এক মাস পর.....
কলিং বেলের আওয়াজ শুনে দরজা খুলতে যায় পৃথা।
"হ্যালো মিস পৃথা, কেমন আছেন আপনি?"
"আগের থেকে অনেকটাই ভালো আছি অফিসার। আপনি ভেতরে আসুন।"
"হুঁ, মি. হাসান বাড়িতে নেই? ওনাকে দেখতে পাচ্ছি না যে? "
"হ্যাঁ, উনি উপরে ঘরে আছেন উনাকে ডেকে দিবো?"
"হ্যাঁ, আপনাদের দু'জনের সাথেই আমার কিছু কথা আছে। "
পৃথা ও মেহেদী পুলিশ অফিসারের সামনে সোফায় বসতেই অফিসার বলতে শুরু করলেন, ইনভেস্টিগেশনে অনেক কিছু তথ্য উঠে এসেছে মি. হাসান। আমার মনে হয় খুনের পেছনে মিস. পৃথার পরিচিত কারো হাত থাকলেও থাকতে পারে। কারণ খুনিরা জানতো ওই সময় পৃথা ও মালা বেগম দুজনেই ওই সময় বাড়িতে থাকেন, তাই দুজনকে একসাথে খুন করাটা সহজ হতো। সৌভাগ্যক্রমে আপনি তখন বাড়িতে ছিলেন না তাই আপনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। খুনিরা বেশ কিছুদিন ধরে আপনাদের উপর নজর রাখছিল এটা আমি নিশ্চিত, আচ্ছা মিস. পৃথা আপনি কি কাউকে সন্দেহ করেন? আর আপনার মা বাবার মৃত্যুটা কিভাবে হয়েছিল একটু বলবেন? "
"আমার তো সেরকম কাউকেই সন্দেহ হয়না অফিসার। কেউ আমাকে আর দাদিমাকে খুন করে কি পাবে বলুন?"
"সম্পত্তি, হ্যাঁ মিস.পৃথা বিপুল অংকের সম্পত্তি পাবে আপনার কাকু কাকিমা অন্তত আপনার দাদুর করে যাওয়া কইল তো সেই কথাই বলছে। কালকে আপনার দাদুর উকিল আমার কাছে এসেছিলেন উইলটি নিয়ে। সেখান থেকেই আমার সন্দেহ টা হয়।
আর আমার এতদিনের experience বলছে আপনার
মা বাবার মৃত্যুর পেছনেও আপনার কাকু কাকিমাই দায়ী। এবার আমাকে বলেন আপনার মা বাবার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল। "
খানিক্ষন চুপ থেকে পৃথা বলতে শুরু করে, "আমার মামার বিয়ের উপলক্ষে আমার মা বাবা গাড়ি করে বর্ধমান যাচ্ছিল। আমার সেই সময় কলেজে পরিক্ষা থাকায় আমি যেতে পারিনি। আমি দাদিমার সাথেই ছিলাম। সন্ধ্যা সাতটা নাগাগ পুলিশ ফোন করে বলে আমার মা বাবা মারা গেছেন। বাবার ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমাদের জানানো হয়েছিল যে বাবা নাকি গাড়ি চালাতে গিয়ে ঘুমিয়ে পরেছিল। আর তাতেই Accident হয়। "
"কাঁদতে শুরু করে পৃথা। মেহেদী তাড়াতাড়ি পৃথাকে ঘরে নিয়ে এসে একটা ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পারিয়ে দেয়।" 🛌
"আচ্ছা তাহলে এখন আমি আসি মি.হাসান। পরে আবার আসবো। "
"অফিসার, আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ ছিল।"
"হ্যাঁ, বলুন মি. হাসান। "
"আপনি তো দেখতেই পেলেন পৃথার মানসিক অবস্থা বেশি ভালো নয়, আমি ওকে এখন ঘুমের ঔষধ দিচ্ছি, ওর মাইন্ড ডাইভার্ট করতে ওকে যথেষ্ট সময়ও দিচ্ছি, তবুও ওর mentality যথেষ্ট unstable এখনো। তাই
আপনি যদি অনুমতি দিতেন তো ওকে নিয়ে কাছাকাছি কোথাও থেকে দু-তিন দিনের জন্য ঘুরিয়ে নিয়ে আসতাম।"
"বেশ,। আপনি যখন চাইছেন ওকে নিয়ে ঘুরে আসুন আমার কোনোও আপত্তি নেই। 🙂 তবে যাওয়ার আগে আপনার গাড়ির নাম্বার, আপনাদের দু'জনের ফোন নাম্বার, হটেলের নামও ঠিকানা আর আপনারা কখন কোথায় যাচ্ছেন সব আমাকে জানাতে থাকবেন।
By the way আপনারা যাবেন কোথায়? "
"দিঘা - মন্দারমনি, ইচ্ছে আছে।"
"বেশ তাহলে ঘুরে আসুন।"
"দু'দিন পর পৃথা আর মেহেদী মন্দারমনির উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়। মন্দারমনি পৌঁছে একটা হটেল বুক করে দুজনে পাশাপাশি দুটো রুম নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়। দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে রেস্ট নিয়ে সমুদ্রের পারে এসে দুজনে হাটঁতে থাকে। সমুদ্রের হাওয়ার পৃথার চুলগুলো এলোমেলো ভাবে ওর মুখের উপর পরছে দেখে মেহেদী স্বযত্নে পৃথার চুলগুলো কানের পাশে গুঁজে দেয়। 😍 সমুদ্রের পারে ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা নেমে আসে। আশেপাশের ছোট ছোট দোকানগুলোতে আলো জ্বলে উঠে। মেহেদী পৃথাকে নিয়ে একটা দোকানে নিয়ে যায়। অনেক্ক্ষণ ধরে বাছাবাছির পরে একটা মুক্তোর নেকলেস পছন্দ হয় পৃথার। নেকলেসটা কিনে স্বযত্নে পৃথার গলায় পরিয়ে দেয় মেহেদী। গাঢ় নীল রঙের ওয়ান পিসের সাথে মুক্তর হারটা ওকে দারুণ মানিয়েছে। দোকান থেকে বেড়িয়ে হোটেলে যাওয়ার রাস্তায় ছোটবেলার বান্ধবী মেঘার সাথে দেখা হয় মেহেদীর।
" আরে মেহেদী! কেমন আছিস? কতদিন পর দেখা তর সাথে, কি করছিস এখন? কাকু কাকিমা কেমন আছেন? "
"আরে দাড়া দাড়া, one by one প্রথম থেকে উত্তর দেই কি বল? হ্যাঁ রে ভালো আছি। এইতো এম.ডি করে এখন gynecologist হয়ে এখন একটা সরকারি হাসপাতালে কর্মরত। বাবা তো মারা গেছেন আরো তিন বছর হলো আর মা আপুর কাছে Washington এ থাকে৷ তোর কথা বলতো কতো বড় হয়ে গেছিস, দেখতে কিন্তু বেশ সুন্দর হয়েছিস আগের মতো টেপি নস কিন্তু। "
দু'পক্ষের মধ্যে গল্পগুজব বেশ জমে উঠে। খানিক্ষন বাঁধে মেঘা বলে উঠে, "আসি রে পরে আবার দেখা হবে, ভালো থাকিস। "
মেঘার সাথে কথা শেষে মেহেদী খেয়াল করে পৃথা তার আশেপাশে কোথাও নেই। মূহুর্তেই মেহেদীর মনে হলো তার পায়ের তলার মাটি যেন সরে যাচ্ছে। কি করবে ভেবে উঠতে পারে না সে। চারিদিক তন্নতন্ন করে খুঁজে, একে একে জিজ্ঞাসাও করে কোনো লাভ হলোনা, পৃথাকে ফোন করলেও ফোন সুইচ অফ শোনায়। একবার ভাবে পুলিশকে ফোন করে দেখবে পরমুহূর্তেই ভাবলো হোটেলে ফিরে একবার শেষ চেষ্টা করবে তারপর পুলিশকে খবর দিবে। সেই মতে হোটেলে পৌঁছে রিসেপশনে গিয়ে ৩০২ নাম্বার রুমের খুঁজ নিতে গেলে রিসেপশনিস্ট বলেন,"হ্যাঁ স্যার, ম্যাডাম তো একটু আগে চাবি নিয়ে রুমে গেছেন। "
" আচ্ছা ধন্যবাদ, বলেই হন্তদন্ত হয়ে লিপ্ত দিয়ে ৩০২ নাম্বার রুমের দরজা ধাক্কা দেয় মেহেদী দু-তিন বার ডাকাডাকির পরে দরজা খুলে পৃথা। দরজা খুলে মেহেদীকে দেখেই বেশ রক্ষ স্বরেই বলে," কি দরকার এখানে? কেন এসেছেন? নিজের ঘরে চলে যান আর কালের মধ্যেই কলকাতায় ফিরে গিয়ে আমাকে কোনও PG ( paying guest) এ রেখে আসবেন। আমার আপনার সাহায্যেরও দরকার নেই, " 😤 বলেই পৃথা দরজা বন্ধ করতে গেলেই মেহেদী জোর করে ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দিয়ে জিজ্ঞেস করে, " কি হয়েছে পৃথা? তোমাকে কেউ কিছু বলছে? কিছু হয়েছে
তোমার? শরীর খারাপ লাগছে?"
"না, আমাকে নিয়ে আর ভাবতে হবেনা আপনার। আপনি চলে যান।" বলেই মেহেদীর দিক থেকে পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে পরে পৃথা।"
"আচ্ছা ঠিক আছে,চলে যাচ্ছি।" বলে চলে যেতে গেলে পৃথার হালকা কান্নার আওয়াজ পেতেই থমকে যায় মেহেদী। ছুটে গিয়ে পৃথাকে নিজের দিকে ঘোরাতেই মেহেদী দেখতে পায় পৃথার দুগাল বেয়ে আশ্রু ঝরে পরছে। " 😭
" কি হয়েছে পৃথা, কাঁদছো কেন? বলো আমাকে, কি হয়েছে? " 🥺
পৃথাকে তখনো চুপ করে কাঁদতে দেখে মেহেদী ওকে খাটে এনে বসিয়ে ওর পাশে বসে। পৃথার কোমর টেনে এনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে ওর গালে একটা চুম্বন এঁকে দেয় বলে," মেঘার সাথে কথা বলছিলাম বলে রেগে গেছো? ও তো আমার ছোটবেলার বন্ধু। ওর তো বিয়ে হয়ে গেছে আগের বছর। এতদিন পর সামনা সামনি দেখা হলো তাই এতো কথা বললাম৷ আর তাছাড়া ওর মায়ের বন্ধু ছিল আমার মা সেই থেকে ওর সাথে বন্ধুত্ত আমার। "
মেহেদীর কথা শুনে পৃথা একবার মেহেদীর দিকে তাকিয়ে মাথা নামিয়ে নেয়। কান্নাও ততক্ষণে বন্ধ হয়ে গেছে ওর।
" কি হলো এখনো রাগ কমেনি?" বলে পৃথার মুখটা তুলে পৃথার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মেহেদী। মেহেদীকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে শরীরে এক অদ্ভুত উত্তেজনা অনুভব করে তিরতির করে কাপঁতে থাকে পৃথার নরম উষ্ঠযুগল। 😌 ধীরে ধীরে তাতে দকল নেয় মেহেদী। বেশ খানিকক্ষণ ধরে পৃথার সমস্ত অভিমান শুষে নিতে থাকে মেহেদী। 😚 উত্তেজনায় মেহেদীর বুক খাঁমচে ধরে পৃথা। চুম্বনের মাত্রা ধীরে ধীরে গাঢ় হতে থাকে। 🙊 আস্তে আস্তে মেহেদীর ঠোঁট পৃথার ঠোঁট ছেড়ে গলায় দখল বসায়, হালকা হালকা কামড়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকে পৃথার। নিজের সাথে শক্ত করে ধরে রাখে মেহেদীকে। 👩❤️💋👨
কিছুক্ষণ পরেই মেহেদীর হুঁশ ফিরতেই পৃথাকে ছেড়ে দিয়ে ওকে বুকের মধ্যে জরিয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে," তুমি এখন শুয়ে পড়ো, অনেক রাত হয়েছে।" বলে উঠে যেতে চাইলেই মেহেদীর হাত টেনে ধরে পৃথা।
" আপনি আমার ঘরেই থাকুন না , আমার এই অচেনা জায়গায় একা থাকতে ভয় করছে। " 😞
মেহেদী আর কথা না বাড়িয়ে পৃথার পাশে লাইট অপ করে শুয়ে পড়ে। পরদিন সকাল হতেই পৃথা ঘুম ভেঙে দেখতে পায় মেহেদীর উন্মুক্ত বুকে গভীর নকের আঁচড়ের দাগ। 😫 লজ্জায় লাল হয়ে যায় পৃথা। 🙈
আস্তে করে মেহেদীর পাশ থেকে উঠে first aid box থেকে একটা মলম বের করে হালকা করে লাগিয়ে দেয় মেহেদীর ক্ষত স্থানে। 🥹 মেহেদীর ঘুমন্ত মুখের দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে ঝুঁকে পরে ওর ঠোঁটে একটা চুম্বন দিতে গেলেই মেহেদীর ঘুম ভেঙে যায়। 🤧 পৃথাকে জরিয়ে ধরে নিজের পাশে এনে শুইয়ে দীর্ঘক্ষনের জন্য চুম্বনে লিপ্ত হয় সে।"""""""""""!!! 😻
[next part ____ আসবে ইনশাআল্লাহ ]🌸
প্রথম দেখা (পর্ব ৩)
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
371
Views
18
Likes
2
Comments
4.9
Rating