চাঁদের আলোয় প্রেমের গল্প

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
একটি রহস্যময় বনভূমির মধ্যে, একটি প্রাচীন প্রাসাদ ছিল যা শতাব্দীর পর শতাব্দী একা দাঁড়িয়ে ছিল। প্রাসাদের নাম ছিল "চাঁদের আলোয় প্রাসাদ," এবং এটি গ্রামবাসীদের কাছে এক রহস্যময় স্থান হিসেবে পরিচিত ছিল। গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করত যে প্রাসাদের ভেতরে একটি পেত্নী এবং একটি ভূত বাস করে, যারা তাদের অমর প্রেমের কাহিনী নিয়ে বন্দী রয়েছে।

পেত্নীটির নাম ছিল ঐশ্বর্যা, একজন সুমধুর কণ্ঠের গায়িকা যিনি একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও কবি, কেশব, কে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। কেশব ছিল একজন মেধাবী কবি এবং তার কবিতার মাধ্যমে জীবনকে নতুন করে দেখতেন। তাদের প্রেম ছিল অমর এবং মিষ্টি, কিন্তু এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন তাদের প্রেমের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে কেশবকে বন্দী করা হয় এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ঐশ্বর্যা তার প্রেমিককে হারিয়ে গভীর দুঃখে ভেঙে পড়েন এবং তার আত্মা চাঁদের আলোয় প্রাসাদের ভেতরে বন্দী হয়ে যায়।

অনেক বছর পরে, একজন তরুণী লেখক, প্রিয়া, যিনি প্রাচীন ইতিহাস এবং রহস্য নিয়ে আগ্রহী ছিলেন, প্রাসাদে এসে পৌঁছালেন। প্রিয়া বিশ্বাস করতেন যে প্রাসাদের রহস্য একটি গুরুত্বপুর্ণ ইতিহাসের অংশ এবং তিনি ঐশ্বর্যা ও কেশবের কাহিনী খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নিলেন।

প্রিয়া প্রাসাদের ভেতরে প্রবেশ করলেন এবং পুরনো নথি, চিঠি, এবং অন্যান্য নিদর্শন খুঁজতে শুরু করলেন। তিনি একটি পুরনো পাণ্ডুলিপি পেলেন যা ঐশ্বর্যা ও কেশবের প্রেমের কাহিনী এবং তাদের বিচ্ছেদের কারণ বর্ণনা করছিল। পাণ্ডুলিপিতে লেখা ছিল যে ঐশ্বর্যা ও কেশবের প্রেম পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য একটি বিশেষ পূর্ণিমার রাতে একটি আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হবে।

প্রিয়া পূর্ণিমার রাতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি প্রাসাদের মধ্যে একটি আধ্যাত্মিক সঙ্গীত আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করলেন, যেখানে ঐশ্বর্যা ও কেশবের প্রেমের স্মরণে বিশেষ মন্ত্র পাঠ এবং সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে।

পূর্ণিমার রাতে, প্রিয়া প্রাসাদের মধ্যে একটি মন্ত্রমুগ্ধ পরিবেশ তৈরি করলেন। পূর্ণিমার চাঁদের আলো প্রাসাদের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ল এবং একটি রহস্যময় পরিবেশ তৈরি হল। প্রিয়া সঙ্গীত পরিবেশন শুরু করলেন এবং ধীরে ধীরে, প্রাসাদের মধ্যে একটি কোমল আলো ছড়িয়ে পড়ল। ঐশ্বর্যা ও কেশবের আত্মা একে একে দৃশ্যমান হয়ে উঠল, তাদের মুখে প্রেম এবং শান্তির ছাপ ছিল।

ঐশ্বর্যা ও কেশব প্রিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন যে তাদের দীর্ঘকালীন অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। তাদের প্রেমের পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, তাদের আত্মা অবশেষে মুক্তি পেয়েছে। ঐশ্বর্যা ও কেশব শান্তিতে মিলিত হয়েছেন এবং তাদের প্রেমের কাহিনী চিরকাল অমর হয়ে থাকবে।

প্রিয়া তার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লেখার সিদ্ধান্ত নিলেন, যা ঐশ্বর্যা ও কেশবের প্রেমের কাহিনী এবং তাদের মুক্তির গল্প তুলে ধরবে। বইটি প্রাসাদ ও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জনপ্রিয়তা লাভ করল এবং এটি প্রেমের অমরত্ব ও আত্মার শান্তি নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করল।

এভাবে, ঐশ্বর্যা ও কেশবের প্রেমের কাহিনী চিরকাল স্মরণীয় হয়ে রইল এবং প্রিয়ার কাজ প্রেম ও সঙ্গীতের মাধ্যমে আত্মার মুক্তির একটি অনন্য উদাহরণ হয়ে রইল।
161 Views
2 Likes
0 Comments
4.5 Rating
Rate this: