তোমার অপেক্ষায় (পর্ব ১)

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
#তোমার_অপেক্ষায়
#পর্ব 1

সুরাইয়া বেগম এর বিয়ে হয়েছে শহরে।গ্রামে তত একটা আসা হয় না বললেই চলে।আরাফ দেশে ফিরছে বলেই এখানে আসা। নিধি আর নিতী বায়না ধরেছ তারাও গ্রামে ঘুরতে যাবে ছোটমার সাথে.....তাই সুরাইয়া বেগম ও সাথে নিয়ে আসছে।জার মেয়ে হলেও নিধি আর নিতী কে সে নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসে। ওনেক দিন পর বাবার বাসায় এসেছেন যখন তখন কিছুদিন থাকার জন্য মন স্থির করলেন।

নিধি আর নিতী পুরো বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখছে। ওনেক পুরোনো হলেও বেশ সুন্দর বাড়িটা....কারু কাজ করা ২ তলা বিশিষ্ট বাড়িটা।মাঝখানে গোল বৃওের মতো বাড়ির চারিপাশে গাছগাছালী ফুলের বাগান

_ইশ এখানে যদি সারাজীবন থাকতে পারতাম.... নিতীর এমন কথা শুনে নিধি হেসে দিয়ে নিতীর মাথায় চাটি মারলো.... নিতী চোখ মুখ কুচকে নিধির দিকে তাকিয়ে রইলো.... নিতীর এমন রিয়াকশন দেখে বাকি ছয়জন হেসে ফেললো।হঠাৎ আকাশ বললো_
_ কিরে এই বাড়িতে কোনো মাইয়া মানুষ নাই???ওর প্রশ্নে ফারিন বললো _
_এই বাড়িতে মাইয়া মানুষ থাক আর না থাক তাতে তোমার কী ভাইয়া? তুমি কী এখানে প্রেম করতে আসছো নাকি?..
_নাইম বললো আসলেই তুই মাইয়া মানুষ দিয়ে কি করবি??
_প্রেম করুম।
_তোর যেই চেহারা এই চেহারা নিয়ে প্রেম করতে চাস কোন সাহসে??নাইম এর কথায় সবাই হোহো করে হেসে উঠলো....ওদের এই হাসি দেখে ফায়াদ এক ধমক দিতেই সবাই চুপ। ফায়াদ কিছুটা রাগ দেখিয়ে দাতে দাত চিবিয়ে বলতে লাগলো....
সামান্যতম ভদ্রতা শিক্ষস নাই তোরা?? অন্যের বাড়িতে আইসা এমন শুরু করছোত।ফায়াদের এক ধমকে সবাই চুপ থাকলেও ফাহাদ বলে _
_তোমার মতো তো আর সারাজীবন নিরামিশ থাকতে পারবো না আরে বাবা আমি তোমার জায়গায় থাকলে এতোদিন বাচ্চা পয়দা করে ফেলতাম।আবার ও হাসির রোল পরে গেলো। আকাশ হাসতে হাসতে ধপ করে মাটিতে পরে গেলে হাসতে হাসতে বললো _
_তোর ছোট ভাইয়ের কাছে কিছু শিখ বেটা।
ফায়াদ কিছু বলবে তার আগেই সুরাইয়া বেগম এর ডাক পরে......সবাইকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছে মাহমুদা যার যার রুম দেখিয়ে দিলেন।সবাই যে যার মতো ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

****************************
দুপুরে সবাই খেতে বসেছে খাবার পরিবেশন করছে মাহমুদা কামেনী এবং তাদর গৃহকর্মী কমলা। জান্নাত ও খেতে বসেছে। সবাই খেতে ব্যাস্ত হঠাং সুরাইয়া বেগম বললো_
_ভাবী পূর্ণতা কোথায়??ওকেতো কখন থেকে দেখছি না।সুরাইয়া বেগম এর কথা শুনে মাহমুদা কমলাকে উপরে পাঠালো পূর্ণতাকে ডাকার জন্য।

পূর্ণতা সবে গোসল করে বারান্দায় রোদে বসে চুল শুকাচ্ছে পরনে তার গোলাপি জামা সাদা সালেয়ার সাদা ওড়না।এই সাজসজ্জা ছাড়াই মেয়েটাকে যেনো ভয়ংকর সুন্দর লাগসে। পূর্ণতার চুল হাটু পযন্ত ছরিয়ে গেছে।এমন সময় কমলা এসে পূর্ণতাকে ডেকে বললো......
_পূর্ণ মা তুমারে ছোট মা ডাইকতাছে নিচে যাইতে কইছে।কমলা কথাগুলো একদমে বলে পূর্ণতাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই তিনি নিচে চলে গেলো।
পূর্ণতা চুপ করে দাড়িয়ে রইলো কেননা প্রয়োজন ছাড়া পূর্ণতা কোনে পুরুষ মানুষপর সামনে যায় না।তার উপর ফায়াদ এর তিন বন্ধু নিচেই আছে।সব শেষে কোনো উপায় না পেয়ে মাথায় ঘমটা টেনে ঘর থেকে বের হলো পূর্ণতা।খাবার ঘরে সামনে গিয়ে পূর্ণতা কাচুমচু করতে লাগলো এখন সে ওতগুলো ছেলের সামনে যাবে কিভাবে??তার ভাবনার মাঝেই আরিফ শেখ এর ডাক পরলো। পূর্ণতা চমকে উঠলো।
_দিদিভাই ওখানে দাঁড়িয়ে কেনো এখানে এসো।
আরিফ শেখ এর কথায় সবাই সিড়ি কোঠায় নজর দিলো। নিধি পূর্ণতাকে দেখে মনে মনে দুই তিনবার মাশাল্লাহ বলে ফেললো।নিধি ফারিন কে জিজ্ঞাস করলো_
_ এটা কে??ফারিন বললো_
_ এটাইতো পূর্ণ আপু।
_এতো পুরা হুর পরি রে নিতির কথায় ফারিন হেসে বললো আমার পূর্ণ আপু নানুর মতো দেখতে হয়েছে আমার নানু দেখতে হুবহু পূর্ণ আপুর মতে সুন্দর।
ফায়াদের নজর লক্ষ করতেই নাইম খুক খুক করে কেশে উঠলো।ওনিক সেই দিক খেয়াল করতেই ফায়াদকে খচা মেরে বললো _
_প্রেমে পরছো ভাইয়া??
ফায়াদ চোখ গরম করে তাকাতেই সবাই হোহো করে হেসে উঠলো।
পূর্ণতা গুটি গুটি পায়ে এসে আরিফ শেখ এর সামনে দাড়ালো। সবার সাথে মাথা নিচু করেই টুকটাক কথা বললো। সবার সাথে পরিচয় শেষ হলে পূর্ণতা নিজের কক্ষে অগ্রসর হলো।
***********************
বিকেলের দিকে ফায়াদের বন্ধু কাজিন ফাহাদ আর সাথে জান্নাত বসেও গল্প করছিলো।এই একদিনের মধ্যেই জান্নাত এর সাথে ওদের বেশ ভাব জমেছে। গল্পের মধ্যেই হঠাৎ নিধি জান্নাত কে জিজ্ঞাস করলো_
_পূর্ণতাকি সবসময় এমন চুপচাপ থাকে??
_হু চুপচাপ থাকে আপায় আপনেগো লগে যাও কথা কইবো তাও বেশি একটা মিশে না কেন জানেন??
ভাইয়াগে লিগা...আপায়তো বেশি একটা পুরুষ মানুষ পছন্দ করে না তার লিগা।নিধি জেনো ব্যাপারটা বুঝতে পারলো।তখনি নিধি জান্নাত কে বললো _
_চলো তোমার আপার কাছে আমি নিতী ফারিন আর তুমি যাই। তাহলেও কী সমস্যা হবে??
জান্নাত হেসে দুই দিকে মাথা নারালো তার মানে না।মেয়েরা সবাই পূর্ণতার কাছে চলে গেলো।
***********
পূর্ণতা 'পরিনীতা' উপন্যাস পরছিলো এমন সময় ওরা চারজন এসে হাজির। পূর্ণতা অপ্রুস্তুত হলেও পরক্ষণে নিজেকে সাভাবিক করে মুচকি একটা হাসি দিয়ে ভিতরে আসতে বললো। সবাই ভিতরে এসে গল্প করতে ব্যাস্ত হয়ে পরলে।নিধি এতক্ষনে এইটুকু বুঝে গেলো পূর্ণতা ভীষন মিশুক এবং লজ্জাবতি একটি মেয়ে।হঠাং নিতি পূর্ণতার চুল দেখে হা হয়ে গেলো এত বড় চুল মাশাল্লাহ। পূর্ণতা লজ্জা পেলো।তখনিই নিচ থেকে চিৎকার এর আওয়াজ এলে। নিচে কিছু একটা হয়েছে বলে নিধি দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে নিচে ছুটলো নিধির পেছনে সবাই নিচে গেলো......

চলবে..... 🦋
1.56K Views
10 Likes
2 Comments
3.5 Rating
Rate this: