অহংকারী মেয়ে

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
আজ আকাশটা কত সুন্দর, তাই না মিথিলা?
মিথিলা: হুম।
এই দিনটার জন্য আর তোমাকে পাওয়ার জন্য আমি অনেক কষ্ট করেছি, মিথিলা।
মিথিলা: কী কষ্ট করেছ, তুমি তো বলোনি আমাকে।

আচ্ছা, তাহলে শুনো কত কষ্ট করেছি আমি।
মিথিলা: ওকে, বলো।

আজ থেকে ৫ বছর আগে, তোমাকে আমি যখন স্কুলের বারান্দায় দেখেছিলাম, সেদিন বুকের ভেতরটা কেমন জানি মুচড়ে উঠেছিল। আমার মনটা অজানার কোনো এক জগতে হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তোমাকে আমি বলতে পারিনি আমার ভালো লাগার কথা।

মিথিলা: আরে, আপনি এইভাবে বলতে শুরু করে দিলেন! আপনার পাঠকরা তো আপনার নামই জানে না।

ওহ আচ্ছা, এবার আমার পরিচয়টা দিই তাহলে।
আমি নাইম, বাবা-মায়ের আদরের ছোট ছেলে। আমার বড় ভাই হলো পরিবারের সবার বড়, তারপর আমার বোন। সবার ছোট হওয়ায় সবাই আমাকে খুব ভালোবাসে।
আমার বয়স ২৪ বছর। আমি তেমন কিছু করি না, তবে মজার কথা হলো, যাকে মন থেকে ভালোবাসি, তাকেই টিউশন করাই।

যাই হোক, মিথিলাকে সেই স্কুলের বারান্দায় দেখে আমার ভালোলাগা শুরু হয়েছিল। সেদিন থেকেই আমি মনে মনে মিথিলাকে ভালোবাসতে লাগলাম এবং তাকে আমার ভালোবাসা কীভাবে জানাব তা নিয়ে চিন্তা করছিলাম।
দু’দিন ধরে চিন্তা করলাম। বন্ধুদেরও বললাম, কিন্তু হারামি বন্ধুগুলো কোনো বুদ্ধি দিতে পারল না। তাই একা একাই চিন্তা করতে লাগলাম।

তিন দিনের মাথায় মিথিলার মা আমাদের বাড়িতে এলেন। এসে আমার মায়ের সঙ্গে আলাপ শুরু করলেন। জানেন তো, দু’জন মহিলা একসাথে হলে তাদের আলাপের শেষ নেই। আলাপ করতে করতে মিথিলার মা আমার মাকে বললেন,
মিথিলার মা: "কি গো, নাইমের মা, নাইম তো এখন কিছুই করে না। আমার মেয়েটাকে একটু পড়াতে পারে না?"

বিশ্বাস করেন, পাঠক বন্ধুরা, আমি খাট থেকে এক লাফে উঠে পড়লাম। কী বললেন মিথিলার মা!
আমার মা বললেন, "আচ্ছা, নাইমের সাথে কথা বলি।"
এই কথা শোনা মাত্রই আমি ঘর থেকে বের হয়ে এলাম।

মিথিলার মা: "কী খবর, নাইম? কেমন আছ, বাবা?"
নাইম: "এই তো, আন্টি, ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?"
মিথিলার মা: "এই তো বাবা, আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।
নাইম বাবা, একটা অনুরোধ ছিল।"
নাইম: "আরে আন্টি, আপনি অনুরোধ করছেন কেন? আমি তো আপনার ছেলের মতো।" (মনে মনে বলছি, আরে আমার শাশুড়ি, তাড়াতাড়ি বলুন না!)
মিথিলার মা: "বলছিলাম, মিথিলাকে একটু পড়াবে আরকি।"
নাইম: "আচ্ছা, সমস্যা নেই।"
মিথিলার মা: "তাহলে কাল থেকে পড়াবে?"
নাইম: "ওকে, আন্টি।"

আমি আমার রুমে গিয়ে উড়াদুরা নাচতে শুরু করলাম। কারণ মিথিলাকে দেখার সুযোগ তো পেয়ে গেছি! এটা ভেবে।
দিনটা যেন কাটছেই না। অপেক্ষার সময়গুলো একটু দীর্ঘ হয়।

রাত শেষ হয়ে সকাল এলো। আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম বিকেলের জন্য।
বিকেল এলো। আমি একটু সেজেগুজে বের হলাম মিথিলাদের বাড়ি যাওয়ার জন্য।

মোবাইল চালাতে চালাতে কখন যে মিথিলাদের বাড়ি চলে এসেছি বুঝতেই পারিনি।
আমি রুমে ঢোকার জন্য সালাম দিলাম।
সালামের উত্তর দিয়ে দরজা খোলামাত্রই...
আমার চোখ তো কপালে উঠে গেল। আমি এটা কী দেখলাম!

চলবে...

715 Views
2 Likes
2 Comments
4.0 Rating
Rate this: