পরিণীতাসক্তি

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
৫.
- আঁ.......... আজকের দিনটাই খারাপ। আমার অবস্হা এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে আমি সামান্য কফিটুকু পাচ্ছি না। এই বসটার নাম কি যেনো.... হ্যাঁ, মাহির। ঐ মাহির স্যার যদি আমার হাজবেন্ড.... না হাজবেন্ড না, যাদি বয়ফ্রেন্ড হতো, কত্ত ভালো হতো! এদের সবাইকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাতাম আমি। (নিজের ফোনটি হাতে নিয়ে) ফোনটা হাতে নিতাম আর ওর নম্বরে কল করে বলতাম, (ফোন কানে ধরে) মাহির, কি হচ্ছে এসব? (আখি)

নিশি তখন সেদিক দিয়ে যাচ্ছিলো। সে আখিকে মাহির নামের কারও সাথে কথা বলতে শুনে সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে এবং নিঃশব্দে আখির কথা শুনতে থাকে।

- আর কতদিন, আর কতদিন আমাদের সম্পর্কের কথা লুকিয়ে রাখবে তুমি? আমি যে তোমার গার্লফ্রেন্ড, এই রওশন এন্টারপ্রাইজের ভবিষ্যত মালকিন, সেটা কবে জানাবে তুমি সবাইকে? আমি যে তোমাকে এমপ্লয়ির ছদ্মবেশে এখানকার সব খবরাখবর তোমাকে দিই, আর তার বিনিময়ে আমি কি পাই, ম্যানেজার আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, বাকি সব এমপ্লয়ি আমাকে নিয়ে কটুক্তি করে, পিওন পর্যন্ত আমাকে কফি দেয় না, What the hell is this going here? (আখি)

আখি এমন ভান করলো যেন ফোনের ওপাশে থাকা ব্যক্তি তাকে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছে। আর সে বুঝেছেও।

- ঠিকাছে। তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো। আমি আর এগুলো নিতে পারছি না। (একটু থেমে) হুম, Bye. (আখি)

আখি ফোনটা রেখে দিলো। তারপর মাথাটা দু'দিকে ঝাঁকিয়ে আবার কাজে মন দিলো। অন্যদিকে নিশি আখির সমস্ত কথা সত্যি ভেবে নেয়। সে ভাবে আখি সত্যি সত্যি তাদের বসের গার্লফ্রেন্ড। সে মনে মনে বলে-

- সর্বনাশ! আখি তাহলে মাহির স্যারের গার্লফ্রেন্ড। ও আমাদের সব information মাহির স্যারকে দেয়! এক্ষুনি এই খবরটা ম্যানেজার স্যারকে দিতে হবে। (নিশি)


নিশি এই ভেবে ম্যানেজারের কেবিনের দিকে ছুট দিলো। ম্যানেজার সাহেব নিজের কেবিনে বসে মন দিয়ে ফাইল দেখছেন। এমন সময় নিশি তার কেবিনে হুড়মুড় করে ঢুকলো।

- স্যার...... স্যার..... (নিশি)

- একি, আপনি এইসময় এখানে? কিছু বলবেন? (ম্যানেজার)

- হ্যাঁ, স্যার খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে আপনার সাথে। (নিশি)

- বলে ফেলুন কী গুরুত্বপূর্ণ কথা যার জন্য আপনি এভাবে এখানে আসলেন। (ম্যানেজার)

- স্যার আমাদের অফিসে ঐ আখি নামের একটা মেয়ে আছে না........(নিশি)

- হ্যাঁ, কাজ করতে দেরী করে যে মেয়েটা। কি হয়েছে তার? (ম্যানেজার)

- ওকে এভাবে বলবেন না স্যার। ও আমাদের CEO-র ছেলের গার্লফ্রেন্ড। (নিশি)


ম্যানেজার এটা শুনে এতটাই অবাক হন যে তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। চোখদুটো বড়বড় করে বললেন-

- কী বলছেন!! গার্লফ্রেন্ড মানে? আপনি কীভাবে জানলেন? (ম্যানেজার)

- আমি নিজে ওকে স্যারের সাথে ফোনে কথা বলতে শুনেছি। (নিশি)

- এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে তো মুশকিল। আমি ওনার সাথে যত দুর্ব্যবহার করেছি, উনি যদি সেটা স্যারকে বলে দেন তাহলে তো আমার চাকরি সংকটময় অবস্থায়... (ম্যানেজার)

- আমিও তো ওনার সাথে খুব ভালো ব্যবহার করিনি। আমার কী হবে স্যার? আপনি আর আমি দুজনেই danger zone এ আছি। (নিশি)

- তাহলে এখন উপায়? ( ম্যানেজার)

- স্যার, আমরা বরং ওর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিই। (নিশি)

- ঐ দু’পয়সার এমপ্লয়ির কাছে আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে? (ম্যানেজার)

- দু'পয়সার এমপ্লয়ি নয় স্যার, দুদিন পর ও এই পুরো কোম্পানির মালকিন হবে। আপনাকে পথে বসিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে আখি। তাই এখন ভালোয় ভালোয় ওর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার উত্তম। (নিশি)

- ঠ... ঠিক বলেছেন। (ম্যানেজার)


৬.
আখি মন দিয়ে ল্যাপটপে তার কাজ করছিলো। এমন সময় ম্যানেজার সাহেব হুড়মুড় করে এসে একেবারে তার পায়ে পড়ে গেলো।

- এই, এই, এই, কী করছেন কি স্যার?(আখি)

- ম্যাডাম, প্লিজ আমায় স্যার বলে আর লজ্জা দেবেন না। আমাদের ক্ষমা করে দিন ম্যাডাম। আমরা বুঝতে পারিনি আপনি কে। (ম্যানেজার)

- আরে কি সব বলছেন স্যার? আচ্ছা আপনি আগে উঠুন, আমার পা থেকে উঠুন। (আখি)

- উঠবো ম্যাডাম? (ম্যানেজার)

- হ্যাঁ, উঠুন। (আখি)

- উঠছি কিন্তু। (ম্যানেজার)

- আরে উঠতেই তো বলছি আপনাকে। (আখি)


ম্যানেজার সাহেব আখির পা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। আখি তার এহেন কান্ডে অনেকটাই হকচকিয়ে গেছে। কিন্তু তা প্রকাশ করছে না।

- ম্যাডাম, প্লিজ ম্যাডাম, আমার চাকরি খাবেন না ম্যাডাম। (ম্যানেজার)

- আরে আশ্চর্য তো, আমি আপনার চাকরি খাওয়ার কে? (আখি)

- মিথ্যে বলে আমাদের আর লজ্জায় ফেলবেন না ম্যাডাম। আমরা জেনে গেছি আপনি বড়স্যারের ছেলের গার্লফ্রেন্ড। (ম্যানেজার)


আখি কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। সে ভাবলো-

- আমি যখন imagine করছিলাম, আমি অফিসের বস মানে মাহির স্যারের গার্লফ্রেন্ড হলে কেমন হতো, তখন কি এরা শুনে ফেলেছে? তারমানে এখন এরা আমাকে বসের গার্লফ্রেন্ড ভাবছে। বাহ্, এই সুযোগটাকে তো কাজে লাগানো যায়। (আখি মনে মনে)

আখি গম্ভীর হয়ে বললো-

- ওহ্, আপনারা তাহলে শুনে ফেলেছেন। আচ্ছা, ভালো। আপনাদের তাহলে বলেই রাখি, আমি একটু আগেই ভাবছিলাম, আমি এখন আপনাদের স্যারকে বলে আপনাদের সবার চাকরি খাবো। (আখি)

- ম....ম্যাডাম, প্লিজ ম্যাডাম, এমন করবেন না। বউ-বাচ্চা নিয়ে না খেতে পেয়ে মরবো। এই নিশি, বলো না। (ম্যানেজার কাঁদোকাঁদো হয়ে)

- হ্যাঁ, ম্যাডাম, এমন করবেন না। আমার অনেক বিপদে পড়ে যাবো। এবারের মত আমায় ক্ষমা করে দিন। (নিশি)

- আচ্ছা, তবে ভবিষ্যতে আমার সাথে এমন ব্যবহার করার আগে দশবার ভাববেন। (আখি)

- কী যে বলেন ম্যাডাম, আপনি হলেন আমাদের বসের গার্লফ্রেন্ড। এই কোম্পানির ভবিষ্যত মালকিন। আপনার সাথে দূর্ব্যবহার করার সাহস কার আছে? (ম্যানেজার)

- হুম, এখন কথা হলো আপনারা যে আমার সম্পর্কে জেনে গেছেন, এই কথাটা যেন আপনাদের বসের কানে না যায়। Even আর কারও কাছে যেন খবরটা না যায়। নাহলে আপনারা কিন্তু সমস্যায় পড়বেন। (আখি)

- আপনি এই নিয়ে চিন্তা করবেন না ম্যাডাম। স্যার কিছু জানতে পারবেন না। (ম্যানেজার)

- না জানতে পারলেই ভালো। (আখি)

- বলছি ম্যাডাম আমি বরং আপনার জন্য কিছু খাবার পাঠাই। আর একটা আলাদা কেবিন ঠিক করি। (ম্যানেজার)

- আচ্ছা ঠিকাছে। যান, তবে যাওয়ার আগে আমার জন্য এককাপ কফির ব্যবস্হা করে দিয়ে যান। (আখি)

- শুধু কফি কেনো, আমি আপনার সকালের ব্রেকফাস্টের ব্যবস্থাও করে দিচ্ছি ম্যাডাম। আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। আপনাকে এখন থেকে আর তেমন কোনো কাজও করতে হবে না। আপনি শুধু আমাদের instraction দেবেন। আর ফাইলগুলো একটু দেখে নেবেন। (ম্যানেজার)

- হুম। আর শুনুন, যতদিন না আমার কেবিনটা রেডি হচ্ছে, ততদিন আমি আপনার কেবিনটা use করবো।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও ম্যানেজার বললো -

-Okey mam. (ম্যানজার)


ম্যানেজার চলে যাওয়ার পর আখি আনন্দে আত্নহারা হয়ে যায়। তবে কিছু ভেবে তার মন আবার খারাপ হয়ে যায়।

- আচ্ছা আমি নাহয় এখন এত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছি। কিন্তু স্যার চলে আসার পর কি হবে?


তারপর আবার সে পরক্ষণেই ভাবে-

- সেটা স্যার আসার পর দেখা যাবে। Now it's time to enjoy Akhi. (আখি)

৭.
আজকে সারাদিনে তার কোনো কাজ করতে হয়নি। সে ম্যানেজারের কেবিনে চেয়ারে মাথা ঠেকিয়ে আরাম করে শুয়ে আছে। দিনা ম্যানেজারকে একটা ফাইল জমা দেওয়ার জন্য ম্যানেজারের কেবিনে এসেছিল। সে এসে আখিকে ওভাবে বসে থাকতে দেখে ৪৪০ ভোল্টের শক খেলো। বিস্ময় নিয়ে বললো-

- তুই এখানে!!! (দিনা)

আখি দিনার ডাক শুনে মাথা তুলে তার দিকে তাকালো আর বললো-

- ও তুই। বস, বস, এখানে বস। (আখি)

- সে না হয় বসবো। কিন্তু তার আগে এটা বল, তুই ম্যানেজার স্যারের কেবিনে কি করছিস? (দিনা)

- এখন থেকে কিছুদিন এটা আমার পার্সোনাল কেবিন, যতদিন না আমার জন্য একটা আলাদা কেবিন রেডি হচ্ছে। (আখি)

- কি!!! (দিনা বিস্ময় নিয়ে)

- কি না জ্বী। এখন এখানে বসতো। কতদিন থেকে একটু আড্ডা দিই না। আমরা আড্ডা দেবো। তোকে আজকে এত কাজও করতে হবেনা। আমি ম্যানেজারকে বলে তোর কাজটা অন্য কারও কাছে হ্যান্ডওভার করিয়ে দিচ্ছি। (আখি)

- তুই হ্যান্ডওভার করিয়ে দিবি মানে? (ম্যানেজার)

- এখন থেকে এখানে সবকিছু আমার কথামতো হবে। (আখি)

- সকাল সকাল কি নেশা-টেশা করেছি এসেছিস নাকি? কিসব আবাল-তাবাল বকছিস। (দিনা)

- তোর কি আমাকে দেখে নেশাখোর মনে হয়? আমি যা বলছি সব ঠিক বলছি, সজ্ঞানে বলছি। (আখি)

- (মাথায় হাত দিয়ে) আমার মাথা ঘুরছে। সিরিয়াসলি, তোর কোনো৷ কথা আমি বুঝতে পারছি না। (দিনা)

- আচ্ছা, তোকে বুঝিয়ে বলছি। (আখি)


আখি এরপর দিনাকে সব খুলে বলল।

- আচ্ছা, আমি এবার বুঝলাম। কিন্তু যখন মাহির স্যার সত্যি সত্যি দেশে আসবেন, তখন কি হবে একটু ভেবে দেখেছিস? (দিনা)

- এখন তো আর আসছে না। তাই ওটা নিয়ে ভাবাভাবির এখন কোনো প্রয়োজন নেই। এখন আপাতত কিভাবে সবাইকে শিক্ষা দেওয়া যায় সে নিয়ে ভাবতে হবে। (আখি)

- কার কথা বলছিস তুই? (দিনা)

- ঐ টাকলা ম্যানেজার আর নিশিসহ যারা আমার সাথে এতদিন খারাপ ব্যবহার করেছে তাদের কথা ভাবছি। (আখি)

- কি করবি? (দিনা)

- তুই কি খেয়াল করেছিস, ম্যানেজার স্যার প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন করে না। অথচ আমরা কাজ দিতে একদিন লেইট করলে পুরো অফিস মাথায় তোলে। (আখি)

- হ্যাঁ, খেয়াল করেছি। (দিনা)

- তাহলে চল, ওনাকে একটু টাইট দিই। (আখি)


আখি এরপর ম্যানেজারকে ডাক দেয়। ম্যানেজার চটজলদি কেবিনে আসে এবং বলে-

- জ্বী ম্যাডাম, ডেকেছিলেন? (ম্যানেজার)

- হ্যাঁ। রায়ের বাজারের মশলা ডেলিভারির তারিখ ছিলো গতকাল। সেটা এখনও যায়নি কেনো? আমি যতদূর জানি, ডেলিভারির দায়িত্ব আপনার থাকে। (আখি)

- আসলে ম্যাডাম, হয়েছে কি, সবই রেডি আছে, কিন্তু মশলাগুলো প্রসেস করা বাকি আছে। তাই গতকাল ডেলেভারি করতে পারিনি। (ম্যানেজার আমতা আমতা করে)

- আপনার কি গতকালের আগে সবকিছু রেডি করে দেওয়া উচিত ছিলো না? (আখি)

- জ্বী ম্যাডাম। (ম্যানেজার)

- তাহলে আপনি নিজে ভেবে দেখুন, আপনি কতটা irresponsible. (আখি)

- সরি ম্যাডাম। আগামীকালের মধ্যে মাল রায়ের বাজার পৌঁছে যাবে। (ম্যানেজার)

- তো এতে তো ক্লাইন্ড অসন্তুষ্ট হবে তাই না? এমন চলতে থাকলে তো কেউ আমাদের সাথে কোনো ডিলই করতে চাবে না। (আখি)


ম্যানেজার কিছু না বলে চুপচাপ মাথা নিচু করে অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে থাকে।

- নেহাত আপনার এই খবরগুলো কেউ বড় স্যারকে দেয় না। নাহলে আপনার চাকরি যে কবে নেই হয়ে যেত, সেটা আপনি নিজেই টের পেতেন না। (আখি)

- সরি ম্যাডাম। আর এমন হবে না। (ম্যানেজার)

- হুম, কথাটা যেন মাথায় থাকে। এতদিন এই অফিসে আপনার বিরুদ্ধে ওপরমহলে complain করার কেউ ছিলো না। এখন এই আখি ইয়াসমিন আছে। তাই এরপর থেকে দেখেশুনে কাজ করবেন। (আখি)

- জ্বী ম্যাডাম। (ম্যানেজার)


ম্যানেজার এই বলে চলে যেতে গেলে আখি আবার তাকে ডাকে।

- আর শুনুন ম্যানেজার সাহেব...... (আখি)

- জ্বী ম্যাডাম... (ম্যানেজার)

- আমি আর দিনা আজকে আর অফিস করবো না। আমার তো আজকে তেমন কাজ ছিলো না। আর দিনার কাজগুলো আজকের জন্য নিশির কাছে হ্যান্ডওভার করে দিন। (আখি)

- Okey madam, আমি ব্যবস্হা করে দিচ্ছি। (ম্যানেজার)

- হুম। দিনা....... চল। (আখি)


আখি ও দিনা অফিস থেকে বের হয়ে যায়। তারা চলে যাওয়ার পর ম্যানেজার নিশিকে তার কাজ বুঝিয়ে দিলে নিশি আফসোসের সুরে বলে-

- কি কক্ষণো যে আখির সাথে misbehave করতে গিয়েছিলাম? এখন তার ফল ভুগছি। (নিশি)

- শুধু তুমি, আমিও তো কর্মফল ভোগ করছি। এখনই যা শুরু করেছে, কিছুদিন পরে যে আর কি হবে কে জানে। (ম্যানেজার)

- হুম। আচ্ছা স্যার, আমাদের বস মানে মাহির স্যার কবে আসছেন? (নিশি)

- উনি তো বললেন সামনের সপ্তাহে আসছেন। (ম্যানেজার)

- ওহ্, আপনি কি ওনাকে চেনেন? মানে কখনো দেখেছেন? (নিশি)

- না, ওনারা তো সপরিবারে সেই কোন পনেরো বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। এর মধ্যে কখনো বাংলাদেশে আসেননি। ওনার কোনো ছবিও দেখিনি। তাই ওনাকে দেখলে হয়তো আমি চিনতে পারবো না। বলতে পারো, ওনাকে অফিসের কেউই দেখেনি। (ম্যানেজার)

- তাহলে আখির সাথে ওনার সম্পর্ক কিভাবে হলো? (নিশি)

- হয়েছে হয়তো অনলাইনে। ওদের বিষয়ে নাক গলিয়ে আমাদের কোনো কাজ নেই। তুমি বরং কাজে যাও। ম্যাডাম এসে দেখলে আবার আরেক ঝামেলা হবে। (ম্যানেজার)

- হ্যাঁ, সেটাই। (নিশি)


_____________________


রওশন এন্টারপ্রাইজ, পুরো বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বাইরে নামকরা একটি সনামধন্য মশলা কোম্পানি। এখানকার মশলা মানে ভালো হওয়ায় পুরো পৃথিবীতে এই মশলা ভুবনবিখ্যাত। এখন এই মশলা শুধু দেশেই বিখ্যাত নয়, দেশের বাইরেও এই মশলাগুলো রপ্তানি হয়।
রওশন এন্টারপ্রাইজের ক্ষ্যাতির পেছনে এই কোম্পানির CEO আরিফ রওশনের বিশেষ অবদান রয়েছে। তিনি দীর্ঘ আট বছর কঠোর পরিশ্রম করে এই কোম্পানিকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। সাফল্যের চরম শিখরে নিয়ে গেছেন রওশন এন্টারপ্রাইজকে।


আরিফ রওশন নিজের একমাত্র ছেলে মাহির রওশন এবং সহধর্মিণী অবন্তী রওশনের সাথে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। তিনি মূলত ছেলের পড়াশোনার ও কিছু পারিবারিক কারণে সেখানে গিয়েছিলেন। আরিফ রওশন চাইলেই ছেলেকে একা অস্ট্রেলিয়ায় রাখতে পারতেন, কিন্তু তখন মাহির অনেক ছোট ছিলো আর কোম্পানির বিস্তৃতি বাড়ানোর জন্য বিদেশে একটি অফিস গড়ে তোলা প্রয়োজন ছিলো। তার স্ত্রীরও আর দেশে থাকার ইচ্ছে ছিলো না। তাই সব দিক বিবেচনা করে তিনি সপরিবারে বিদেশের মাটিতে পা বাড়ান। আর দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে তারা সেখানেই আছেন।


চলবে..............
101 Views
2 Likes
0 Comments
5.0 Rating
Rate this: