ফ্লাসব্যাক।
।
।
।
তুবা রহমান মেডিকেলে পড়া খবুই ভালো একজন ছাত্রী। লেখাপড়ায় সে খুবই ভালো। একটি পড়া একবার পড়লে সে পারে দ্বিতীয় বার আর পড়তে হয় না । এজন্য ছোটবেলা থেকেই সে সকল স্যার ম্যামদের প্রিয় ছিল। তাই স্কুল লাইফে সবাই তাকে চিনতো। তাকে চিনেনা এমন একজন কে ও পাওয়া যেতো না।
ছোট থেকেই তুবার স্বপ্ন ছিল সে একদিন এই দেশের অনেক বড় ডাক্তার হবে। তাই সে অনেক ভালো করে লেখা পড়া করতো । তাই তো প্রতিটা পরীক্ষায় সে GPA 5 পেত। তার মেধার জন্য সে একটা নামকরা মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে এবং সেখানেই হোস্টেলে থেকে পড়া লেখা করতো। একদিন তার বাবা ফোন করে তাকে বাড়িতে ডাকে।তাই সে তাড়াতাড়ি করে বাড়িতে আসে। বাড়িতে এসে সে জানতে পারে তার বড় বোনের নাকি তারই বেস্টির বড় ভাই সাফায়াতের সাথে বিয়ে । এবং তা আগামী কালই। যা শুনে তুবা খুবই অবাক হয় তুবা কখনো ভাবতে পরেনি সাফায়াতের সাথে তার প্রাণের প্রিয় বড় বোনের বিয়ে। কেননা সে সাফায়াতকে একদম পছন্দ করে না । তার মতে সাফায়াত ভালো ছেলে না । কারণ সে খুব রাগী আর গম্ভীর। সরাক্ষণ মুখটা গম্ভীর করে রাখে । কারো সাথে তো ভালো করে কথা বলেই না। প্রয়োজনে একটা কথা বলে তাও আবার মুখটা গুমরা করে। সাথে সবাই কে বকাবকি করা তো আছেই। একটু ভুল হলেই সবাই কে বকাবকি করে। এক নাম্বাবারের বদমেজাজী যাকে বলে। তাই তুবা সাফায়াতকে একদম সহ্য করতে পারে না। যতবার মিরা দের (তুবার বেস্টির নাম )বাসায় গিয়েছে ঠিক তত বার কিছু না কিছু নিয়ে তাদের ঝগড়া হয়েছে।
সাফায়াতের সাথে আপুর বিয়ে শুনেই তুবা দৌড়ে তার বড় আপুর রুমে য়ায়। গিয়ে হাপাতে হাপাতে বলে-
"এগুলো আমি কি শুনছি আপু ! তোর সাথে নাকি ঐ গুমরা মুখো সাফায়াত ভাইয়ার বিয়ে তাও আবার আগামীকাল। তুই রাজি হলি কী করে আপু?"
জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে নির্জনে চোখের পানি ফেলছিল তৃশা। কারো কথার আওয়াজে চোখের জল মুছে পিছনে ঘুরে তাকায় তৃশা। বোনকে দেখে মুখে হাসি ফুটে ওঠে তৃশার। তাদের দুই বোনের সম্পর্ক খুবই ভালো। বোনের দিকে তাকিয়ে কিছুটা মলিন কন্ঠে বলে -
"আমি কী করবো। জানিসই তো আব্বু আম্মু আমাদের কথা শুনে না। তারা যা মনে করে তাই করে। আমাদের মতামত নেওয়া প্রয়োজন মনে করে না। তাদের সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয় এখনো তাই করছে।"
বোনের কথায় তুবা শুকনো মুখে বোনের দিকে তাকিয়ে বলে -
"তাই বলে কী নিজের জীবনটা এভাবে বিসর্জন দিবি। একবার ও নিজের কথা ভাববি না। আর রিয়াদ ভাইয়ারই বা কি হবে। তাকে ঠকানো হবে না। সে যে তোকে পাগলের মতো ভালো বাসে। আর আমার জানা মতে তুইও তাকে খুব ভালোবাসিস। এখনে তো তুইও কষ্ট পাবি তাকেও কষ্ট দিবি।"
"তো আমি কী করবো। এখানে আমার কিছুই করার নেই। তুই ভালো করেই জানিস আব্বু কতটা রাগী মানুষ। আর আমি আব্বুর মুখের ওপর কিছু বলতে পারবো না। তিনি আমাদের কথা শুনবেন না । তাছাড়া রিয়াদ এখনো একটা জব পায়নি। আর আব্বু কিছুতেই একজন বেকার ছেলের হাতে আমাকে তুলে দিবে না।
আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না "
তৃশার কথা শুনে তুবা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে বলে -
"তো কী করবি? রিয়াদ ভাইয়াকে ভুলে এখন এই গুমরা মুখো সাফায়াতকে বিয়ে করবী। পারবি রিয়াদ ভাইয়াকে ভুলে থাকে।"
বোনের কথায় তৃশা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে মলিন কন্ঠে বলে -
"জানিনা "
বোনের কাছ থেকে এমন একটি উত্তর শুনে কিছুটা অসন্তুষ্ট নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় তুবা।সেদিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তৃশা। তারপর জানালা দিয়ে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে
( পারবে কি রিয়াদকে ভুলে অন্য কাউকে বিয়ে করতে?পারবে নতুন করে জীবন সাজাতে,সংসার করতে,ভালোবাসতে?উহু,পারবে না। রিয়াদকে ভুলে থাকতে মোটেও পারবে না। পারবে না তার জায়গায় অন্য কাউকে মেনে নিতে। সে যে রিয়াদকে খুব খুব ভালো বাসে। নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালো বাসে। এসব ভেবে একটা সিদ্ধান্ত নেয় তৃশা। খুবই ভয়ংকর একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে তৃশা। যার ফলে ভবিষ্যতে কী হবে তা না ভেবেই।)
চলবে................।
[প্রথমেই আমি দুঃখিত,আপনাদের কে অনেক দিন অপেক্ষা করানোর জন্য। আসলে আমার পরীক্ষা চলছিল তাই এতো দিন গল্প দিতে পারিনি। তবে এখন থেকে নিয়মিত দেওয়ার চেষ্টা করবো । আর এই গল্পটা আপনাদের কাছে কেমন লাগে বলবেন ? আমি সেই অনুযায়ী গল্প দিব ]
হৃদয় মাঝে আপনি (সূচনা পর্ব ) (শেষাংশ)
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
279
Views
7
Likes
1
Comments
0.0
Rating