প্রবাসীর স্বপ্ন

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
আজ আমার প্রবাস জীবনের চার বছর পূর্ণ হলো। আর আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিলাম না, কি ভাবতেছেন আমার চোখে পানি কেন,,,, তাহলে চলুন আপনাদেরকে প্রথম থেকেই শুনাই।

যখন থেকে বুজতে শিখেছি, তখন থেকেই দেখতেছি আমার পরিবারে শুধু অভাব আর অভাব, আর এই অভাবের কারনেই, পরিবারে সবসময় ঝগড়া ঝামেলা লেগেই থাকত,

আর যেহেতু ছোটবেলা থেকেই আমি এগুলো দেখে অবস্ত তাই তেমন কিছু মনে করতাম না। তবে তাদের এই ঝগড়া আমাকে স্বপ্ন দেখাত, আমি স্বপ্ন দেখতাম একদিন অনেক অনেক অনেক বড় হবো,

আমার অনেক টাকা হবে, বড় বড় বাড়ি হবে, গাড়ি হবে, আর মা বাবার সব ইচ্ছে একদিন পূরন করব। এইরকম আশা নিয়েই বড় হচ্ছিলাম। আগুলোর বাইরেও আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ছিল আমি একজন সফটওয়্যার ইজ্ঞিনিয়ার হবো।

আর এই স্বপ্ন নিয়েই বড় হচ্ছিলাম। বড় ভাই দের কাছ থেকে শুনেছিলাম সফটওয়্যার ডেবুলাপার হতে গেলে নাকি অনেক অংক জানতে হয়। আর তাই আমার পছন্দের সাবজেক্ট ও ছিল গনিত।

পারতাম ও অনেক বেশি। এভাবে-ই ক্লাস নাইনে উঠে যায়। ততদিন নিম্নমধ্যবিত্ত আমার পরিবারটা মধ্যবিত্তে এসে পৌছেছে। তখন হয়ত বা খাবার দাবারে কোন শর্ট ছিল না, তবে শর্ট ছিল আমার স্বপ্ন পূরনের টাকার।

সফটওয়্যার ইজ্ঞিনিয়ার হতে গেলে সাইন্স নিয়ে পড়তে হবে, আর আবার বাবার কড়া নিষেধ সাইন্স নেওয়া যাবে না। স্কুলের এত প্রাইভেটের বেতন কিনা তিনি দিতে পারবেন না, অনেক কষ্টে রাজি করিয়েছিলাম। বলেছিলাম কোন প্রাইভেট পড়ব না,

তোমার কোন টাকা দিতে হবে না, তবুও তিনি মানতে নারাজ।অবশেষে মায়ের সম্মুতিতে নিয়ে নিই সাইন্স। দুই বছরে কোন প্রাইভেট পড়ি নি,অবশেষে অনেক কষ্টে এস এসসি পরিক্ষা দেই, তবে আমি জানতাম এসএসসির পর বাবা আমাকে আর পড়লেখা করতে দিবেন না,

তাই আমিও পরিক্ষার পর যে তিনমাস ছুটি পেয়েছি ঐ তিনমাস অনেক পরিশ্রমে কিছু টাকা জোগাড় করে রেখে দিয়েছি। কলেজে ভর্তি হবো বলে, আর তিনমাস পর রেজাল্ট আসল আমি মাত্র কয়েক পয়েন্ট এর জন্য

এ প্লাস মিস করতেছি। তবে তাতে আমার কোন দুঃখ নাই, রেজাল্ট আসার ঠিক দুইদিন পরই বাবা আমাকে উনার রুমে ডাকেন আর বুজিয়ে বলেন যে বাবা দেখ আমি হলাম গরিব একজন মানুষ , আমও কীভাবে তকে এত লেখাপড়া করাব,

তর মামা একটা ভিসা দিতে বলি তুই বিদেশ চলে যা, বাবার এ কথা শুনে আমার চোখের পানি যেন আটকে রাখতে পারলাম না। চুপ করে বাবার রুম থেকে চলে আসলাম, পরদিন জমিতে আমি আর বাবা কাজ করতেছিলাম।

আর সুযোগ পেয়েই আমি বাবাকে বলি বাবা আমাকে কি আর কয়েকটা বছর পড়তে দেওয়া যায় না, দেখো আমি শুধু পড়ালেখা করে তোমার মুখ উজ্জ্বল করব,
তখন আমার বাবা বলে বাপরে প্রত্যেক বাবাই চাই তার সন্তান কে লেখা পড়া করিয়ে

বড় মানুষ বানাতে, কিন্তু কি করব বল আমার ত আর সম্বল নাই, এত টাকাদিয়ে তকে পড়াশোনা করানোর মতো মূড়দ আমার নাই, আচ্ছা তুই যেহেতু পড়ালেখা করতে চাস তাহলে তুই ইন্টারটা পাশ কর ততদিন পর্যন্ত যত কষ্টই হোক না কেন

আমি তকে টাকা দিয়ে যাবে, আর বাবা ভরসা পেয়ে আমিও ভর্তি হয়ে যায় কলেজে।

…………
373 Views
20 Likes
4 Comments
3.3 Rating
Rate this: