মায়া জরানো ভালোবাসা

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
আবির:: হ্যা নিরব কোথায় তুই..?

আমি:: কেনো আবির , কি হয়েছে..?

আবির:: আরে রিয়া কেন জানি মন খারাপ করে বসে আছে আর তোকে খুজতেছে...?

আমি-: আচ্ছা ঠিক আছে দারা আমি এখনি আসছি,,।।

এরপর আমি তারাতাড়ি করে ক্যাম্পাসে গেলাম। গিয়ে দেখি রিয়া মন খারাপ করে চুপটি করে বসে আছে।

আমি:: এই পাগলি, মন খারাপ করে আছো কেনো,,?

রিয়া:: কথা বলবা না তুমি আমার সাথে,,.?

আমি:: কেনো,,,?

- রিয়া::বুঝোনা কেন,,? গত ৫ ঘন্টায় তুমি আমকে একটা বারও ফোন দিয়েছো,,। আর আমার ফোন ও তো রিসিভ করছো না,,,

(ইশশ তারাহুরো করার জন্য ফোনটাও বাসায় রেখে আসছি এখন যদি এই টা বলি না জানি কি বলবে, এর চেয়ে কিছু একটা বানিয়ে বলি),,,

আমি:: হুম দোষ তো আমারই আমি কেন আমার পাগলীটাকে ফোন দিলাম না,, ঠিক আছে, এর জন্য যা শাস্তি দিবে মাথা পেতে নিবো,,

-রিয়া:: এর আগেও তুমি এমন করেছো, যাও তুমি আমার সাথে একদম কথা বলবা না,,।

-আমি:: আমার অভিমানি টা এতো অভিমান করেছে,, (কিন্তু আমি তো জানি আমার অভিমানীটার অভিমান কি করে ভাঙ্গাতে হয়,,।)

-রিয়া:: যাও তুমি, আমার অভিমান তোমাকে ভাঙ্গাতে হবে না,,,। সারাদিনও খোজ নেও নাই আর আসছে আমার অভিমান ভাঙ্গাতে, যাও কথা বলবো না তোমার সাথে,,,

আমি:: এই দেখো তোমার জন্য কি এনেছি,,,

- রিয়া:: না দেখবো না,,,

আমি:: ঠিক আছে তাহলে এই আইস্ক্রিম আর চকলেট সব আমার,,,।

রিয়া:: কি আইস্ক্রিম আর চকলেট,,, এই গুলা আমার, একদম ছুবে না বলে দিলাম,,,

(এই কথা বলে উর্মি আমার হাত থেকে আইস্ক্রিম আর চকলেট গুলো কেড়ে নিলো,,। পাগলী টা যতই অভিমান করুক আইস্ক্রিম আর চকলেট পেলে সব অভিমান ভুলে যায়,,,।)

আমি:: তুমি একাই খাচ্ছো, আমাকে দিবে না..?

রিয়া:: না,, তুমি 5 ঘন্টা আমাকে ফোন দেও নাই, তাই আমিও দিবো না,,,

আমি:: ঠিক আছে,,,,,।

রিয়া:: আচ্ছা নেও, মন খারাপ করতে হবে না,,, আমার আবার এতিম দের প্রতি মায়া লাগে,,,।

আমি:: কি আমি এতিম,, তবে রে,,,,

(আমাকে এতিম বলেই রিয়া দৌড় দিলো আর আমিও রিয়াকে ধোরার জন্য তার পিছন দৌড় দিলাম। আমি চাইলেই রিয়াকে দৌড়ে ধরতে পারবো কিন্তু আমি ধীরে দৌড়াচ্ছি যাতে রিয়া জিতে যায়।)

ঠিক এমন সময় বৃষ্টি শুরু হলো

,, (এই বৃষ্টি তেই রিয়ার সাথে আমার পরিচয়। আমি নিরব আর ও আমার জীবন মানে আমার ভালোবাসা রিয়া ,। তার সাথে প্রথম যেইদিন দেখা হয় সেই দিন আকাশে থেকে বৃষ্টি ঝড়ছিলো। আর বৃষ্টিতে রিক্সায় করে ঘুর‍তে আমার বেশ ভালোই লাগে,,। তাই আমি রিক্সায় করে ঘুরছি,। এমন সময় আমার চোখ রাস্তার পাশে একটি মেয়েকে দেখে আটকে গেলো। দেখালাম মেয়েটি ছোট ছোট বাচ্চা দের সাথে বৃষ্টিতে খেলা করছে। এর মাঝেই দেখালাম এক বৃদ্ধ বৃষ্টির জন্য বের হতে পারছে না। তখন মেয়ে টি নিজের ছাতা সেই বৃদ্ধ কে দিয়ে আসে আর নিজে বাচ্চা দের সাথে ভিজতে শুরু করে৷ মেয়েটির এই গুণ দেখে তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। বলা যায় love at first side.......

সেই দিন দেখেছিলাম একটা উড়ন্তপণা মেয়ে কে, যে খোলা আকাশের নিচে মন খুলে উড়ে বেড়াতে চায়,,। ভালোবাসতে চায় এই প্রকৃতিকে। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থেমে গেলো। খুব রাগ হলো বৃষ্টির উপর। আর একটু সময় ধরে থাকলে কি এমন ক্ষতি হতো,,,,? দেখলাম মেয়ে টা পাশেই থাকা একটা বিল্ডিং এ প্রবেশ করলো। মেয়ে টা মনে হয় এখানেই থাকে,,।

মাঝে মাঝে আসতে হবে, মাঝে মাঝে কেন আসবো প্রতিদিনই তাকে একটি বার করে দেখার জন্য অবশ্যই আসবো।

এরপর থেকে আমি প্রতিদিন সেই বাড়ির নিচে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি,। মাঝে মাঝে তাকে দেখতে পাই আবার মাঝে মাঝে পাই না। মেয়ে টার বিষয়ে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম তার নাম রিয়া । এইবার অনার্স 1st year... কিন্তু ভার্সিটি কোনটা সেইটা জানি না।

কিছুদিন পর আমার ভার্সিটির বন্ধ শেষ হয়ে গেলো। আমি ভার্সিটি গিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারছিলাম। আবির আমার খুব কাছের বন্ধু তার কাছে আমার love at first side এর কথা সেয়ার করলাম,,,। গল্প করতে করতে আমার চোখ টা আমার ভার্সিটির গেইট এ আটকে গেলো। একি আমি কাকে দেখছি এতো রিয়া । তার মানে রিয়া আমার ভার্সিটিতেই পড়ে।

রিয়া কে দেখে আমি লজ্জায় উল্টো দিকে ঘুরে গেলাম। কিন্তু কে যেন মেয়েনি কন্ঠে আমাকে পিছন থেকে ডাক দিলো,,।

রিয়া excuse me ভাইয়া...

(তাকিয়ে দেখি রিয়া ,,। কিন্তু সে আমাকে ভাইয়া বললো কেন,, দিলো সব কিছু শেষ করে, প্রেম ট্রেন এ চরাল আগেই দেখি আমাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো),,,,

আমি:: জী বলুন.....

(এইবার রিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আর কিছু না বলে সামনে চলে গেলো,, কিন্তু কেন বুঝলাম না...? তার চলে যাওয়ার দিকে আমি তাকিয়ে রইলাম,,। কিছুদুর যাওয়ার পর রিয়া আমার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো,,,,, এই হাসিটার মানে বুঝতে পারলাম না,,,।)

এরপর থেকে প্রতিদিন ক্লাস ফাঁকি দিয়ে রিয়াকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতাম। কিন্তু কথা বলার সাহস পেতাম না।।।৷ বন্ধুদের জোড়াজুড়ি তে একদিন বুকে সাহস নিয়ে রিয়ার সাথে কথা বলতে গেলাম,,,

আমি:: রিয়া শুনছ ..?
রিয়া:: হুম বলেন,,,।
আমি:: কেমন আছো,,,?
রিয়া:: হুম ভালো,৷,,
আমি :: আচ্ছা আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাইছি.....
রিয়া :: হুম বলেন,,,,
আমি:: কিন্তু কেন জানি খুব ভয় করছে,,,।।
রিয়া.:: ভয় যেহেতু করছে তাহলে বলার দরকার নেই,,,,
আমি:: আচ্ছা বলছি...

কথা টা বলতে যাবো ঠিক সেই সময় রইয়ার ফোনে আসে। সে ফোন কানে দিতেই কিছুক্ষণ পর তার হাত থেকে ফোন টা পড়ে যায়,, তালিয়ে দেখি রিয়ার চোখে পানি। রিয়া ভার্সিটি থেকে বের হয়ে গেলো। আমি ওর ফোন টা হাতে নিয়ে রিয়ার পিছনে ছুটলাম,,। পিছন থেকে রিয়াকে অনেক দাড়াতে বললাম কিন্তু রিয়া থামছে না,,। মনের ভিতরে খুব ভয় লাগা শুরু হয়ে গেলো। কি এমন হলো যার জন্য রিয়া এমন করছে। দেখলাম কাদতে কাদতে রিয়া বাসায় ডুকে গেলো। আমিও কি তার বাসায় যাবো। কিন্তু আমাকে দেখে কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে আমি কেন এসেছি তাহলে,,,, পড়ে হাতে ফোনটার দিকে নজর গেলো। কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলবো ফোন টা দিতে এসেছি,,। আমি বিল্ডিং এ দুকে গেলাম। কিন্তু রিয়া কোন ফ্লোরে থাকে সেইটা তো জানি না,,। হঠাৎ উপর থেকে কারো কান্নার আওয়াজ পেলাম আমি ছুটে গেলাম সেইখানে। গিয়ে দেখি রিয়া তার আম্মু কে ধরে কান্না করছে আর তার আম্মুর কপাল দিয়ে রক্ত। আমি কিছুই না ভেবে সোজা রিয়া কে গিয়ে বললাম....

আমি :: টা কিভাবে হলো,,


রিয়া কিছুই বলতে পারছে না,,, শুধু কেদেই চলেছে। না আর দেরি করা ঠিক হবে না। আমি দ্রুত রিয়ার আম্মু কে নিয়ে হাস্পাতালে চলে গেলাম। সাথে রইয়া আর রিয়া ভাইকেও নিয়ে গেলাম। আর রিয়ার বাবা দেশের বাইরে থাকে,,। হাস্পাতালে নিয়ে রিয়ার আম্মুকে ইমারজেন্সিতে নিয়ে গেলো। রিয়ার মার হাত চেপে ধরে কান্না করেই যাচ্ছে।। আমি তাক্র শান্তনা দিচ্ছে যে কিছুই হবে না সব ঠিক হয়ে যাবে। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বললো ইমারজেন্সি O+ ব্লাড লাগবে। নইলে রুগীকে বাচানো মুশকিল হয়ে পড়বে। আমি ডাক্তার কে বললাম আমার রক্ত নিতে কারন আমার রক্ত O+

এরপর আমি রক্ত দিয়ে বাইরে এসে বসে আছি। আর রিয়া আমার পাশে এসে তার ভাইটাকে জোড়িয়ে ধরে আমার কাধে মাথা রাখলো,,, মেয়ে টার চোখ দিয়ে এখনো পানি ঝড়ছে,, আমি হাত দিয়ে তার চোখের পানি মুছে দিলাম,,।

ডাক্তার এসে বললো রিয়ার মা এখন সম্পুর্ন বিপদ মুক্ত,,,

এইটা শোনার পর রিয়ার আমাকে সাথে সাথে জড়িয়ে ধরে.......

wait for next part.....


( আজ থেকে আবার নতুন গল্প দেব সবাই পাশে থাকবেন)
293 Views
5 Likes
2 Comments
3.4 Rating
Rate this: