কোন এক গ্রামে রোহান নামে একটি ছেলে ছিলো ,
রোহানের আর কোন ভাই বোন ছিলো না অর্থাৎ সে ছিলো বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। রোহানের বয়স যখন দশ বছর তখন তার বাবা মারা যায় । অপরদিকে তার বেশি প্রভাবশালী ছিলো না মধ্যবিত্ত পরিবার ছিলো তাদের। যার কারনে বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে তাদের পরিবার অনেক অভাব অনটনের মধ্যে পড়ে যায় । এই অভাব অনটনের মধ্যে কোন রকম ভাবে রোহান ইন্টার পাশ করে। ইন্টার পাশ করার পর তার পড়াশোনা করার মতো কোনো অবস্থান ছিলো না । অপরদিকে তার মা অনেক অসুস্থ ছিলো । পরিবারের অভাব অনটনের কারণে ভালোভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিলো না ।
এমন অবস্থায় রোহান মায়ের চিকিৎসা এবং পরিবারের হাল ধরার জন্য তাদের গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি মতিন মিয়ার কাছে যায় । মতিন মিয়ার গ্রামের অনেক ধন সম্পদ ছিলো । অপরদিকে রোহান নম্র ভদ্র এবং অনেক বুদ্ধিমান ছেলে ছিলো,যার কারনে গ্রামের সকলে তাকে ভালোবাসাতো। রোহান মতিন মিয়ার কাছে যাওয়ার পর সে তাকে তার ধন সম্পদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেন । রোহান তার কাজ যথেষ্ট দায়িত্বের সাথে করে যাচ্ছে । রোহানের কাজের প্রতি এমন দায়িত্ব দেখে মতিন মিয়া তাকে ভালো মানের পারিশ্রমিক দেন । যার কারনে তাদের পরিবার ভালোভাবে চলতে থাকে এবং তার মাকে চিকিৎসা করাতে পারে। এভাবে চলতে থাকে কিছুদিন।
মতিন মিয়ার একটি মেয়ে ছিলো তার নাম মৌ। রোহান অধিকাংশ সময় তাদের বাড়িতে থাকতো এবং সে অনেক নম্র ভদ্র ছিলো যার কারনে মৌ তাকে অনেক পছন্দ করতো , ভালোবাসতো। কিন্ত রোহান তাকে ভালোবাসাতো না । সে ময়না নামের একটি মেয়েকে ভালোবাসে । ময়না ও অনেক ভালো একটা মেয়ে ছিলো কিন্তু মৌ এর বাবার অনেক টাকা থাকার কারনে তাঁর মধ্যে অনেক অহংকার ছিলো । মৌ রোহানকে অনেকবার তার ভালোবাসার কথা জানিয়েছে কিন্তু প্রত্যেকবারই না করে দিয়েছে।
একদিন মৌ তার বাড়িতে অনেক কান্নাকাটি করছে। এটা দেখে মৌ এর বাবা মা তার কাছে যায় কি জন্য কান্না করে এটা জানার জন্য। মৌ বলে আমি রোহান কে ভালোবাসি আর আমি তাকে বিয়ে করতে চাই । মৌ তার বাবা মায়ের অনেক আদরের ছিলো যার কারণে তার কথা রাখতে মৌ এর বাবা রোহানের মায়ের সাথে তাদের বিয়ে ঠিক করে । এই বিষয়টি রোহান জানতো না ।
রোহান বাড়িতে আসার পর মা তাকে মিষ্টি খেতে দেয়। রোহান কিসের মিষ্টি এটা জিজ্ঞেস করার পর মা তাকে বলে তর সঙ্গে মৌ এর বিয়ে ঠিক করে গেছে মৌ এর বাবা । রোহান কথাটি শুনে তার মাকে বলে আমি ময়নাকে ভালোবাসি এবং তাকেই বিয়ে করবো । রোহান এই বিষয়টি মতিন মিয়ার কাছে জানালে সে নানাভাবে তাকে বুঝাতে থাকে ,তাকে অনেক টাকা পয়সা দিতে চায় কিন্তু রোহান কোন ভাবেই তার মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি নয়। সে বলে আমি বিয়ে করলে ময়নাকেই বিয়ে করবো ।
অনেক বুঝানোর পরেও যখন রোহান রাজি হচ্ছিল না তখন মৌ বললো আমি রোহান কে বিয়ে করবো না । এবং উপস্থিত সকলকে বললো আপনারা রোহানের সাথে ময়নার বিয়ে দিয়ে দেন।
অবশেষে সবাই রোহানের সাথে ময়নার বিয়ে ঠিক করলো । অনেক ধুমধাম করে তাদের বিয়ে হলো সেখানে মৌ সহ সকলেই উপস্থিত ছিলো । তারা দুজনেই বাসর ঘরে ঢুকলো এবং মৌ তাদের বাসর ঘরে এক গ্লাস দুধ দিয়ে আসলো । পরদিন সকালে অনেক বেলা হয়ে গেছে কিন্তু তারা ঘুম থেকে উঠছে না । অনেক ডাকাডাকি করার পরও তারা ঘরের দরজা খুলে না । দরজা না খোলায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখে রোহান এবং ময়না দুজনেই মারা গেছে।
তাদের মারা যাওয়ার কারন হলো তাদেরকে বাসর রাতে যে দুধটা দেওয়া হয়েছিল ওইটাতে মৌ বিষ মিশিয়ে ছিলো । সকালে মৃত দেহ নিয়ে সবাই কান্নাকাটি করছিলো এমন সময় মৌ বলে উঠলো ,
রোহান তুমি আমার হবানা তো কারো হইতে দিবো না ।
(সমাপ্ত)
অদ্ভুত প্রেম
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
129
Views
3
Likes
0
Comments
5.0
Rating