শামীমের নীরা

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
এই ব্যস্ত শহরে কেউ কারোর খোজ খবর করা সাত্যই হয়ে উঠেনা। দিনরাত খুঁজে চলছি চাকরি ৷ বাবা-মার মুখে একটুকু হাসি ফোটানোর জন্য আমার শহরে আসা৷ অনেক ক্লান্ত লাগছে ৷ আর সকাল থেকে তেমন কিছু খাওয়া হয়নি ৷ যাই টংয়ের দোকানে বসে এককাপ চা খেয়ে নেই ৷
তখনি শামীমের মনে হলো আর পকেটে হাত দিয়ে দেখল দশটাকা আছে ৷ তাও এখন না খেলে আর হাঁটতে পারছিনা না ৷
গেলাম চায়ের দোকানে ----
ওই মামা এক কাপ চা দাও তো
তখনি ফোনটা বেজে উঠল দেখি মা ফোন দিয়েছে ৷
হ্যালো , মা বলো
বাবা তোর চাকরি টাকরির কিছু ব্যবস্থা করলি তোর বাবা অনেক অসুস্থ কিছু টাকা পাঠালে ভালো হতো৷
তোর শরীর স্বস্থ কেমন আছে বাবা ৷
ভালো আছি মা ৷ আচ্ছা দেখি মা কাল পরশুর মধ্যে টাকা পাঠাব এই বলে ফোনটা রেখে দিলাম
চা টা ধরেন ভাইজান
আমার আর চা খেতে ইচ্ছা করলো না মামা চা টা রেখে দেন বলে চলে গেলাম
রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে ভাবলাম মাকে তো বলে দিলাম কাল পরশুর মধ্যে টাকা পাঠাব কিন্তু কিভাবে ৷
মাথার উপর যেন হাজারো চিন্তা তাই মাথা ভার হয়ে আসছে ৷
রাত হয়ে গেল ৷ আজ আর কোথাও চাকরি পাবও না
তাই মেসে চলে গেলাম যেয়ে গোসল করে শুয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি যে সন্ধ্যা হতে ৮৬ বার কল করেছে নিরা ৷ মায়ের সাথে কথা বলার পর কখন যে সাউন্ড অফ হয়ে গেছে খেয়াল করিনি ৷
নীরার মনে হয় আমার ওপর খুব রাগ আর অভিমান করেছে ৷আসলে সারাদিন ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্তি হয়ে গেছি নিরার কথা মনে ছিল না তখন দায়িত্ববোধ পালন করতে পারছিলাম না বা এখনো পারছি না এই চিন্তায় যেন মাথার মধ্যে এক প্রকারের চাপ সৃষ্টি করছিল ৷ অধরি হলো আমার প্রিয়তমা ও কখনো আমার কাছে বড় কিছু চাইনি আমরা যখন ঘুরতে বের হতাম আমি নিরাকে বাদাম ছাড়া আর কিছুই কিনে দিতে পারতাম না আর ও এতটুকুতেই যে কি আনন্দ খুঁজে পেতো ৷ নিরা বলে আমার কাঁধে মাথা রেখে নাকি ওর বাদাম খেতে ভালো লাগে ৷যাইহোক আর কথা না বাড়িয়ে পাগলিটাকে ফোন দেই ৷
ফোন দিচ্ছি রিসিভ করছে না আমি বেশ ভালো করেই বুঝতে পেরেছি যে সে অভিমান করে আছে ৷ আমার পাগলিটা ৷তবুও আমি ফোন দিতেই থাকলাম অবশেষে ফোনটা রিসিভ করল নিরা ৷আমি বললাম সরি নিরা
নিরা চুপ
আমি আবার বললাম সরি বললাম তো তুমি এখনো চুপ করে থাকবে কথা বলবে না আমার সাথে
এবার  নিরা কান্না কন্ঠে আমাকে বলল আমি কে আমি কেনইবা কথা বলব তোমার কাছে কি আমার কোন প্রয়োজন আছে নাকি কোন মূল্য আছে? সারাদিন এত একবারও ফোন দাও না দেখাও করো না আর ফোন দিলে রিসিভও করো না আমার কি তোমার জন্য চিন্তা হয় না এই বলে নিরা কান্না শুরু করলো
আমি বললাম সরি বাবা ভুল হয়েছে আর কখনো এমন হবে না
তখন পাগলীটা বলল চাকরি খোঁজায় আজ মনে হয় তোমার তেমন কিছু খাওয়া হয় নাই
আমি জানিনা নিরা যেন কিভাবে এই আগে থেকেই সবকিছু বুঝে যায়
আমি বললাম হ্যাঁ এই যে এখনই খাব
আমি আবার আমার পাগালিটাকে মিথ্যা কথা বলতে পারি না তাই বললাম না খাওয়া হয়নি
আমি জিজ্ঞাসা করলাম তুমি খেয়েছো
তখন নিরা বলল ঢং তুমি জানো না তুমি না খেলে আমিও খাই না তুমি খেয়েছ কিনা জানার জন্য দুপুরে আমি ফোন দিয়েছিলাম তুমি তো ফোন ধরলেই না তাই খেতেও পারলাম না তাই খেতেও আমি তখন অনুতপ্ত নিয়ে ফোন কেটে দিলাম এখন মেসে যে যার মত খাবার নিচ্ছে আমি আমার খাবারটা নিয়ে নিরাকে ভিডিও কল দিলাম ও দেখল আমি ডাল আর আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খাচ্ছি তখন আমি বললাম যাও নিরা তোমার খাবারটা নিয়ে এসো তখন দেখি নিরা প্লেটে ও ডালের আলুভর্তা নিয়ে এসেছে নিরা বলল চুপ তুমি জানো না যে খাবার সময় কথা বলতে হয় না চুপচাপ খাও খাবারটাকে শেষ কর তারপর কথা আসলে ওর কথা ও পাগলামি আমার প্রতি ওর যে ভালবাসা আমাকে যেন ওর কাছে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে আমার ওর এই দুষ্টু মিষ্টি পাগলামি গুলোই আমার অনেক ভালো লাগে আমি ওকে অনেক ভালোবাসি
514 Views
8 Likes
7 Comments
4.3 Rating
Rate this: