ভুল সেতু

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
রোহিত, একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলী, বিদেশে একটি বড় প্রোজেক্টের জন্য কাজ করছিল। তার একাকী জীবন ছিল, এবং সে প্রায়শই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করত নতুন বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। একদিন, একটি পুরনো এবং রহস্যময় অ্যাপ্লিকেশনে তার একটি প্রোফাইল দেখতে পায়, যেটি তাকে খুব আকর্ষণীয় মনে হয়—নাম ছিল, “জয়া”।

জয়া একটি মিষ্টি এবং আনন্দময় তরুণী, যিনি তার চিত্র এবং কথোপকথনের মাধ্যমে রোহিতকে মুগ্ধ করে। তারা ফোনে নিয়মিত কথা বলতে শুরু করে এবং দ্রুত বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তাদের কথাবার্তায় এক ধরনের গভীর সংযোগ তৈরি হয়, যা রোহিতের মনে প্রেমের অনুভূতি তৈরি করে।

জয়া মাঝে মাঝে তার অতীত এবং জীবনের অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করত, কিন্তু সে সবসময় এটা পরিষ্কার করে যে সে একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রোহিত, জয়ার প্রতি তার অনুভূতি আরও গভীর হয়ে ওঠে এবং তার সাথে একটি বাস্তব সম্পর্ক গড়ার পরিকল্পনা করে।

একদিন, জয়া রোহিতকে জানায় যে সে একটি গুরুত্বপূর্ণ পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তার শহরে ফিরে আসছে। সে রোহিতকে তার সাথে দেখা করার জন্য আমন্ত্রণ জানায় এবং রোহিত আনন্দিতভাবে সম্মতি দেয়। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রোহিত বিমান টিকেট বুক করে এবং যাত্রার প্রস্তুতি নেয়।

যখন রোহিত তার শহরে পৌঁছে, তখন সে দেখতে পায় যে শহরটি একেবারেই পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যাইহোক, জয়ার দেওয়া ঠিকানায় পৌঁছে, সে একটি পুরনো ভুতুড়ে বাড়িতে এসে পৌঁছায়। বাড়িটি পুরনো এবং পরিত্যক্ত, এবং সেখানে কোনো লোকজন নেই। রোহিত অবাক হয়ে যায় এবং তার ফোনে জয়ার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে, কিন্তু কোন উত্তর পাওয়া যায় না।

বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করার পর, রোহিত কিছু পুরনো চিঠি এবং একটি পুরনো ডায়েরি খুঁজে পায়। চিঠিগুলি এবং ডায়েরিতে লেখা ছিল যে জয়া আসলে মৃত একটি প্রেতের আত্মা, যিনি বহু বছর আগে একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল। জয়ার প্রেমের কাহিনী, তার মৃত্যুর পর প্রেত হয়ে থাকা এবং জীবনের প্রতি তার আকর্ষণ সম্পর্কে সমস্ত কিছু লেখা ছিল।

রোহিত বুঝতে পারে যে জয়া আসলে একটি ভূত এবং তাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র একটি ভ্রান্তি ছিল। সে হতাশ হয়ে পড়ে এবং প্রেতের আত্মা মুক্ত করার চেষ্টা করতে থাকে। স্থানীয় আধ্যাত্মিক গুরুদের সহায়তায়, রোহিত একটি বিশেষ আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে এবং জয়ার আত্মাকে মুক্তি দেয়।

অনুষ্ঠানের পর, প্রেতের আত্মা শান্তি লাভ করে এবং জয়ার আত্মা মুক্তি পায়। রোহিত তার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লেখার সিদ্ধান্ত নেয়, যা জয়ার কাহিনী এবং তাদের প্রেমের গল্পের রহস্য বর্ণনা করবে। বইটি প্রকাশের পর ব্যাপক প্রশংসিত হয় এবং এটি প্রেমের ভুল সেতু এবং আত্মার মুক্তির একটি অসাধারণ উদাহরণ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

এভাবে, জয়ার অমর প্রেমের কাহিনী চিরকাল স্মরণীয় হয়ে রইল এবং রোহিতের কাজ একটি বিশেষ গল্প হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করল।

151 Views
2 Likes
0 Comments
4.5 Rating
Rate this: