প্রথম দেখা (অন্তিম পর্ব)

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
দু’মাস পর.........

"কোর্টে কুনাল বাবুকে প্রমান সহ একই পরিবারের চারজনকে খুন ও নিজের ভাইজিকে খুনের চেষ্টার দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়েছে। উইল অনুযায়ী সম্পত্তির পুরো টাকা পৃথা পেয়েছে।

মেহেদীর মা ও আপু India থেকে Bangladesh এ এসেছেন এক মাস হয়ে গেছে, তাদের সাথে পৃথার বেশ বন্ধুত্ত হয়ে গেছে। তিন জনে একসাথে সিনেমা দেখতে যাওয়া, গল্পগুজব, restaurant এ খেতে যাওয়া প্রায়ই লেগে থাকে। যার জন্য মেহেদী পৃথার উপর রেগে থাকে, তার দিন কাটে Hospital এ patient এর সাথে। ইচ্ছে থাকলেও ওদের সাথে যেতে পারেনা। কিন্তু পৃথা তার হবু বরের এই মিথ্যো অভিমানে আমল দেয় না।


রাত 1ঃ30.....

পৃথা নিজের ঘরে ঘুমিয়ে রয়েছে। হঠাৎ নিজের শরীরে কারো স্পর্শ পেয়ে ভয়ে প্রায় চিৎকার করতে গেলে মেহেদী ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁটে চেপে ধরে। সাথে নিজের সাথে পৃথাকে মিশিয়ে নিয়ে চুলে হাত বুলাতে থাকে।

কিছুক্ষণ পর পৃথাকে ছেড়ে দিয়ে বলে, "কি করছিলে কি? আরেকটু হলেই তো সবাই তোমার চিৎকারে ঘুম ভেঙে যেতো।"

"কি করবো তুমিই তো হঠাৎ করে আমাকে জরিয়ে ধরলে! আমি ভাবলাম কে না কে!"

"আমার বাড়িতে আমি ছাড়া আর কে হবে? যাক ছাড়ো তোমার জন্য এই বেনারসীটা আনচি কেমন হয়েছে দেখো তো?"

"হুঁ, খুবই সুন্দর হয়েছে। কিন্তু এখন কিনলে কেন?"

"কারণ কাল আমাদের বিয়ে তাই। আমি মা আর আপুকে তোমায় বলতে বারণ করেছিলাম,তোমায় surprise দেবো বলে।" 🙃

"কি!!!! এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা তুমি আমায় রাতে বলছো?"😱

"কি করবো বলো তুমি যা শুরু করছো তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে করাটাই ঠিক মনে করলাম।" 😉

"কেন আমি আবার কি করলাম?"

"কেন? রোজ রোজ এতো সুন্দর করে সেজে আম্মু আপুকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে যাচ্ছো আমার কথা তো মনেই করোনা। তারপর কার আবার তোমাকে পছন্দ হয়ে যাবে আর আমাকে তুমি ছেড়ে দিবে তখন আমি কি করবো?" 😕😔

"বেশ হয়েছে। আমি যখন বাড়িতে একা থাকতাম তখন? এখন খুব jealous হচ্ছে তাইনা? বুঝো এবার একা থাকতে কেমন লাগে।" 🤪

তাই জন্যই তো বিয়েটা করছি যাতে আর আমাদের রাতে একা থাকতে না হয়। তুমি আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে। প্রত্যেকটা রাত হবে আমাদের ফুলসজ্জার রাত।" 😇

"যাঃ দিন দিন খুব অসভ্য হয়ে যাচ্ছো। খুব দুষ্টুমি করছো।"

"এখনো দুষ্টুমির তো কিছুই করিনি। আগামীকাল রাতে বুঝবে পকৃত অর্দুথে দুষ্টুমী করা কাকে বলে।" 🤪😉

"ধ্যাৎ অসভ্য লোক একটা। শোন না তোমায় একটা কথা বলার ছিলো বলবো?"

"Ofcourse, বলো কি বলবে?"

"বলছিলাম যে, সম্পত্তির পুরো টাকা টা যদি কোনও অনাতআশ্রমে দান করি কেমন হয়? যেই টাকার প্রতি আমার কাকুর এতো লোভ ছিলো সেই টাকা দিযে তো আর আমি সুখি হযে যেতে পারবোনা। তারচেয়ে টাকাগুলো দিয়ে ওই ছোট ছোট বাচ্চাদের মুখে হাসি ফোঁটাতে পারবে। ওদের পড়াশোনা, খাওয়া পড়াতে কাজে লাগবে, তুমি কি বলো?"

"নিশ্চয়ই করবে আর আমার এতে সম্পুর্ন মত আছে তবে আমারও একটা মত আছে নেবে?""কি ?......"

"Cheque টা যদি কালই দান করি। আমাদের বিয়ে উপলক্ষে, তুমি রাজি?"

"একদম রাজি।" বলেই মেহেদীকে জরিয়ে ধরে ওর ঠোঁটে ডুব দেয় পৃথা।"মেহেদী আর পৃথার বিয়েটা ভালো মতোই মিটে যায়। ওদের দুজনের আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু পরিসরের মধ্যেই ওদের বিয়েটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়৷ পৃথার কথা মতো ঢাকার একটা অনাতআশ্রমের সকল বাচ্চাদের নিমন্ত্রণ করা হয় বিয়েতে। অনাতআশ্রমের Head এর হাতে তুলে দেওয়া হয় Cheque টা

" আজ মেহেদী আর পৃথার ফুলসজ্জা........"

"পৃথাকে একটু আগেই ওর ঘরে পৌঁছে দিয়ে গেছে মেহেদীর আপু। পৃথার সাথে বেশ খানিক্ষণ ধরে মজাও করে গেছে আজকের রাত নিয়ে। মেহেদীর আপুর চলে যাওয়ার একটু পরেই পৃথার নিজেকে বেশ nurbous লাগে। তাই নিজেকে সামলে নিতে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। অগ্রায়ন মাস তাই বেশ শীত শীত লাগছে পৃথার। হঠাৎ করে মেহেদী পেছন থেকে পৃথাকে জরিয়ে ধরে বলে, " এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন? ঠান্ডা লেগে যাবে তো! ঘরে চলো।"

"হুঁ...." বলেই পৃথা পেছন ফিরতে গেলে মেহেদী পৃথাকে তার নিজের কুলে তুলে নেয়। পৃথা লজ্জায় তার চোখ বন্ধ করে মেহেদীর গলা জরিয়ে ধরে।এ রাত শুধু তাদের শারীরিক মিলনের রাত নয়, এ রাত তাদের ভালোবাসার রাত, তাদের মনের মিলনের রাত, একে অপরকে প্রথমবারের জন্য সবচেয়ে কাছে পাওয়ার রাত। মেহেদী পৃথার গলার কাছে হালকা কামড় বসাতেই পৃথা খাঁমছে ধরে মেহেদীর বুখ। উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে পৃথার সর্ব শরীর। এই শীতের রাতেও পৃথা ঘেমে উঠেছে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘামের ফোঁটা তারই প্রমাণ বহণ করছে। পৃথার বুকের আচঁল সরিয়ে মেহেদী হারিযে যায় পৃথার উন্মুক্ত বক্ষ বিভাজিকার মাঝে। মিশে যেতে থাকে দুটো শরীর ভালোবাসার গভীর সমুদ্রে।

দু'বছর পর.....

আজ মেহেদী আর পৃথার Marriage Anniversary. মেহেদীর আপু আর মা আবার ঢাকা এসেছেন ওদের এই দিনে দোযা করতে। ইতিমধ্যে পৃথা এক ছেলের মাও হয়েছে। প্রথম বারের চেষ্টায় WBCS পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এখন সে সরকারি আমলা।

সারাদিন পর পৃথার ছেলেকে তার দাদিমার কাছে রেখে আবার balcony তে গিয়ে দাঁড়ায়। চোখ বন্ধ করে ফেলে আসা দিনগুলো ভাবতে থাকে। মূহুর্তের মধ্যেই একটু emotional হয়ে পরে পৃথা। কখন যে মেহেদী ওর পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে টেরই পায়নি৷ পৃথাকে জরিয়ে ধরে মেহেদী বলে,"কি এতো ভাবছেন ম্যাডাম? ভিতরে চলো একটা surprise আছে তোমার জন্য।

মেহেদীর হাত ধরে ঘরে এসে চুপচাপ খাটে এসে পৃথা। পৃথার দিকে একটা রঙিন খাম বাড়িয়ে দিযে খুলতে বলে মেহেদী। খাম টা খুলতেই দেখতে পায় Kashmir যাওয়ার দুটো spicejet এর টিকিট।

"আমাদের honeymoon এর trip টা বাকি ছিল। সেটা এবার হবে। তোমার চাকরির preparation এর জন্য দু'বছর ধরে এটা আটকে ছিল। তোমাকে congratulations জানাতে আমার বাবাকে নিয়ে kashmir যাচ্ছি। কি উপহার পছন্দ হয়েছে তো?"

কোনো উত্তর খুঁজে পায়না পৃথা মেহেদীর দেওয়া মতো শুধু মাথা নেরে সম্মতি জানায়। আসলে ভালোবাসা কোনো শব্দে প্রকাশ করা যায় না। তাকে অন্তর দিয়ে অনুভব করতে হয়।🫶❤️


"সমাপ্ত হলো গল্প টা আশা করি ভালো লাগবে। 🫶🥹
শীগ্রই নতুন গল্প নিয়ে আসবো।🫰🖤
217 Views
11 Likes
4 Comments
4.8 Rating
Rate this: