বলো ভালবাসি

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
রোজা ভয়ে চোখ ওফ করে ফেলেছিল...

আবিদ : এমন ভাবে সামনে এসে যাও কেন দেখেশুনে হাঁটাহাঁটি করতে পারো না, ঘুম পাচ্ছে আমার যাও শরে যাও ঘুমাবো আমি ..

রাতে হঠাৎ অনেক বাতাস শুরু হলো।আবিদ সেটা দেখে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে। বিকেলে তো এমন কোনো সংকেত পায়নি যে বৃষ্টি আসবে। এমনকি সে বাসায় আসার আগ পর্যন্ত এমনটা মনে হয়নি বৃষ্টি আসবে। আবিদ বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাতাস দেখছে। মেঘ আসার আগ মুহূর্ত তার কাছে ভিষণ প্রিয়। '

'ঘুরুম করে মেঘের আওয়াজ শোনা গেলো। রোজা লাফ দিয়ে উঠে পড়েছে ঘুম থেকে। ঘুম থেকে উঠে বুঝতে পারলো বৃষ্টি হবে তাই মেঘের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কিন্তু মেঘের আওয়াজে তো তার ভয় হচ্ছে।

গ্রামে থাকলে তার মা তাদের দু বোনকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকতো। এখন কি হবে। রোজা দেখছে বারান্দায় আবিদ দাঁড়িয়ে আছে। তড়িঘড়ি করে আবিদের পেছনে দাঁড়ালো। আবিদ রোজাকে খেয়াল করেনি। তার দৃষ্টি বাহিরে। আবারও মেঘের ডাক শোনা গেলো রোজা ভয়ে আবিদের টিশার্ট টেনে ধরলো। আবিদ পিছন ফিরে তাকাল দেখলো।

দেখলো... রোজা চোখ বন্ধ করে মুখ কাচুমাচু করে রেখেছে। আবিদ রোজার হাত ধরে টেনে ওর পাশে দাঁড় করালো।'

"বেশি ভয় পাচ্ছো নাকি রোজা?"

'রোজা ভয়ে ভয়ে বলছে।
"জ্বী হ্যাঁ'

'আবারও মেঘ ডাক দিলো। রোজা আবার চোখ বন্ধ করে আবিদের টিশার্ট চেপে ধরেছে। আবিদ রোজার দিকে তাকিয়ে বললো।'

"আমি কি জড়িয়ে ধরবো তোমাকে?"

রোজা মাথা নারাল...


'আবিদ প্রথম রোজা কে জড়িয়ে ধরল...

আবিদ রোজার দিকে তাকিয়ে আছে। রোজা যে কিছুক্ষণ পর পর কেঁপে ভালো করেই খেয়াল করছে। রোজা কেঁপে উঠা দেখে নিঃশব্দে আবিদ হাসছে। রোজা আগের মতো ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। আবার মেঘের আওয়াজ শোনা গেলো। রোজা এবার মুখ ফুটে বলেছে।'

"আমার ভিষণ ভয় করছে।"

' বলেই রোজা আরো জোরে জড়িয়ে ধরেছে । আবিদ খুব হালকা ভাবে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেছে। কিন্তু রোজা খুব জোরেসোড়ে জড়িয়ে ধরেছে। বুঝাই যাচ্ছে রোজা খুব ভয় পেয়েছে। পদ্ম আবিদের বুকের মধ্যে ।

আবিদ মনে মনে বললো 'বয়সেও ছোট উচ্চতায়ও'। আচ্ছা এমন কেনো লাগছে, পিচ্চি একটা মেয়ের সংস্পর্শে এসে। জীবনের প্রথম নারী রোজা। কিছুক্ষণ বাদে ছেড়ে দিলো রোজা কে । রোজা হকচকিয়ে গেলো। লজ্জায় সে ওখান থেকে চলে আসছে। বেশি চিন্তা-ভাবনা করতে পারেনা রোজা। তবে ওইসময়ের মুহুর্তটা মনে পড়তেই মুখে লাল আভা ছড়িয়ে পড়লো। ইশশ কি লজ্জা। রোজা এবার ঘুমিয়ে পড়েছে। আবিদ রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।সারারাত আবিদ লিভিং রুমের সোফায় কাটিয়ে দিলো। মন চাচ্ছেনা রুমে যেতে। তাই এখানেই শুয়ে পড়লো।'

সকাল ৭টা

আজ শুক্রবার। ছুটি ছিল।
হসপিটালে যেতে হবেনা তার। তাই ঘড়িতে অ্যালার্ম ও দেয়নি।মুলত শুক্রবার ই
একটু বেশি সময় ঘুমায়। আবিদ ঘুমাচ্ছে। মুনিরা শেখ ঘুম থেকে উঠে লিভিং রুমে এসে দেখে তার ছেলে সোফায় ঘুমাচ্ছে। মুনিরা শেখের বেশ খারাপ লাগছে। হয়তো আবিদ রোজাকে মেনে নিতে পারেনি তাই রুমে না শুয়ে এখানে সোফায় শুয়েছে। আজই তিনি আবিদের সাথে কথা বলবেন তারপর তার একটা ব্যবস্থা তিনি করবেনই।

'আবিদের ঘুম ভেঙেছে ৮টায়। উঠে তার রুমে গেলো। আশ্চর্য আজ রুমে রোজাকে দেখিনি । ফ্রেশ হয়ে আসলো নিচে। প্রতিবারের মতো বাবা হুমায়ুন শেখ টিভি দেখছেন আর চা খাচ্ছেন।
আবিদ তার বাবার পাশের সোফায় বসলো। ইদানীং হুমায়ুন শেখ আবিদ সাথে কথা বলছে না। কিন্তু আবিূ তো তার কথা রেখেছে তাও কেনো এতো তে'জ দেখাচ্ছে বুঝছেনা। রোজা কফি নিয়ে এসেছে তাদের জন্য। আবিদের মুখের সামনে কফিটা ধরেছে একদম।'

আবিদ বিরক্ত হলো...

কিছু সময় পর আবিদের মা তাকে রুমে ডাকলো...

তুই কি রোজা কে মেনে নিতে পারিস নি...
আবিদ :আচ্ছা আমি যদি বলি মেনে নিতে পারিনি তাহলে কি হবে?"

'মুনিরা শেখ থমকে গেছেন আবিদের কথা শুনে।
"এটা বলতে পারিস না তুই। মেয়েটার কি হবে ভেবে দেখ একবার।

'আবিদ হাসতে হাসতে এক হাত দিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরলো।'
" বলেছি মেনে নিতে পারিনি এটাতো বলিনি যে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো না।"

'মুনিরা শেখ এবার ক্ষেপে গেলেন।
"সোজাসাপ্টা বলতে পারিস না?"

"আরে মা শান্ত হও তো। আমার কথার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমি রোজাকে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করবো এবং ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছি।"

'ছেলের কথায় মুচকি হাসলেন মুনিরা শেখ। তিনি জানেন তার ছেলে কখনো তার বাবা মায়ের কথা অবজ্ঞা করবেনা।
আবিদ তার বেশ শখেরই একটা ছেলে বলতে গেলে। ছেলেকে ভিষণ ভালোবাসেন তিনি। প্রথমে ছেলের কথা বুঝতে না পেরে একটু রেগে গিয়েছিলেন বটে।

"মা তোমাকে তখন কি বললাম মনে নেই? আমার যে আজ ফ্ল্যাটে ফিরতে হবে।"

"হ্যাঁ রোজাকে নিবি তোর সাথে?"

"এক কথা আর কতোবার বলতে হবে বলতো?"

"নিবি কিনা সেটা বল।"

" হ্যাঁ ওকে আমার সাথেই নিবো। যেখানেই যাই নিয়ে যাবো।
'শেষের কথাটা বিড়বিড় করে বললো আবিদ...'

নোট: প্রিয় পাঠকবৃন্দ রোজার মাসে বেশি করে লেখা সম্ভব হচ্ছে না , তাই গল্পটা রোজার মাস জন্য এখন থেকে অল্প করেই লিখবো....
ভালো লাগলে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, লাইক করে দিয়েন ধন্যবাদ।
235 Views
5 Likes
2 Comments
5.0 Rating
Rate this: