আমি গুগলি । আমি বর্তমানে দশম শ্রেনিতে পড়ি। তো আমার জীবনের ঘটে যাওয়া একটা মূহুর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আমি যখন নবম শ্রেণিতে পড়তাম তখনকার। আমাদের বার্ষিক পরিক্ষা খুব কাছেই ছিল। কাছে বলতে আর মাত্র ১৫ দিন বাকি। আমি ভেবেছি এত দিন যা করেছি করেছি আর একটা দিনও সময় নষ্ট করা যাবে না। তো প্রথম দুদিন আমি খুব ভালো করে পড়াশোনা করলাম। তৃতীয় দিনের দিন আমি মাদরাসার বারান্দা দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন আমাকে আমাদের স্যার ডাকল আমি কাছে গিয়ে ছালাম দিলাম
গুগলি : আসসালামু আলাইকুম স্যার। কেমন আছেন?
স্যার : ওয়ালাইকুম আসসালাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি কি কি পার দুষ্টমি ছাড়া?
হঠাৎ স্যার এটা বলল আমি কিছু বুঝতে পারলাম না। ভয়ে ভয়ে স্যার কে বললাম
গুগলি : স্যার আপনার কথা বুঝিনাই আরেকবার বলবেন প্লিজ
স্যার : মানে তুমি গান, কবিতা, হামদ, নাত, কোরআন তেলাওয়াত এর মধ্যে কোনটা ভালো পার।
গুগলি :( সস্তি নিয়ে ) এর মধ্যে কবিতা আবৃত্তি ভালো পারি। কিন্তু, কেন স্যার?
স্যার : কেন তুমি শুননি আমাদের মাদরাসায় একটা অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে
গুগলি ; (অবাক হয়ে) কেথায় আমি তো কিছুই জানিনা
স্যার : এখন তো জেনেছ। তোমাকে কিন্তু অংশ গ্রহন করতে হবে।
এই বলে স্যার চলে গেল। আমি স্যার কে কিছু বলতেও পারলাম না। ওহ আমিতো বলতে ভুলে গিয়েছিলাম আমার সাথে আমার ফ্রেন্ড নাজিয়া ছিল। নাজিয়া আমাকে জিজ্ঞেস করছে তুই কি অংশগ্রহন করবি। আমি বললাম না। পরে ওর থেকে জানতে পারি অনুষ্ঠান টা দুদিন পরে হচ্ছে। আর আগে থেকেই ও আমার নামটা দিয়ে দিয়েছিল এই শুনে আমি ওকে পুরো মাদরাসা দৌড় করিয়েছি। কিন্তু কি করার যা করার তা তো হয়ে গিয়েছে। আমি আমার কথা কাউকে বলতে পারলাম না। এখন আমাকে প্রস্তুতি নিতে হবে। সত্যি বলতে আমি ছোট বেলায় অনেক স্টেজে উঠে থাকলেও এটা ছিল আমার বড় হওয়ার পর প্রথম স্টেজে উঠা। আমি প্রথম দিন কি কবিতা আবৃত্তি করব সেটাও ভাবিনি। পরের দিন মাদরাসায় গিয়ে দেখি সবার প্রস্ততি অনেক ভালো শুধু আমার কোন প্রস্তুতি নেই। আমি মাদরাসা শেষ করে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ভাবছিলাম আজকে তো আর নতুন কবিতা আবৃত্তি শিখা যাবেনা যেগিলা পারি ওর মধ্যে থেকে একটা বলে দিব। তো সেদিন রাতে আমি পড়া শেষ করে ঘুমাতে যাওয়ার সময় একবার একটা কবিতা পড়লাম। অবশ্য আগে থেকেই পারি। পরের দিন চলে গেলাম অনুষ্ঠানে কুরআন তেলাওয়াত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হলো। তারপর আমাদের সম্মানিত স্যাররা তাদের মূল্যবান কিছু কথা আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। আমাদের উপদেশ দিলেন। তারপর সবাই সবার পারফরম্যান্স করতে লাগল। একেক জনের নাম ডাকা হচ্ছিল আমার মনে হচ্ছিল আমাকে ডাকছে। আমার মধ্যে সিডিয়র আইলার থেকে বড় কোন ঝড় হচ্ছিল আমার অবস্থা এমন ছিল যে কেউ না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবে না। আমি মিসের দিকে তাকালাম মিস আমাকে ইশারা দিয়ে বলল এরপর আমি আছি। আমি ফোন বের করে একবার কবিতাটা পড়ে নিলাম। আমি কবিতাটা মনে করার চেষ্টা করছিলাম মনে তো হচ্ছিলই না বরং যা শিখেছি তাও ভুলে যাচ্ছিলাম। আমার বাবাও সেই অনুষ্ঠানে ছিল। তিনি আমাকে বললেন যা পার তাই বলবে। কবিতার শেষের দুইলাইন পড়ার সময় আমার নাম ডাকা হল। আমি বাবার দিকে তাকালাম বাবা আমাকে অল দা বেস্ট বলল। তখন আমি একটু সাহস পেলাম। আমি স্টেজে গিয়ে দাড়ালাম আমাকে মাইক্রোফোন ধরিয়ে দেওয়া হলো। আমি চোখ বন্ধ করে কবিতা পড়া শুরু করলাম। হঠাৎ হাসাহাসির আওয়াজ শুনতে পেলাম। তখন তাকিয়ে দেখি আমার কবিতা শুনে সবাই হাসছে। তখন আমার আর কোন ভয় ছিলানা আমি নির্ধিদ্বায় কবিতা শেষ করলাম। তখন আমার মনে হচ্ছিল আমি না জানি কি পেরে গিয়েছি। আমার অনেক খুশি লাগছিিল আমি আত্মবিশ্বাসের কারনে এটুকু পেরে ছিলাম। এটা আমার কাছে সব সময় স্মরনিয় হয়ে থাকবে
প্রথম স্টেজে দাড়িয়ে
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
134
Views
4
Likes
0
Comments
4.0
Rating