****** তখন ছিল বর্ষা কাল।অনেক আগের ঘটনা। ভাইয়া আসছে বাড়িতে। ও আমরা পরিচিত হয় আমি রিশিতা আর ভাইয়া হচ্ছে রিফাত।আমি তখন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি। ভাইয়াও সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। ওনি আব্বুর কাছে থেকে পড়াশোনা করে। এখন অনেকেই ভাববে আমরা হয়তো যমজ ভাই বোন। কিন্তু তা নই ভাইয়া আমার চার বছরের বড়। ওনি হাফেজ হয়ছে তাই পিছিয়ে গেছে। আচ্ছা মূল কথায় আসি। আমাদের গ্রামের পাশে একটা খাল আছে। অনেকেরই কাছ থেকে শুনেছি খাল পাড় দেখতে নাকি অনেক সুন্দর। আমার খাল পাড় দেখার খুব ইচ্ছে ছিলো।কিন্তু একা যেতে দিবে না। তাই ভাইয়া বাড়িতে আসলে যাবো সেই অপেক্ষায় ছিলাম। ভাইয়াও বাড়িতে আসছে। আমরা সকলেই দুপুরে খাবার খাওয়া শেষ করলাম। আমি আম্মু কে বলছি আমরা খাল পাড় দেখতে যাবো, আম্মু প্রথমে বারন করেছে। কিন্তু অনেক বুঝানোর পর রাজি হয়েছে। * আমি আর ভাইয়া তৈরি হচ্ছি খাল পাড় যাওয়ার উদ্দেশ্যে।
***সেখানে গেলাম একি দৃশ্য, অনেক সুন্দর দৃশ্য। দুই পাশে গাছ আর মধ্যখানে রাস্তা। সারি ভাবে গাছ লাগানো। কি অসাধারণ দৃশ্য। রাস্তার পশ্চিম পাশে তাকালে খালি জমি। সেখান এক জমি, কে যনো মাটি দিয়ে বরাট করছে। আর রাস্তার পূর্ব পাশে তাকালে শুধু পানি আর পানি। ***
**** খুব সুন্দর দৃশ্য এক পর্যায়ে আমি চেচিয়ে উঠলাম আর বললাম সূর্য যেনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর তার রোদের ঝলকানিতে আমার ছোখ যেনো আলোকিত হয়ে উঠছে। রাস্তায় কোনো মানুষ নেই। আমি আর ভাইয়া যেনো পুরা রাস্তা রাজত্ব করছি।
***** ওই দিন দুপুরের সময় আবার বৃষ্টি হয়েছে। পুরা রাস্তা কাদাই পানিতে ডাকা। এক পর্যায়ে আমার ইচ্ছে হলো খালের পানি ধরবার। ভাইয়াকে বললাম আমার হাত ধরো, আমি নিছে নেমে খালের পানি ধরবো। ওনি বললো আমি পারবো না। আমি বললাম আপনি যদি আমার হাত না ধরেন তাহলে আমি আপনাকে পানিতে ধাক্কা মারবো। ওনি ভয়ে রাজি হয়ে গেছে। কারণ ওনি সাতার পারে না। আমিও পারি না। ***
*** ওনি আমার হাত ধরলো, আমি নিছে নামবো কাদা অনেক নিছে নামার চেষ্টা করছি অনেক, কিন্তু কাঁদার জন্য পারছি না। এক পর্যায়ে কি হলো বুঝতে পারি নি ভাইয়ার হাত থেকে আমার হাতটা ছুটে গেলো।আর আমি পানিতে পড়ে গেলাম। ভাইয়া ভয়ে ঘাবড়ে গেলো।আমি পানিতে আর বলছি শুধু ভাইয়া ভাইয়া। ওনি চেচাচ্ছি আর বলছে রিশনকে কেউ বাচান? কেউ আছেন? কেউ আছেন,রিশনকে কেউ বাচান? আমি শুধু ভাইয়া ভাইয়া করছি? আর ভাবতে লাগলাম আর হয়তো বাড়ি ফেরা হবে না, যদিও হয় তাহলে হয়তো আমার লাশ যাবে।***
***ভাইয়া নিছে নেমে আমাকে তোলার অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু পারে নাই। কারণ আমি অনেক দূরে চলে গেছি। ভাইয়া নিছ থেকে উঠে রাস্তার পশ্চিম পাশে গেয়ে চেচিয়ে বললো আমার বোনকে কেউ বাচান? কেউ কি আছেন কেউ তাকে বাচান না? তখন ওই দূরের জমি বরাট করছে যে সেখান থেকে একটা লোক দৌড়াই আসছে। সেই লোক আমাকে পানি থেকে উঠায়ছে। আমি পানি অনেক খেয়ে পেলছি তাই জ্ঞান হারিয়ে পেলছি। ওই লোকটা আমার পেটে চাপ দিয়ে অনেক পানি বাহির করছে, তার কিছুখন পর আমার জ্ঞান পিরে আসে।
**- আমি দেখি ভাইয়া কান্না করছে। আর বলতেছে তোর যদি কিছু হতো তাহলে আব্বু আমাকে মেরেই ফেলতো। আমি ওই লোকটার দিকে তাকাই কান্না করে দিছি। ওই লোকটা আমাকে বললো মা তোমার কিচ্ছু হয়নি তুমি আল্লাহর রহমতে বেচে গেছো। ***
*** আমি ওনাকে বললাম আপনি আমার জীবন বাচিয়েছেন। আপনার কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ । কখনো ভুলবো না আপনার এই কথা। ভাইয়া ওই লোকটা কে বললো আপনি অনেক ভালো একটা মানুষ আপনি আমার বোনকে বাঁচিয়েছেন। আপনার এই
ঋণ কখনো সুধ করতে পারবো না। ****
**** আমরা বাড়ি ফেরে আসলাম। কখনোই এই কথা আমার পরিবারকে বলি নাই, যে সেখানে কি হয়েছে। ওই লোকটা ওই জমিতে বাড়ি করেছে আমরা প্রায় যাই সেখানে ওনাকে দেখতাম। আমরা ওনাকে আংকেল বলি। ****
**- কখনো ভুলবো না ওই দিনের কথা। আর এই ঘটনা ভুলারও নই। এখনো মনে করলে আমার ভিতরে একটা ভয় কাজ করে। যদি ঔ দিন মরে যেতাম, কি হতো আমার পরিবারের। তারা এই সত্যকে কি ভাবে মেনে নিতে পারতো। ****
**** আমার আব্বু আমাদের কখনো কোথাও একা যেতে দেই না ওনি জানি না ওই ঘটনা তবুও কেনো জানি এমন করে! ***
বেঁচে ফেরা।
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
142
Views
4
Likes
1
Comments
4.7
Rating