একদিনের গল্প, ছোট্ট গ্রাম থেকে শুরু। গ্রামের নাম বীরনগর। এখানে সবাই সাদামাটা জীবন কাটায়। কিন্তু গ্রামের এক কোণে ছিলো ছোট্ট একটি কুঁড়েঘর, যেখানে বাস করত একটি ছেলে, নাম তার আদিত্য। সে ছিল স্বপ্নবাজ। বীরনগরের চারপাশের বন, নদী, পাহাড় তাকে সবসময় টানতো।
আদিত্যর বয়স মাত্র তেরো, কিন্তু তার মধ্যে ছিল অসীম কৌতূহল। একদিন সে সিদ্ধান্ত নিলো, বনের গভীরে যাবে, যেখান থেকে সবকিছু শুরু। গ্রামের সবাই বলে, বনের মধ্যেই আছে এক রহস্যময় স্থান, যেখানে নাকি সোনা-রূপার পাহাড় আছে। কিন্তু সে জায়গায় কেউই কখনো পৌঁছাতে পারেনি।
এক সকালে, আদিত্য একটি ছোট্ট পোটলা নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। সবার চোখ এড়িয়ে সে ঢুকে গেলো ঘন বনের মধ্যে। বনের রাস্তাগুলো সংকীর্ণ, আর গাছপালার ছায়ায় ঢেকে থাকে সবকিছু। কিন্তু আদিত্য চললো নির্ভীক। হাঁটতে হাঁটতে সে পেয়ে গেলো একটি পুরনো ঝর্ণা। ঝর্ণার নিচে, পাথরের আড়ালে লুকানো ছিলো একটি প্রাচীন মানচিত্র।
মানচিত্রটি ছিলো ভীষণ পুরনো, কিন্তু আদিত্য তাতে দেখতে পেলো সেই রহস্যময় স্থানের দিকনির্দেশনা। মানচিত্রটি অনুসরণ করতে গিয়ে সে নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হলো—ভয়ঙ্কর পশু, গভীর নদী, এবং অন্ধকার গুহা।
অবশেষে, বহু বাধা পেরিয়ে আদিত্য পৌঁছালো সেই রহস্যময় স্থানে। কিন্তু সেখানে সোনা-রূপার পাহাড় নয়, বরং একটি বিশাল গাছের নীচে এক বৃদ্ধ বসে ছিলেন। বৃদ্ধ তার দিকে মিষ্টি হাসি দিয়ে বললেন, "তুমি যা খুঁজছিলে, তা এই গাছের নিচেই আছে।"
আদিত্য কিছুটা অবাক হলো। গাছের নিচে খুঁজে পেলো একটি ছোট্ট সিন্দুক। সিন্দুক খুলতেই বেরিয়ে এলো এক আলোর ঝলক। সেই আলোতে ছিলো জ্ঞানের প্রতীক। আদিত্য বুঝলো, সে যে সোনা-রূপা খুঁজতে এসেছিলো, তা আসলে বাইরের কিছু নয়, বরং তার নিজের ভেতরেই ছিলো।
---
এই গল্পের মাধ্যমে আমরা শিখতে পারি যে, জীবনের আসল সম্পদ বাইরের বস্তুতে নয়, বরং আমাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং কৌতূহলে লুকিয়ে আছে।
অজানা পথে
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
797
Views
66
Likes
2
Comments
4.3
Rating