বিচ্ছেদ,

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
খুব চুপচাপ থাকে মিরা, একদম প্রায় নীড় হাড়া পাখি, ফ্ল্যাটের সমস্ত দরজা জানালা বন্ধ করে এক কোনায় বসে আছে মিরা। একসময় অন্ধকারকে খুব ভয় পেতো এখন আর পায় না এই অন্ধকারিই তার জীবনের সব থেকে সুখের জায়গা। পিছনের সৃতি চারণ করছে মিরা। গ্রামের খুবই সাধারণ ঘরের মেয়ে মিরা, তবে বাবা কখনো কোনো কীছুর অভাব বুঝতে দেয়নি বাবার একমাত্র মেয়ে ছিলো। খুব আদরে বড় হয়েছে। ইন্টার পরীক্ষা দেয়ার পর আর পড়তে দেওয়া হইনি, গ্রামের লোকেরা অনেক কথা বলতে শুরু করলো। তাই এক প্রকার বাদ্য হয়েই বিয়ে দিয়ে দিলো। ছেলেরা কীছুটা বড়োলোক ছিলো। বিয়ে হয় সব ঠিকঠাক ছিলো, বিয়ে হয়ে যাওয়ার রাতেই ড্রেস চেন্জ করে মিরার শাশুড়ি ওকে রান্না ঘরে যেতে বলে। ও রান্না ঘরে র‍্যেতেই ওকে কাজ করতে বসিয়ে দেয়, কাজ শেষ করে রুমে যেতে প্রাই রাত ১ টা বেজে যায়, গিয়ে দেখে আকাশ ঘুমিয়ে পড়েছে,( মানে মিরার হাসবেন্ড) পরের দিন থেকে আবার কাজ শুরু হয় সারাদিন কাজ করার পর রুমে গিয়ে ঘুমাতে ঘুমাতে রাতের ২/৩ টা বাজে আবার ভোর সকাল ৫ টায় উঠে সবার জন্য আলাদা আলাদা নাস্তা রেডি করতে হয়। এভাবেই চলছে মিরার জীবন এক সময় ও সহ্য করতে না পেরে ওর হাসবেন্ডকে বলে ঢাকায় যাওয়ার জন্য, ওর হাসবেন্ড আগে থেকেই ঢাকায় থাকতো,
আকাশ মাশে একবার বাড়িতে আসতো তাও দুই দিনের জন্য, মিরার একটা ননদ আর একটা দেবর ছিলো। ওর ননদের নাম ছিলো মিনা সবাই মিনু ডাকতো, মিরার বিয়ের পর যখন প্রথম ঈদ তখন আকাশ মিরাকে একটা জামা এনে দেয়, কিন্তু মিনুকে কীছু সমস্যার কারণে দিতে পারে না। এজন্য মিনু আর আকাশের মা সব আত্ময়ীদের কল করে বলে
আকাশ একদম চেন্জ হয়ে গেছে বউয়ের জন্য মা বোনকে সহ্য করতে পারে না। মিরা চুপচাপ এগুলো শুনে কিন্তু কীছু বলে না যখন এগুলোর মাএা বেড়ে যায়, তখন মিরা নিজের আলমারি থেকে ড্রেসটা বের করে মিনুকে দিয়ে দেয়, এটা দেখে মিনু আর মিনুর মা এমন হাসি দেয় যেনো রাজ্য জয় হয়ে গেছে।
ওকে শারীরিক মানসিক ভাবে টর্চার করে কিন্তু এগুলো কখনো মিনু নিজের পরিবারকে বলতে পারেনি কারণ বাআা কস্ট পাবে, দিনের পর দিন এমন চলতে থাকে।
আকাশকে অনেক বলার পর সে মিরাকে ঢাকায় নিয়ে আসে, কিন্তু সকালে ৯ টায় অফিসে যায় ফিরে রাত ১১ টায় এসে ফোন নিয়ে বসে পড়ে এভাবেই চলতে থাকে মিরার জীবন। ওর কখন কী প্রোয়জন তা কখনোই বুঝতে চায় নাই আকাশ।
মিরা নিজের মনের কথা গুলো ডাইরিতে লেখে,
তার পর নিজের মা বাবার উদ্দেশ্য লেখে
প্রিয় মা ও বাবা,

কেমন আছো, দোয়া করি খুব ভালো থাকো,

মা জানো এখন আমি কেমন যেনো তুমি হয়ে গেছি, তুমি যেমন আমাদের না খেতে দিয়ে খেতে বসতে না, এখন আমিও বসি না। মা জানো এখন আর কাপড় ধুতে কস্ট হয় না, এখন আর রান্না করতে গেলে হাতও পুড়ে যায় না। কেমন যেনো পাথর হয়ে গেছি, কারো অপমান যেনো গায়েও লাগে না। বাবার যত্ন নিও, তুমিও সাবধানে থাকবে মা।

বাবা,
মিস করোনা বুঝি আমায়, তেমাকে বাবা আমি খুব মিস করি, জানো বাবা এখন আর কেউ নিজের প্লেটের মুরগীর রান, মাছের মাথা তুলে দেয় না। জানো বাবা এমন অনেক না বলা কথা আছে যেগুলো বলতে পারিনি তোমায়, এক ভয়ংকর যন্ত্রণা থেকে মুক্তি নিচ্ছি বাবা দেয়া করবা। মাশের খেয়াল রাইখো৷ ঔষধ গুলো ঠিক মতো খেয়ো। দোয়া করবা।

তোমাদের হতভাগ্য মেয়ে,
মিরা।
ডাইরি আর চিঠিটা টেবিলের উপর রেখে, লাইটটা অফ করে দেয়, রাতে বাসায় ফিরে আকাশ অনেক বার কলিং দেয়ার পর দরজা না খোলার কারণ ডুবলিকেট চাবি দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে আকাশ। নিজেদের বেড রুমে সিলিংফ্যানের সাথে মৃত অবস্থায় করে মিরাকে।
236 Views
4 Likes
2 Comments
5.0 Rating
Rate this: