মায়াবতী চতুর্থ খন্ড গুহার অন্ধকার

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:

রাকিব, রাজু এবং ইলিয়াস—তিন বন্ধু, যাদের সাহসী পদক্ষেপ এখন আরও গভীর রহস্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মায়াবতী, সেই অশুভ আত্মা, তাদের পিছনে ছিল। তবে তারা জানত, তার অন্ধকারকে শেষ করতে হবে। মায়াবতীকে থামানোর একমাত্র উপায় ছিল তার অতীতের রহস্য উদঘাটন করা, এবং সেই রহস্য ছিল একটি পুরনো গুহার মধ্যে, যেখানে অশুভ শক্তির বসবাস ছিল।

এক সন্ধ্যায়, তারা সিদ্ধান্ত নেয় গুহার দিকে যাবে। গুহা, যে জায়গা সবার কাছে নিষিদ্ধ এবং ভীতিকর, যেখানে অন্ধকার শক্তির উপস্থিতি অনুভব করা যায়। এই গুহার ভেতর প্রবেশ করলে, তাদের সামনে আসবে মায়াবতীর সমস্ত অতীত এবং তার অন্ধকার শক্তি। আর সেই শক্তি থেকেই মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় ছিল, গুহার গভীরে গিয়ে তার রহস্য বের করা।

"এটা আমাদের শেষ সুযোগ," রাকিব বলল। "এখানে গিয়ে যদি মায়াবতীর অতীত জানি, তাহলে আমরা তাকে থামাতে পারব।"

তিন বন্ধু একসাথে গুহার দিকে এগিয়ে চলে। প্রথম দিকে, গুহার মুখে প্রবেশ করতেই, এক অদ্ভুত ঠান্ডা অনুভূত হতে শুরু করল। বাতাসে এক নিস্তব্ধতা, যেন পৃথিবী থেমে গেছে। রাকিবের হাত কাঁপছিল, কিন্তু সে থেমে না গিয়ে, এগিয়ে চলল। একে একে, রাজু ও ইলিয়াসও এগিয়ে এল। গুহার ভেতরে ঢুকতেই, তাদের চারপাশে এক ভয়ংকর নিরবতা বিরাজ করছিল।

হঠাৎ, বাতাসে একটি ভুতুড়ে আওয়াজ ভেসে আসে—একটি গভীর গুমোট শব্দ, যেন কিছু একটা তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। তারপরে ফিসফিস আওয়াজ ভেসে আসে, "তোমরা জানো না, এখানে কী অপেক্ষা করছে?" গুহার দেয়াল থেকে ওই শব্দ যেন নির্গত হচ্ছিল। রাকিবের শরীর শিউরে ওঠে, তার মনে হলো যেন তার পাশে কিছু আছে, কিছু অদৃশ্য শক্তি, যা তাকে অনুসরণ করছে।

তাদের সামনে এক অন্ধকার পথ ছিল, আর সেই পথে এগিয়ে যেতে যেতে, প্রতিটি পদক্ষেপ যেন আরো বিপদে ফেলছে। গুহার মধ্যে বাতাস আরও শীতল হতে থাকে, আর হঠাৎ একটি বিকট আওয়াজ তাদের কানে আসে—কোনো এক অদৃশ্য শক্তি যেন তাদের দিকে আক্রমণ করতে এসেছে। তারা থমকে দাঁড়িয়ে যায়, এবং তখনই একটি চাপা কান্নার শব্দ শোনা যায়, যা যেন গুহার অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসছে।

"এটা কি?" রাজু ভয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল। "এটা কি মায়াবতী?"

তাদের চোখের সামনে, এক ভয়াবহ দৃশ্য ফুটে ওঠে। গুহার দেয়ালে কিছু অদ্ভুত চিহ্ন ফুটে উঠে, যা কখনও দেখা যায়নি। তা দেখে, রাকিব জানত, তারা এখন একটি বিপদজনক জায়গায় এসে পড়েছে। গুহার ভেতরে আরও গভীরে যেতে হলে, তাদের একমাত্র উপায় ছিল—সাহস নিয়ে এগিয়ে যাওয়া, এবং সেই অন্ধকার শক্তিকে ধ্বংস করা।

"এটা শেষ করার সময় এসেছে," রাকিব বলল, তার কণ্ঠে দৃঢ়তা। "আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরতে চাই, তবে এই রহস্যের সমাধান করতে হবে।"

তিন বন্ধু একত্রিত হয়ে, গুহার অন্ধকারের দিকে আরও গভীরে প্রবাহিত হয়। তাদের মনে একটাই চিন্তা ছিল—মায়াবতীকে থামানোর জন্য তাদের সাহস, শক্তি, এবং ঐক্য প্রয়োজন। কিন্তু এই অন্ধকারের মধ্যে, তাদের সামনে আসা প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল আরও ভয়াবহ, আরও অদৃশ্য শক্তির উপস্থিতি। গুহার ভেতরে, সেই অশুভ শক্তি যেন ধীরে ধীরে তাদের ঘিরে ফেলছিল, তারা বুঝতে পারছিল না, সামনে কি অপেক্ষা করছে।

আর সেই ভয়ঙ্কর আওয়াজ—একটা বিকট, আতঙ্কজনক শব্দ, যা যেন তাদের শ্বাস বন্ধ করে দিচ্ছিল—এখন তাদের পুরো শরীরকে শীতল করে তুলছিল। যেন মায়াবতীর অন্ধকার শক্তি এই গুহার ভেতরে লুকিয়ে ছিল, এবং তাদেরকে একের পর এক পরীক্ষায় ফেলতে যাচ্ছিল।

এখন, রাকিব এবং তার বন্ধুরা জানত—এটি তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় লড়াই হতে যাচ্ছে। তাদের সাহস, শক্তি, এবং ঐক্যই ছিল একমাত্র অস্ত্র। তারা যদি সফল হয়, তবে মায়াবতীর সেই অন্ধকার শক্তিকে চিরতরে ধ্বংস করতে পারবে।

শেষ।

(এটি ছিল চতুর্থ খন্ড। পরবর্তী খন্ডে, রাকিব এবং তার বন্ধুরা গুহার গভীরে আরও ঢুকবে, যেখানে তারা মায়াবতীর অতীতের রহস্য উন্মোচন করবে এবং তার অন্ধকার শক্তিকে চিরতরে বন্ধ করার লড়াই করবে।)
105 Views
0 Likes
0 Comments
0.0 Rating
Rate this: