উত্তম মানুষ

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
আল্লাহ তাআলা প্রতিটি প্রাণীকে সৃষ্টি করেছেন নিচুমুখী করে। কেবলমাত্র মানুষকে সৃষ্টি করেছেন আলম্বিত দেহ সোজা করে; যে নিজের হাত দিয়ে পানাহার করে। তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে যথোপযোগী বানিয়েছেন। তাতে পশুর মত বেমানান ও অসামঞ্জস্য নেই। প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তার মাঝে উচিত ব্যবধানও রেখেছেন। তাতে বিবেক-বুদ্ধি, চিন্তা-চেতনা, বোঝশক্তি, প্রজ্ঞা, শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি দান করেছেন। যার ফলে মানুষ আসলে তাঁর কুদরতের প্রকাশস্থল এবং তাঁর শক্তিমত্তার প্রতিবিম্ব। কিছু উলামা إن الله خلق آدم على صورته (অর্থাৎ, নিশ্চয় আল্লাহ আদমকে তাঁর নিজ আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন।) হাদীসে উক্ত অর্থ গ্রহণ করেছেন।(মুসলিম নেকী ও আত্মীয়তা এবং আদব অধ্যায়) মানুষের সৃষ্টিতে উক্ত সকল জিনিসের ব্যবস্থা করাটাই হল 'আহসানি তাকবীম' (সুন্দরতম গঠন) যা মহান আল্লাহ তিনটি বস্তুর কসম খাওয়ার পর উল্লেখ করেছেন। (ফাতহুল কাদীর)

আল্লাহ তায়ালা এতো সুন্দর ভাবে আপনাকে আমাকে বানালেন তার শুকরিয়া আদায় করছেন তো?

মহান আল্লাহ আপনাকে এতো সুন্দর করে বানিয়েছেন যে উদ্দেশ্যে তা কি পূরণ করছেন?
আল্লাহ তায়ালা ইনসান (মানুষ ) বানিয়েছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। আল্লাহ তায়ালার হুকুম পালনের জন্য। সত্য কে মেনে নিয়ে সমস্ত সত্ত্বা দিয়ে রবের আদেশ পালনের জন্যই ইনসান ও জীন জাতি কে বানানো হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা কুরআন মাজীদের মধ্যে বলেছেন :

"আমি সৃষ্টি করেছি জ্বিন ও মানুষকে কেবল এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।" (সূরা -যারিয়াত,৫৬)


এই আয়াতে আল্লাহ তাঁর বিধিগত (শরয়ী) ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেছেন, যা তিনি ভালবাসেন ও চান। আর তা হল, সমস্ত মানুষ ও জ্বিন কেবল এক আল্লাহর ইবাদত করবে এবং আনুগত্যও শুধু তাঁরই করবে। এর সম্পর্ক যদি তাঁর সৃষ্টিগত ইচ্ছার সাথে হত, তবে কোন মানুষ ও জ্বিন আল্লাহর আনুগত্য থেকে বিমুখতা অবলম্বন করার কোন ক্ষমতাই রাখত না। অর্থাৎ, এই আয়াতে সকল মানুষ ও জ্বিনকে জীবনের সেই উদ্দেশ্যের কথা স্মরণ করানো হয়েছে, যেটাকে তারা ভুলে গেলে পরকালে কঠোরভাবে জিজ্ঞাসিত হবে এবং এই পরীক্ষায় তারা অসফল গণ্য হবে, যাতে মহান আল্লাহ তাদেরকে ইচ্ছা ও এখতিয়ারের স্বাধীনতা দিয়ে রেখেছেন।

আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিগত দিক দিয়ে মানুষ কে সব থেকে সুন্দর বানিয়েছেন। কিন্তু শুধুমাত্র দৈহিক সৌন্দর্যই শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি নয়। শ্রেষ্ট হতে গেলে গুণগত সৌন্দর্য প্রয়োজন। গুণগত ভাবে উত্তম হওয়ায় আসল কথা। শ্রেষ্ট হতে হলে যে উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে সেটা পুরো করাটা জরুরি।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন :

"নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে তারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ।"(সূরা -বাইয়িনাহ,৭ )

যারা আন্তরিকভাবে ঈমান আনে এবং যারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা আমল করে, তারাই সৃষ্টির মধ্যে সবার থেকে উত্তম ও উৎকৃষ্টতম সৃষ্টি।


114 Views
1 Likes
0 Comments
5.0 Rating
Rate this: