলেছো। এতদিন চাকরিটাকে নিমপাতা মনে হতো। এখন ভীষণ মজা লাগছে। (আখি)


আখির কথা শুনে আখির বাবা হো হো করে হেসে উঠলেন।

- তবে একটা কথা মনে রাখিস মা, এখন তোর প্রমোশন হচ্ছে। তোর যেমন বন্ধু হবে, তেমন তোর শত্রু হবে। আবার কেউ বন্ধুত্বের নাম করে তোর সাথে শত্রুতা করবে। তাই দেখে শুনে পা ফেলিস। (আখির বাবা)

- উফ্, বাবা,,, তুমি প্রতিদিন এরকম দু'চারটে উপদেশ দাও। আরে এসব তো মায়ের কাজ। তুমি কোথায় আমার সাথে মজা করবে, তা না, দুনিয়ার উপদেশের ডালি খুলে বসো। (আখি মুখ ফুলিয়ে)

- উপদেশ দিই কি আর সাধে, তুই বড় হচ্ছিস যে। সামনে অনেক পথ চলতে হবে তোকে, যার মধ্যে অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে হবে তোকে। (আখির বাবা)

- যে বিপদ থেকে তুমি সুপারম্যানের মতো আমাকে বাঁচাবে। (আখি)

আখির বাবা হাসলেন।

- তো সব সময় কি আমি থাকবো? একদিন না একদিন তো চলে যেতে হবে আমায়। (আখির বাবা)

- তুমি এসব ফালতু কথা কেনো বলতো বাবা? তুমি কোথাও যাবে না। (আখি)

- আমি না গেলেও তো তোকে যেতে হবে। বিয়ের পর কি করবি? আমাকে কোথায় পাবি তখন? (আখির বাবা)

- আমি বিয়েই করবো না। সারাজীবন তোমার সাথে থাকবো। (আখি বাবাকে জড়িয়ে ধরে)

- (মেয়েকে জড়িয়ে ধরে) পাগলি একটা। (আখির বাবা)

১৪.
ম্যানেজার নিজের কেবিনে বসে কোনো এক ফাইল দেখছিলো। আখির জন্য অন্য একটি কেবিন রেডি হয়ে গেছে। তাই তিনি নিজের কেবিনে আছেন। নিজের মতো কাজ করছেন তিনি। নাহলে আখির বকবক শুনতে হবে তাকে, আগে যেটা উনি আখির সাথে করতেন। একেই মনে হয় বলে ভাগ্য।

এমন সময় তার ফোনটা হঠাৎ বেজে উঠলো। তিনি একটু বিরক্ত হয়ে ফোনটা হাতে নিলেও ফোনের দিকে তাকাতেই সে সজাগ হয়ে বসলো। কারণ ফোনের স্ক্রিনে 'Boss' নামটি জ্বলজ্বল করছে। সে সাথেসাথে ফোনটা রিসিভ করে কানে নিয়ে বলে-

- Hello sir, Good morning. (ম্যানেজার)

- Good morning. (মাহির)

- আপনি ভালো আছেন তো স্যার? (ম্যানেজার)

- আমার ভালো থাকা-না থাকার খবর নিয়ে আপনি কোম্পানির কোন কাজে লাগাবেন? (মাহির)


মাহিরের কথায় ম্যানেজার হকচকিয়ে গেলো। আমতা আমতা করে বললো-

- ইয়ে... মানে... স্যার.... (ম্যানেজার)

- লাগবে কোনো কাজে? (মাহির)

- না স্যার। (ম্যানেজার)

- অকাজের কথা আমি বলি না। আশা করি বুঝে গেছেন আমি কি বলতে চাইছি। (মাহির)

- জ..জ্বি স্যার। (ম্যানেজার)

- শুনলাম কালকে নাকি যে মসলাগুলো গেছে সেগুলোর কোন ক্ষতি হয়নি। (মাহির)

- হ্যাঁ স্যার, ঠিকই শুনেছেন। সবই হয়েছে আখি ম্যাডামের জন্য। (ম্যানেজার)

- এই আখিটা কে? (মাহির)

- কেন স্যার, আপনি চেনেন না ম্যাডামকে? (ম্যানেজার বিস্মিত হয়ে)

- আশ্চর্য তো, আমি অস্ট্রেলিয়ায় থেকে বাংলাদেশের এমপ্লয়িকে কিভাবে চিনবো? (মাহির)


তখনই ম্যানেজারের মনে আসে, আখি তাকে বলেছিল যেন মাহির আখির বিষয়ে জানতে না পারে।

- ও হ্যাঁ তাইতো। আপনি আবার আখি ম্যাডামকে কিভাবে চিনবেন। আসলে আমি বলতে চাইছিলাম যে.... মানে... উনি আমাদের কোম্পানির নতুন ম্যানেজিং ডিরেক্টর। (ম্যানেজার)

- বুঝলাম, কিন্তু এই সমাধানটা আগে করা হয়নি কেনো? (মাহির)

- আসলে স্যার ওনাকে দুদিন আগে ম্যানেজিং ডিরেক্টর সিলেক্ট করা হয়েছে। (ম্যানেজার)

- আপনাদের না এই এক সমস্যা। আপনারা অফিসের মধ্যে যারা কাজের, আসলেই কোম্পানির জন্য কিছু করার সক্ষমতা রাখে, তাদেরকে ছোট পদে রাখেন। আর যারা কোন কাজের নয়, শুধু খেতে পারে, তাদেরকে বড় বড় পদ দিয়ে রাখেন। (মাহির)


ম্যানেজার মনে মনে বলল -

- এখন তো এসব বলবেনই। এতদিনে গার্লফ্রেন্ডকে একটা বড় পদ দিয়েছি যে। (ম্যানেজার)

- যাইহোক, আমি আখি না কি বললেন নামটা, ওনার সাথে কথা বলতে চাই। ফোনটা ওনাকে দিন। (মাহির)

- Okay sir, একটু ওয়েট করুন। (ম্যানেজার)


তবে ম্যানেজার মনে মনে বলল -

- এমন ভাব করছে যেন চেনেই না। যতসব নাটক। (ম্যানেজার)


১৫.
আখি নিজের কেবিনে বসে আরামে তার প্রাণপ্রিয় কফি পান করছিল। আর দিনা তার পাশে দাঁড়িয়ে তার সাথে কথা বলছিল। এমন সময় ম্যানেজার তার কেবিনে প্রবেশ করে।

- কি ব্যাপার, আপনি এখানে এ সময়ে? কোন সমস্যা? (আখি)

- No ম্যাডাম, কোন সমস্যা নয়। আসলে মাহির স্যার আপনার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চাইছেন। (ম্যানেজার)


আখি সবে কফি কাপে চুমুক দিয়েছিল। ম্যানেজারের কথা শুনে সে বিষম খেলো। ম্যানেজারের ভ্রূ কূঁচকে গেলো। দিনা আখির অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে বললো-

- Relax আখি, ম্যানেজারের সামনে এমন করিস না। সন্দেহ করবে। (দিনা)


আখির দিনার কথা যুক্তিযত মনে হল। তাই সে স্বাভাবিক হয়ে ম্যানেজারকে বলল -

- ও আপনাদের স্যার কল করেছেন? ক... কাল রাতেই তো ওনার সাথে কথা হলো। এখন আবার কি দরকার? আচ্ছা দিন আমাকে ফোনটা। (আখি)

- এই নিন ম্যাডাম। (ম্যানেজার)


ম্যানেজার আখিকে ফোনটা দিলো। এতক্ষণ মিউট করা ছিলো। সে আনমিউট করে ভয়ে ভয়ে ফোনটা কানে ধরে।

- H.....hello, good morning sir. (আখি)

- Good morning. আপনি আখি ইয়াসমিন? (মাহির)

- Yes sir. (আখি)

- আপনি যেভাবে মশলার ব্যাপারটার সমাধান করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। I'm impressed. (মাহির)

- It's my pleasure sir. (আখি)

- এভাবে কাজ করতে থাকুন। কাজে কোনো কমতি দেবেন না। আমি খুব শীঘ্রই দেশে ফিরছি। আর হ্যাঁ, একটা কথা মনে রাখবেন, আমি যেমন কাজের লোককে পছন্দ করি, তেমনই সমস্যা সৃষ্টিকারী লোকেদের ছুঁড়ে ফেলে দিতে দু'বার ভাবি না। এই কথাটা মাথায় রেখে কাজ করবেন। (মাহির)

- Yes sir. (আখি)

- হুম, Good wishes for you. (মাহির)


কল কেটে যাওয়ার টুং টুং শব্দ হলো। আখি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। সে সামনে তাকিয়ে দেখলো ম্যানেজার তার দিকে দাঁত বের করে তাকিয়ে আছে।

- (মেকি হাসি দিয়ে) ম্যাডাম, স্যার কিন্তু বেশ চালাক আছেন। আমাকে একটুও বুঝতে দেননি যে আপনি ওনার গার্লফ্রেন্ড। (ম্যানেজার)

- (মেকি হেসে) হে, হে, আপনাকে সেটা কেউ দেখতে বলেনি। এখন এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে যান নিজের কাজে যান। (আখি)


ম্যানেজারের মুখটা চুন হয়ে গেলো। সে আখির কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।

- আখি, তুই যে কবে ধরা খাচ্ছিস। (দিনা)

- আমার না এখন কেমন ভয় ভয় করছে বুঝলি। ওনার গলার স্বরটা কেমন জানি, শুনেই তো আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। (আখি বিচলিত মুখে)

- এখন কেন ভয় করছে? আমি যখন বলেছিলাম তখন তো কানে নিসনি আমার কথা। এখন বোঝ ঠেলা। (দিনা)

- তবে যাই বলিস, আমার ইমেজিনেটেড বয়ফ্রেন্ডের ভয়েসটা কিন্তু অনেক সুন্দর। (আখি)

- এইমাত্র না বললি, ভয় পেয়েছিস ওনার গলা শুনে? (দিনা)

- হুম। সত্যি ভয় পাওয়ার মতো, গম্ভীর, ভারী। কিন্তু কোথাও একটা গিয়ে আকর্ষণীয়। গম্ভীর হলেও ভয়েসের মধ্যে একটা আলাদা ভালোলাগা আছে। ইস্, সত্যি যদি উনি আমার বয়ফ্রেন্ড হতো....... (আখি)

- হয়েছে, ছেড়া কাঁথায় শুয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখা বন্ধ কর। (দিনা)

- তোর সাথে কথা বলাই বেকার। (আখি)


১৬.
প্রশস্ত মার্বেল পাথরের তৈরি ডাইনিং টেবিলে বসে আছে মাহির, মাহিরের বাবা, মাহিরের মা ও দীপ্ত। রাতের ডিনারের জন্য সবাই অপেক্ষা করছে।

- Dad, বাংলাদেশে যাওয়া নিয়ে কি decided করলে। মানে আমরা যাচ্ছি কবে? (মাহির)

- আমি তো সামনের রবিবারে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছি। তোমরা কি বলো? (মাহিরের বাবা)

- আমি তো যেতেই interested নই। (মাহিরের মা)

- তোমাকে আমি বলিনি। (মাহিরের বাবা)

- আমাদের তো কোনো সমস্যা নেই আঙ্কেল। (দীপ্ত)

- তুমি হঠাৎ এ কথা তুললে কেন মাহির বেটা? (মাহিরের মা)

- আমাদের এখানকার কাজগুলো তো timely গুছিয়ে নিতে হবে, তাই বললাম। (মাহির)

- মাহির, আমি ভাবছি আমি এবার রেস্ট নেবো। বয়স তো কম হলো না। তোমাদের ওপর কোম্পানির দায়িত্ব দিয়ে আমি মুক্ত হবো। (মাহিরের বাবা)

- But dad, we're nothing without you. (মাহির)

- I know my son. আমি তোমাদের পাশে থাকবো। কিন্তু সরাসরি কোনো কাজে যুক্ত থাকবো না। আমি বাংলাদেশে যাওয়ার পরই তোমায় CEO র চেয়ারে বসাবো। (মাহিরের বাবা)

- এখনই? (মাহির)

- হুম। (মাহিরের বাবা)

- As your wish dad. (মাহির)

- আর দীপ্ত, আমার মনে হয় না তোমার আর মাহিরের পিএ হয়ে থাকার প্রয়োজন আছে। তুমি এ কদিনে যথেষ্ট ভালো কাজ শিখেছো। (মাহিরের বাবা)

- Yeah দীপ্ত বেটা, তোমার এবার নিজের চেয়ারে বসা উচিত। (মাহিরের মা)

- Okey uncle-aunt, মাহির ভাইয়া যেহেতু দেশে ফেরার পর নিজের চেয়ারে বসছে, তাহলে আমিও নাহয় ওখানে গিয়েই আমার চেয়ারটাও নেবো। (দীপ্ত)

- হুম। (মাহিরের বাবা)


চলবে............



110 Views
2 Likes
1 Comments
5.0 Rating
Rate this: